গ্রিভস দেখালেন, নায়করা সবই পারে!

কিমার রোচকে সাথে নিয়ে সপ্তম উইকেট জুটিতে তুললেন ১৮০ রান। সেই সাথে রেকর্ড বইয়ের পাতা ওলট পালট হলো তাঁর ২০২ রানের হার না মানা এক ইনিংসে। নিউজিল্যান্ড কেবল চেয়ে চেয়ে দেখল গ্রেভসের এক অন্তিম লড়াই, যার ফলাফলে লেখা থাকে কেবল জয়ের গান।

জাস্টিন গ্রিভস, অসম্ভবের মঞ্চে দাঁড়িয়ে সবকিছু নিজের করে নিলেন। যখন শেষ আশাটা নিভু নিভু করছে তখনই নিজের ভেতরের সবটা আগুন দিয়ে আলোকিত করলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। কিমার রোচকে সাথে নিয়ে সপ্তম উইকেট জুটিতে তুললেন ১৮০ রান। সেই সাথে রেকর্ড বইয়ের পাতা ওলট পালট হলো তাঁর ২০২ রানের হার না মানা এক ইনিংসে। নিউজিল্যান্ড কেবল চেয়ে চেয়ে দেখল গ্রিভসের এক অন্তিম লড়াই, যার ফলাফলে লেখা থাকে কেবল জয়ের গান।

ক্রাইচচার্চে প্রথম ইনিংসে কিউইদের সংগ্রহশালায় ছিল ২৩১ রান। ওয়েস্ট সেই রানের কাছে যেতে পারেনি, থেমে যেতে বাধ্য হয়েছিল মাত্র ১৬৭ রানে। ৬৪ রানে এগিয়ে থেকে নিউজিল্যান্ড রানের পাহাড় গড়তে থাকে। শেষটাতে ৪৬৬ রান স্কোরবোর্ডে যোগ করেই থামে কিউইরা। অর্থাৎ ক্যারিবীয়দের সাথে লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ৫৩১ রানের।

হাতে প্রায় দুই দিন, ম্যাট হেনরি, জ্যাকব ডাফিদের সামনে টিকে থাকাটা অসম্ভব, জয়ের চিন্তা সে তো কল্পনাতীত। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে কেবল একটাই পথ খোলা, চুপচাপ হার মেনে নেওয়া। তবে সবকিছু মনের ভেতর রেখে শাই হোপ একটা শেষ চেষ্টা করলেন বোধহয়। লোকচক্ষুর আড়ালে নিজের ভেতর কিছু করার তাড়না ছিল তাঁর মধ্যে। চোখে এলার্জি, সানগ্লাস পরে নিজের কাজটা করতে থাকলেন আপন মনে।

 

একপ্রান্তে সবাই যখন সাজঘরে ফিরছে, হোপের ব্যাট তখনও আশা হয়ে বেঁচে ছিল। নিজের ২৫০ টেস্টে এক স্মরণীয় করে রাখলেন ১৪০ রানের এক অনবদ্য ইনিংস খেলে। সঙ্গী হিসেবে অবশ্য পেলেন ঐ গ্রিভসকেই। তবে ফিরতে হলো তাঁকে, দলের অবস্থা তখন পাঁচ উইকেট হারিয়ে ২৬৮ রান।

গ্রিভস অসহায় তাকিয়ে দেখলেন আরও এক সহযোদ্ধার ঝড়ে পড়া। ২৭৭ রান ছয় উইকেট তখন। আর কোন আশা স্বাভাবিক কোন মানুষের পক্ষে করা সম্ভব না তখন। তবে নায়করা তো সবই পারেন। কিমার রোচকে সঙ্গী করে এক অসম্ভবকে ছুঁইয়ে দেখার লড়াই। ফিফটি, শতক, দেড়শ রান—সবই এলো, তবু যে কাজটা শেষ হয়নি। অবশেষে নিউজিল্যান্ডের কাছ থেকে জয়টা ছিনিয়ে আনলেন।

টেস্ট ইতিহাসের সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে চতুর্থ ইনিংসে ডাবল-সেঞ্চুরি। সেই সাথে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪৬৭ রানটাও ঐ ওয়েস্ট ইন্ডিজেরই। ঘড়ির কাটা যখন জানিয়ে দিল সময় শেষ, ম্যাচটার ফলাফল এলো না, তবে জিতে গেলেন একজন, তিনি জাস্টিন গ্রিভস। যেন দানবের বেশে এক লহমায় পুরো দৃশ্যটায় বদলে দিলেন।

লেখক পরিচিতি

প্রত্যয় হক কাব্য

স্বপ্ন লেখার কি-বোর্ড

Share via
Copy link