Social Media

Light
Dark

প্রফেসরের বুড়ো হাড়

বয়স তাঁর চল্লিশ।

এই বয়সের অনেকেই কোচ হিসেবে নিজেরে জায়গা পাকা করে ফেলেছেন। এই বয়সের অনেকেই এখন অবসর জীবনে অভ্যস্থ হয়ে গেছেন। কিন্তু তিনি এখনও মাঠে লড়ছেন। কেবল লড়ছেন বললে ভুল হবে। এখনও তিনি বাকিদের চেয়ে এগিয়ে।

এই আজকের কথাই ধরুন না কেনো। পাকিস্তানের পুরো দল যখন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খাবি খাচ্ছে, তখন তিনি একাই পাল্টা আক্রমণ করলেন। পুরো দল করতে পারলো ১৬৩ রান। এর মধ্যে ৯৯ রানই তাঁর একার!

হ্যা, ঠিক ধরেছেন। তিনি মোহাম্মদ হাফিজ। পাকিস্তান দলের সাবেক অধিনায়ক। এই বিশ্বের সবচেয়ে অভিজ্ঞ অলরাউন্ডারদের একজন হাফিজ; দ্য প্রফেসর।

পাকিস্তান ক্রিকেটে তিনি প্রফেসর নামেই পরিচিত। ভক্তরা তাকে এই নামেই ডাকেন। ক্রিকেট ক্যারিয়ারের প্রায় শেষ দিকে এই প্রফেসর। হঠাৎ হয়তো ক্রিকেটকে বিদায় বলতে পারেন তিনি। তাঁর বয়সের দিকে থাকালে এটাই মনে হতে পারে কথাটা। কিন্তু তার পারফরম্যান্স বলছে খেলা চালিয়ে যেতে কোনো সমস্যা হবে না।

মোহাম্মদ হাফিজ প্রফেসর উপাধি পেয়েছিলেন তার স্বদেশি সাবেক ক্রিকেটার রমিজ রাজার কাছ থেকে। একবার আন্তর্জাতিক ম্যাচে ধারাভাষ্যে মোহাম্মদ হাফিজকে প্রফেসর বলে সম্বোধন করেন। এরপর থেকে সবাই তাকে প্রফেসর ডাকা শুরু করে। প্রফেসর নামটা নাকি তার-ও আগে তাকে দিয়েছিলেন তার এক এজেন্ট, যার মাধ্যমে তিনি যুক্তরাজ্যে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। মোহাম্মদ হাফিজ খুব বেশি প্রশ্ন করেছিলেন তাঁর এজেন্টকে। বেশি প্রশ্ন করার কারণে নাকি প্রফেসর বলে সম্বোধন করেছিলেন তাকে।

চল্লিশ বছর বয়সী হাফিজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাকিস্তানের হয়ে খেলে যাচ্ছেন। তার খেলা দেখে মনে হয় বয়সটা একটা সংখ্যা মাত্র। তাকে ছাড়া পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি দল কল্পনা করা অসম্ভব। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পাকিস্তান দলের নিয়মিত সদস্য হাফিজ। ব্যাটে-বলে পারফর্ম করেই নিজের জায়গাটা ধরে রাখছেন। গেল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি পাকিস্তান দলে ছিলেন চল্লিশ বছর বয়সী হাফিজ। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে এক ম্যাচে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে চারে ব্যাট করতে নেমে ৩২ বলে করেছিলেন ৩৪ রান; তিন চার আর এক ছক্কায় সাজিয়ে ছিলেন এই ইনিংস।

তার আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি ম্যাচে ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে অপরাজিত ৮৬ ও ৬৯ রানের ইনিংস খেলেছিলেন; হয়েছিলেন ম্যাচসেরা। এর ঠিক আগের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৬৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন।

এই ২০২০ সালে ৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। ৯৩.৫০ গড়ে এবং ১৫৩.৯০ স্ট্রাইকরেটে ৩৭৪ রান করেছেন। এর মধ্যে ৪টি ৫০ পার করা ইনিংস!

সদ্য শেষ হওয়া পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) খেলেছেন তিনি।  করোনার কারণে স্থগিত হওয়া এই টি-টোয়েন্টি লিগ। তা পুনরায় মাঠে গড়ায় ১৪ নভেম্বর। এলিমিনেটর প্রথম ম্যাচে মোহাম্মদ হাফিজ খেলেন লাহোর কালান্দার্সের হয়ে।  পেশোয়ার জালমির দেওয়া ১৭০ রান তাড়া করতে নেমে  লাহোর  কালান্দার্স দুই ওপেনারকে হারায় মাত্র ২৫ রানে। তিনে ব্যাট করতে নামা সোহেল আখতারও বেশিক্ষণ ঠিকতে পারেননি, ব্যক্তিগত ৭ রানে সাজ ঘরে ফিরেন তিনি।  ৩৩ রানে টপ তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় কালান্দার্স।

সেখানে তাদেরকে উদ্ধার করেন চল্লিশ বছর বয়সী মোহাম্মদ হাফিজ।  বেন ডানকে দিয়ে গড়েন ৫৫ রানের জুটি, দলীয় ৮৮ রানে ডান ফিরে গেলেও উইকেটের একপাশ আগলে ধরেন হাফিজ। পঞ্চম উইকেটে সামিট পাটেলকে নিয়ে যোগ করেন আরো ৪২ রান। আর নিজে পেয়ে যান ফিফটির দেখা মাত্র ৩৪ বলে। ১৭১ রান তাড়া করতে নেমে মোহাম্মদ হাফিজ করেন অপরাজিত ৭৪ রান। নয় চার এবং দুই ছক্কায় এই ইনিংস সাজান হাফিজ।  তার বীরত্বপূর্ণ এই ইনিংসের উপর ভর করে লাহোর কালান্দার্স ম্যাচ জিতে ৫ উইকেট। ছয় বল হাতে রেখে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন হাফিজ।

পাকিস্তান ক্রিকেটে অসাধারণ প্রতিভা নিয়ে তার আগমন। ওপেনিং ব্যাট করার পাশাপাশি ডান অফ স্পিনটা ভাল করতে পারতেন হাফিজ। ব্যাট হাতে দারুণ কভার ড্রাইভ মুগ্ধতা ছড়াত বাইশগজের সবুজ গালিচায়। বিমোহিত হয়ে তার ব্যাটিং দেখতেন স্টেডিয়ামে আসা দর্শকরা। দারুণ এই ক্রিকেটার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর থেকেই ছিলেন দলে আসা যাওয়ার মধ্যে। ২০১০ সালে পর থেকেই নিজেকে একজন পরিনত ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন হাফিজ। এরপরে আর পিছনে ফিরে তাকে হয়নি তাকে। ব্যাট বল হাতে আলো ছড়িয়েছেন এই অলরাউন্ডার।

পাকিস্তানের হয়ে  মোহাম্মদ হাফিজের অভিষেক হয় ২০০৩ সালে, কিন্তু জাতীয় দলে নিয়মিত হন ২০১০ সালের পর থেকে। ২০১০ সালে পাকিস্তান ঘরোয়া ক্রিকেটে ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত পারফর্মেন্স করেন হাফিজ, নভেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে আবারও জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তন করেন। ২০১১ সালে মোহাম্মদ হাফিজ টেস্টে দুটি, ওয়ানডেতে তিনটি সেঞ্চুরি এবং টি২০তে দুটি ফিফটি করেন। এ বছর দশটি ম্যাচে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ পুরুষ্কার জিতেন হাফিজ। সনাৎ জয়াসুরিয়া এবং জ্যাক ক্যালিসের পর তিনিই একমাত্র ক্রিকেটার যিনি এক ক্যালেন্ডার ইয়ারে ১০০০ হাজার রান এবং ৩০টির বেশি উইকেট লাভ করেছেন।

মোহাম্মদ হাফিজ যেকোনো পরিস্থিতি ব্যাট করতে পারেন। মূলত তিনি একজন আক্রমনাত্মক ওপেনার, আক্রমনাত্মক ব্যাটিং তার মুল শক্তি কিন্তু সুযোগ বুঝে প্রয়োজনে তিনি ডিফেন্সিভ ও খেলতে পারেন। তার দলের অধিনায়ক যেকোনো জায়গায় খেলাতে পারতেন তাকে। দারুণ ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডান হাতে দুর্দান্ত অপস্পিনও করতে পারেন তিনি। ফিল্ডিংয়েও দারুণ, পাকিস্তান দলের অন্যতম সেরা ফিল্ডার হাফিজ। বিশেষ করে পয়েন্ট অঞ্চলে অসাধারণ ফিল্ডিং করে থাকেন।

২০০৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয় মোহাম্মদ হাফিজের। টি২০ দলে নিয়মিত হতে পারেননি হাফিজ। ২০১০ সালে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি সামনে রেখে পাকিস্তান যে দল ঘোষণা করে, সে দলে ফিরেন মোহাম্মদ হাফিজ। সে বিশ্বকাপে পুরোপুরি ব্যর্থ হন হাফিজ। ছয় ম্যাচে রান করেছিলেন মাত্র ৩৯ আর বল হাতেও ছিলেন আরো ছন্দহীন, উইকেট পেয়েছিলেন মাত্র দুটি। তারপরও দলে ঠিক ছিলেন হাফিজ, সে বছর ইংল্যান্ড সফরের জন্য ঘোষিত টি-টোয়েন্টি ও ওডিআই পাকিস্তান দলে ছিলেন হাফিজ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একদিনের ম্যাচে দ্বিতীয় সেরা রান সংগ্রাহক হয়েছিলেন হাফিজ। ভাল খেলার ফলস্বরূপ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে দলে রাখা হয়ে তাকে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ভাল খেলার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখেন হাফিজ।

২০১২-১৩ সালে ভারত সফরে টি-টোয়েন্টিতে নজর কাড়েন হাফিজ। ভারতের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে করেন ৬১ রান এবং দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ১৯১ রান তাড়া করতে নেমে করেন ৫৫ রান। ব্যাট হাতে দারুণ ফর্মে থাকা হাফিজ পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পান। টি-টোয়েন্টির পাশাপাশি সে বছর তাকে টেস্ট ও ওয়ানডে দলের সহ অধিনায়ক নির্বাচিত করা হয়। তার নেতৃত্বে ২০১২ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে খেলে পাকিস্তান। তার নেতৃত্বে ২৯টি খেলে পাকিস্তান যেখানে ১৭টি জয় পায় তার দল, ১২টি ম্যাচে পরাজিত হয়। মোহাম্মদ হাফিজ পাকিস্তানের হয়ে ৯৬টি ম্যাচ খেলে রান করেছেন ২১৮৩, আছে ১৩টি ফিফটি।  বল হাতে নিয়েছেন ৫৪টি উইকেট।  ২০১৩ সালের অসাধারণ পারফরম্যান্সের কারণে ক্রিকইনফো টি-টোয়েন্টি একাদশে জায়গা পেয়েছিলেন তিনি।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির মত ফ্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক টি-টোয়েন্টি দারুণ সফল হাফিজ। খেলেছেন আইপিএল, বিগ ব্যাশ, বিপিএলের মত অনেক বড় টি-টোয়েন্টি লিগে। টি-টোয়েন্টি লিগ গুলোতেও বেশ সফল পাকিস্তানি এই অলরাউন্ডার। এসব লিগে ৩০৮ ম্যাচে ২৮৭ ইনিংসে রান করেছেন ৬৬১৮। দুই সেঞ্চুরির সাথে আছে ৩৮ টি ফিফটি। বল হাতেও পেয়েছেন  সাফল্য, ৩০৪ ম্যাচে ২১৭ ইনিংসে বল করে উইকেট নিয়েছেন ১৭৭টি।

২০০৩ সালে ওয়ানডেতে অভিষেক হয় মোহাম্মদ হাফিজের। অভিষেকের পর থেকে  ২০১০ সালের আগ পর্যন্ত ৪৮ ম্যাচে রান করেছিলেন ৮৭৪। ছিল না কোনো সেঞ্চুরি, ফিফটি করেছিলেন মাত্র ৪টি। আসলে মোহাম্মদ হাফিজের অভিষেকটা যদিও ২০০৩ সালে, কিন্তু নিজেকে প্রমাণ করতে পেরেছেন ২০১০ সালের পরে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২১৮টি ম্যাচের মধ্যে ১৭০টি ম্যাচ খেলেছেন ২০১০ এর পরে। ১৭০ ম্যাচে রান করেছেন ৫৭৪০ রান, তার ক্যারিয়ারের সব কয়টি সেঞ্চুরি এসেছে এই সময়। পাকিস্তানের হয়ে ২১৮টি ওয়ানডে খেলে মোহাম্মদ হাফিজ রান করেছেন ৬৬১৪। সেঞ্চুরি করেছেন ১১টি, পাশাপাশি ফিফটি আছে ৩৮ টি।

২০১২ সালে এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে করেছিলেন এক অসাধারণ সেঞ্চুরি, ১১৩ বলে ১০৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন হাফিজ।  নাসির জামশেদের সাথে উদ্বোধনীয় জুটিতে গড়ে ছিলেন ২২৪ রানের জুটি, যা ভেঙ্গে দিয়েছিল ভারতের বিপক্ষে আমির সোহেল এবং সাইদ আনোয়ারের ১৪৪ রানের উদ্বোধনীয় জুটির রেকর্ড।

২০১৩ সালে মোহাম্মদ হাফিজ  দারুণ একটি সিরিজ খেলেছিলেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই সিরিজের তিনটি সেঞ্চুরি করেছিলেন হাফিজ প্রথম ম্যাচে ১২২, তৃতীয় ম্যাচে অপরাজিত ১৪০ এবং চতুর্থ ম্যাচে ১১৩ রানে অপরাজিত ছিলেন।  জহির আব্বাসের পরে দ্বিতীয় পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান তিনি যে এক সিরিজে ৩টি সেঞ্চুরি করতে সক্ষম হয়েছে। ২০১৪ সালে আইসিসির একাদশে জায়গা পেয়েছিলেন হাফিজ। ব্যাট-বলে দারুণ ক্রিকেটশৈলির কারণে  পাকিস্তান দলের শহিদ আফ্রিদির পাশাপাশি অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার ছিলেন।

২০০৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ কাপে গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পরে পাকিস্তান। সেই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে নতুন করে দল সাজানো চেষ্টা করে তারা। সে সময় দলে ডাক পান হাফিজ। তাকে কিছু ম্যাচে সুযোগ দেওয়া হয়।  ২০০৩ সালে  বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট  ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে মোহাম্মদ হাফিজের। নিজের অভিষেক ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন মোহাম্মদ হাফিজ। নিজের অভিষেক টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫১বল  খেলে ৫০ রান করেছিলেন হাফিজ। বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে পেয়ে যান টেস্ট ক্রিকেটে নিজের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা। দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৪ বলে ১০২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন। সেই ইনিংসে ছিল এগারোটি চার এবং একটি ছক্কার মার।

টেস্ট ক্রিকেটে দুর্দান্ত শুরুর পরও দীর্ঘ দিন বছর তাকে থাকতে হয়েছে টেস্ট দলের বাইরে। ২০০৩ সালের পর টেস্ট খেলেছিলেন ২০০৬ সালে। ২০০৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেন হাফিজ।   এবারও বেশি দিন খেলতে পারেননি হাফিজ বছর খানেক পরে আবারও বাদ পরে যান ২০০৭ সালে। তারপরে তিন বছর থাকেন টেস্ট দলের বাহিরে। ২০১০ সালে ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফর্মেন্স তাকে ফিরিয়ে আনে পাকিস্তান টেস্ট দলে।

টেস্ট ক্রিকেটে তার দশ সেঞ্চুরির আটটিই করেছেন ২০১০ সালের পরে। তার টেস্ট ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস এবং একমাত্র ডাবল সেঞ্চুরিটি করেছিলেন ২০১৬ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে। পাকিস্তানের হয়ে ৫৫টি টেস্ট ম্যাচ খেলে ৩৪ গড়ে রান করেছেন ৩৬৫২। টেস্টে ১০টি সেঞ্চুরির পাশাপাশি আছে ১২টি হাফ সেঞ্চুরি।

পাকিস্তানের হয়ে তিনটি ওয়ানডে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছেন মোহাম্মদ হাফিজ।  ২০০৭ এবং ২০১১ সালে পাকিস্তান দলে ছিলেন তিনি। ২০১৫ বিশ্বকাপ দলেও ছিলেন হাফিজ, বি্শ্বকাপ শুরুর মাত্র ছয় দিন আগে ইনজুরিতে পরেন তিনি, বিশ্বকাপ না খেলেই দেশে ফিরেন তিনি। সর্বশেষ ২০১৯ বিশ্বকাপে খেলেছেন পাকিস্তান দলের হয়ে। এ বিশ্বকাপেও তেমন ভাল করতে পারেননি, ছিলেন অধারাবাহিক। আট ম্যাচে ফিফটি করেছিলেন মাত্র একটি। বল হাতেও ছিলেন নিষ্প্রভ। ইকোনমি ছিল প্রায় ছয়ের বেশি।

দীর্ঘ এই ক্রিকেট ক্যারিয়ারে মোহাম্মদ হাফিজ  অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের দায় নিষিদ্ধ হয়েছেন তিনবার। ২০১৫ সালে তাকে অবৈধ অ্যাকশনের কারণে নিষিদ্ধ করে আইসিসি। ২০১৭ সালে আবার নিষিদ্ধ হন বোলিং একশনের জন্য। বোলিং অ্যাকশন ঠিক করে ফিরেছেন প্রতিবার, বল হাতেও ঘুর্ণীতে কুপোকাত করেছেন বিশ্বে সেরা ব্যাটসম্যানদের।  ২০১৯ সালে অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের কারণে টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে নিষিদ্ধ করে ইসিবি।

তবে, এত ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যেও বুড়ো প্রফেসর লড়াই করাটা বন্ধ করেননি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link