বীরেন্দ্র শেবাগকে বলা হয় ভারতীয় ক্রিকেটের উচ্চকণ্ঠ! সবকিছু নিয়েই চাঁছাছোলা মন্তব্য করতে তিনি বরাবরই খুব পছন্দ করেন। আইপিএলে ব্যর্থতার পর সেই শেবাগ চুপ থাকেননি গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বেলায়ও।
১০ কোটি রুপি পারিশ্রমিকে এই অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডারকে দলে ভিড়িয়েছিলো কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। কিন্তু মাঠের খেলায় কাজের কাজটা কিছুই করতে পারেননি এই অলরাউন্ডার। ১৩ ম্যাচে ব্যাট হাতে করেছিলেন মাত্র ১০৩ রান। দশ কোটি রুপি খরচা করে কেনা খেলোয়াড় অথচ পুরো টুর্নামেন্টজুড়েই এমন নিষ্প্রভ পারফরমেন্স- সমালোচনা হওয়াটাই স্বাভাবিক।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা সরব থাকেন ম্যাক্সওয়েল বন্দনায়, তারাও এমন নিদারুণ ব্যর্থতায় তারাও মেতেছিলেন নিন্দায়। বীরেন্দ্র শেবাগতো সেখানে আরো কয়েক ধাপ এগিয়ে। আইপিলের তেরোতম আসর শেষে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন ’১০ কোটি রুপির চিয়ারলিডার’ ও ‘অতি উচ্চ বেতনে ছুটি কাটাতে আসা ক্রিকেটার’।
শেবাগের এমন মন্তব্যের পর ‘কাটা গায়ে নুনের ছিটা’ ঠিকই টের পেয়েছিলেন ম্যাক্সওয়েল। ম্যাক্সওয়েলের জবাবটা ছিল প্রতিকূল পরিস্থিতি পেরিয়ে ভালো কিছু করার।
শেবাগের ভারতকে জবাবটা কি ব্যাট হাতে মাঠেই দিলেন ম্যাক্সওয়েল? ২৭ নভেম্বর এমনিতেই ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার জন্য শোকাবহ এক দিন। ছয় বছর আগে মাথায় বলের আঘাত পেয়ে এই দিনেই পরপারে পাড়ি জমিয়েছিলেন সাবেক অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার ফিলিপ হিউজ। হিউজেসকে স্মরণ করার পাশাপাশি ম্যাচের শুরুতে দুই দলের খেলোয়াড়েরা স্মরণ করেছিল সদ্য প্রয়াত অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার ডিন জোন্সকেও।
শোককে শক্তিতেই পরিণত করেই এই ম্যাচে জ্বলে উঠলো অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং অর্ডার। অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ আর স্টিভ স্মিথের জোড়া শতকে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার স্কোরকার্ড ৬ উইকেটে ৩৭৪! ওয়ানডেতে এটি ভারতের বিপক্ষে কোনো দলের তৃতীয় সর্বোচ্চ এবং ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ স্কোর।
শেহওয়াগের ভারতকে জবাব দেয়ার জন্য হয়তো এমনই দিনের অপেক্ষাতেই ছিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ফিঞ্চ-স্মিথ ঝড়ের পর ভারতীয় বোলারদের উপর দিয়ে টনের্ডোটা যে বইয়ে দিয়েছেন তিনিই।
মোহাম্মদ সামির বলে আউট হওয়ার আগে এই অজি অলরাউন্ডার পাঁচ চার ও তিন ছয়ের সাহায্যে খেলেছেন ১৯ বলে ৪৫ রানের এক ঝড়ো ইনিংস। নামটা যেহেতু ম্যাক্সওয়েল সেক্ষেত্রে এই ইনিংসটাকে খুব বেশি বলা যাবেনা। কিন্তু যারা ভেবে বসেছিলেন তিনি ফুরিয়ে গেছেন খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে তাদের জন্য একটা বার্তা অন্তত দিয়ে রাখলেন এই অলরাউন্ডার।