ভারতের ‘বাজিগর’ হার্শিত

সেই ইনজুরিই কাউকে খুলে দেয় নতুন দুয়ার। তেমন এক দুয়ার ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা বাড়িয়েছেন হার্শিত রানা।

কারও পৌষ মাস, কারও সর্বনাশ – ইনজুরিতে শেষ হয়ে যায় অনেক খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ার। কিন্তু সেই ইনজুরিই কাউকে খুলে দেয় নতুন দুয়ার। তেমন এক দুয়ার ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা বাড়িয়েছেন হার্শিত রানা।

প্রথমে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) জায়গা পান রাকেশ সালাম ইনজুরিতে পড়ায়। কলকাতা নাইট রাইর্ডাস তাঁকে দলে ভেড়ায় বদলি হিসেবে। ভারত জাতীয় দলেও সুযোগ মিলল আরেকজনের ইনজুরিতে। মোহাম্মদ শামির ইনজুরি যেন শাপে বর হয়েছে তাঁর জন্য। ডর বা বাজিগরের সেই শাহরুখ খান যেন, সবাই যখন ছেড়ে দিয়েছে – তখনই লুফে নিয়ে স্টার বনে গেছেন বলিউড বাদশাহ।

২৩ বছর বয়সী দিল্লীর এই তরুণ মাথায় চড়িয়েছেন ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণের টুপিটা, তাও আবার অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে। অভিষেকটা রাঙিয়ে রাখলেন তিনি। শুরুটা ভারতের ‘যম’ খ্যাত ট্রাভিস হেডের স্টাম্প উপড়ে ফেলে। শেষে প্রতিরোধ গড়তে যাওয়া নাথান লিঁও আর মিশেল স্টার্ককেও সাজঘরে ফিরিয়েছেন তিনি।

মাত্র ১৫০ রান করেও তাই ৪৬ রানের লিড পেয়েছে ভারত। জাসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অস্ট্রেলিয়ার দুর্গ ভেঙেছেন তিনি। দেখে মনে হয়নি প্রথমবার খেলতে নেমেছেন। অজিদের চিরচেনা স্লেজিংও তাকে বিচলিত করেনি।

২৩ বছর বয়সী পেসারের উত্থান আরেক রানার হাত ধরে। খানিক কৃতিত্ব অবশ্যই কেকেআরের স্কাউটিং টিমের প্রাপ্য। নিতিশ রানার পরামর্শে ২০২২ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সী হার্শিত রানাকে দলে ভেড়ায় কলকাতা। প্রথম দুই মৌসুমে ৮ ম্যাচ খেলে পেয়েছিলেন মাত্র ৬ উইকেট। ইকোনমিটাও ১০ এর কাছাকাছি।

তবে, এরপরই বদলে ফেলেন নিজেকে। ২০২৩ সালের দুলীপ ট্রফি দিয়ে শুরু। আর ২০২৪ সালের আইপিএল যেন ছিল হার্শিতেরই অপেক্ষায়। আসরের চর্তুথ সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী। কলকাতাকে জেতালেন শিরোপা। নির্বাচকদের নজর কাড়লেন, জানিয়ে দিলেন তিনি প্রস্তুত। তিনি কতটা প্রস্তুত, সেটাই এবার টের পেল অস্ট্রেলিয়া।

এখন অবধি একটাই ইনিংস খেলেছেন, তাও পেসারদের স্বর্গ খ্যাত পার্থে। চোখে চোখ রেখেই লড়ে যাচ্ছেন মিশেল স্টার্ক, জশ হ্যাজেলউড, প্যাট কামিন্সদের সাথে। মোহাম্মদ শামির অভাব বুঝতেই দেন নি। নিতেশ কুমার রেড্ডি, ওয়াশিংটন সুন্দরদের তো সেভাবে বোলিংয়েও আসতে হয় নি। এই ধারা ধরে রাখতে পারলে হয়ত হার্শিত বনে যাবেন ভারতের অন্যতম পেস কাণ্ডারি!

Share via
Copy link