দাঁড়িয়ে, বসে বা চলন্ত অবস্থায়; যে যেখানে এ লেখাটা পড়ছেন একবার ‘ধন্যবাদ’ শব্দটি উচ্চারণ করুন।
ধন্যবাদ দিন আর্জেন্টাইন একজন মা, সেলিয়া মারিয়া কুচিত্তিনিকে। আজ থেকে ঠিক ৩৬ বছর আগে তখনকার এ পরিচ্ছন্নতাকর্মী ভদ্রমহিলা জন্ম দিয়েছিলেন ফুটফুটে এক সন্তানকে।
কালক্রমে সেই সন্তান আজ দুনিয়া কাঁপানো ফুটবলার লিওনেল আন্দ্রেস মেসি। এমন সন্তানকে জন্ম দেওয়ার জন্য একটা ধন্যবাদ সেলিয়া মারিয়া কুচিত্তিনি পেতেই পারেন।
ধন্যবাদ দিন ইতালিয়ান বংশোদ্ভূত বাবা হোর্হে হোরাসিও মেসিকে; স্টিল কারখানার কর্মী হোর্হে কাজের ফাঁকে ফাঁকে গ্রান্দোলি নামে একটা পাড়ার ক্লাব দলে কোচিং করাতেন। সেখানেই প্রথম ফুটবল শুরু।
ধন্যবাদ দিন নিওয়েল ওল্ড বয়েস ক্লাবকে; তারা প্রথম পেশাদার ক্লাব, যারা মেসিকে চিনেছিলো। আরেকটা ধন্যবাদ দিন কার্লেস রেক্সাসকে। রেক্সাস তখন বার্সেলোনার ক্রীড়া পরিচালক।
মেসির সামান্য কয়েক মিনিটের কারিকুরি দেখে রেক্সাস এতটাই মোহিত হয়ে গিয়েছিলেন যে, উঠে গিয়ে কাগজ আনার বিলম্ব সহ্য হয়নি। পকেটে ছিল টিস্যু পেপার। তাতেই মেসিকে দিয়ে তার জীবনের প্রথম চুক্তিপত্রটা সই করিয়ে ফেললেন রেক্সাস।
ধন্যবাদ দিন বার্সেলোনার বয়সভিত্তিক দলের কোচ টিটো ভিলানোভাকে। স্বর্গ থেকে তিনি জানুন, আমরা মনে করছি তাকে মেসিকে সাইড বেঞ্চ থেকে টেনে এনে একাদশে খেলার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
বুক ভরা ভালোবাসা সহ ধন্যবাদ দিন রোনালদিনহোকে। রোনি না থাকলে তার ‘ছোট ভাই’ বার্সেলোনায় এমন করে কী একটু একটু করে বড় হয়ে উঠতে পারতেন? আমরা এখনও চোখ বুঝলে দুই ভাইয়ের সেই নিষ্পাপ হাসি দেখতে পাই।
প্রিয় বন্ধু কুন আগুয়েরো কিংবা কার্লোস পুওল, পিকে, ডন ইনিয়েস্তা, জাভি থেকে শুরু করে সবাইকে ধন্যবাদ দিন এই অসামান্য এই সৌন্দর্যকে পৃথিবীর সামনে বারবার তুলে ধরায় সহায়তা করার জন্য। ধন্যবাদ দিন পেপ গার্দিওলাকে; যিনি মেসির জন্য বার্সা বানিয়েছিলেন!
ধন্যবাদ দিন লিওনেল স্ক্যালোনিকে। তিনি কী করে যেন ছেড়া পালে হাওয়া দিয়ে শেষ অবধি আর্জেন্টিনাকে বিশ্বজয়ীই বানিয়ে ফেলেছেন। ধন্যবাদ দিন দেহরক্ষী ডিপল থেকে শুরু করে জীবন রক্ষাকারী এমি মার্টিনেজ; সকলকে।
আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ। কারণ, আপনারা আমাদের একটি লিওনেল আন্দ্রেস মেসি নামক মহাজাগতিক বিষ্ময় উপহার দিয়েছিলেন। মেসির নামের সাথে জড়িয়ে থাকা প্রতিটা মানুষ, প্রতিটা মুহূর্ত মিলেই তে এই বিস্ময় রচনা করা সম্ভব হয়েছে।