বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা অধিনায়ক

বাংলাদেশের সেরা অধিনায়ক কে? স্বাভাবিকভাবে জনজরীপে সবার আগে আসবে মাশরাফি বিন মুর্তজার নাম। আমার ব্যক্তিগত তালিকা একটু অন্যরকম।

  • নাইমুর রহমান দুর্জয়

তাঁর সময়ে তিনি এখনকার দল পান নাই। ধূর্ত বলে যে শব্দটা আমরা জানি সেটার বড় উদাহরণ তিনি। প্রথমবার জিম্বাবুয়ে সফরে গিয়ে সিমিং পরিবেশে ব্যাটিং নেয়ায় সমালোচিত হয়েছিলেন। কিন্তু ওই দলে আশরাফুল বা সাকিব ছিলেন না। কেনিয়ায় অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে লিডিং ফ্রম দ্য ফ্রন্ট তিনি করেছিলেন। সাফল্য বিচারে কোন জয় নেই। কিন্তু আক্রমণাত্মক মনোভাবের জন্য তিনি এক নম্বর।

  • হাবিবুল বাশার সুমন

পরিশ্রমী ও ভাগ্যবান। সামনে থেকে রান করে গেছেন। সবাই ব্যর্থ হলেও ব্যাটসম্যান বাশার সফল। একটা দল হিসেবে বাংলাদেশ যে গড়ে উঠেছে সেটা তার হাত ধরেই। আমার কাছে বাংলাদেশের সেরা সাফল্য ২০০৭ সালের বিশ্বকাপ। সুপার সিক্সে খেলা ভারতকে হারিয়ে। তারপর সুপার সিক্সে প্রোটিয়াদের হারানো।

  • মাশরাফি বিন মুর্তজা

জাতীয় দলের সিংহভাগ সাফল্য তাঁর হাত ধরে। পরিসংখ্যানের বিচারে তিনি এক নম্বর। অধনিয়কত্ব পাওয়া ও ইনজুরির জন্য হারিয়ে ফেলা সব মিলিয়ে তাঁর জীবন সিনেমার নায়কদের মত। নেটফ্লিক্স একবার আমার কাছে প্রস্তাব দিয়েছিল তাঁকে নিয়ে একটা সিরিজ করার। ঘরোয়া ক্রিকেট বিশেষ করে বিপিএলে মাশরাফি যা করেছেন তাতে তাঁর নেতৃত্বের রেকর্ডটা কেউ নিতে পারবেন না সহসাই। কিন্তু শেষ বিশ্বকাপে তিনি ব্যক্তিগতভাবে ব্যর্থ না হলে, হয়ত রূপকথা লিখে ফেলতে পারতো বাংলাদেশ।

  • মুশফিকুর রহিম

২০১১ সালে দেশের ক্রিকেটটা চোরাবালিতে পা আটকে ফেলেছিল। সে জায়গা থেকে টেনে তোলার কাজটা মুশফিকই করেছেন। তিনি অধিনায়ক ছিলেন বলেই,টানা খারাপ খেলার পরও তামিমকে বাদ দিতে পারেনি বিসিবি। কিন্তু দুটা বছর ভাল করার পর, সতীর্থদের টানা ব্যর্থতায় তিনি ফোকাস ধরে রাখতে ব্যর্থ হন। নেতৃত্বের সময় ব্যাটিংয়ে যে মনোযোগ দিতে পেরেছিলেন তিনি, তাতেই দেশের সেরা ব্যাটসম্যান গত পাঁচ বছরে। যেভাবে তাকে নেতৃত্ব থেকে সরানো হয়েছে এটা পুরো পৃথিবীর ক্রিকেট ইতিহাসে বিরল। লজ্জাজনক।

  • সাকিব আল হাসান

ভাগ্যক্রমে টেস্ট নেতৃত্ব পেয়ে ওই তরুণ বয়সে দেশের বাইরে দেশকে এনে দেয়া টেস্ট সিরিজ জয়। অসম্ভব মেধাবী ক্রিকেট মাথা। ২০০৯-১০ এ দেশের মাটিতে নিউ জিল্যান্ডকে হারানো সহ আরো অনেক কিছুতে বাংলাদেশ তাঁর হাত ধরে। বিশ্বকাপে তাঁর হাত ধরেই ইংল্যান্ডকে চট্টগ্রামে হারানো। কিন্ত ২০১১ সালে তাঁর নেতৃত্ব ও দল চালানোর ধরন নিয়ে ক্ষুদ্ধ বিসিবি দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়। ব্যক্তিগতভাবে ক্রিকেট মস্তিষ্কে সাকিব অনবদ্য। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে যদি দায়িত্ব কখনো পান আশা করি সবাইকে ছাপিয়ে যাবেন।

অন্য সবাই কমবেশি ভাল-খারাপ। কিন্তু আমরা এক অধিনায়ক পেয়েছিলাম তিনি বিশ্বকাপের ম্যাচের আগে নাইট ক্লাবেও গেছেন। তদন্ত কমিটিও হয়েছে। দেশের ক্রিকেটের দশ বছর পিছিয়ে দিয়েছে তাঁর সময়ে তৈরী দলে অনৈক্য ও বিভেদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link