মরিয়া হাসানের চোখে মূল দল

বহুল প্রতিক্ষীত ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের জন্য গতকাল প্রাথমিক দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ২০২৩ বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে তারুণ্য নির্ভর দল ঘোষণা করেছে নির্বাচকরা। তরুণদের সুযোগ দিতে বাদ পড়তে হয়েছে মাশরাফি বিন মর্তুজাকেও। আর এই তরুণদের একজন হাসান মাহমুদ বলছেন, তার লক্ষ্য মূল দলে জায়গা করে নেওয়া।

প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু জানিয়েছিলেন, ২০২৩ বিশ্বকাপে ফোকাস রেখে  টিম ম্যানেজমেন্ট তাঁদের ভিশন-২০২৩ প্ল্যান দিয়েছে। ওই ভিশন মাথায় রেখে ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে এক হয়ে এগিয়ে যাচ্ছে তারা। সেই প্ল্যানের লক্ষ্য তরুণ ক্রিকেটারদের গড়ে তোলা। তারই অংশ হিসাবে প্রাথমিক দলে ডাক পেয়েছেন তরুণ পেসার হাসান মাহমুদ।

বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে জেমকন খুলনার হয়ে দারুণ বোলিং করেছিলেন হাসান মাহমুদ। ৯ ম্যাচে নিয়েছিলেন ১১ উইকেট। টি-টোয়েন্টি কাপ শেষে ছুটি কাটাতে নিজ জেলা লক্ষ্মীপুর আছেন তিনি। প্রাথমিক দলে ডাক পাওয়ার পর মুঠোফোনে সেখান থেকেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন হাসান মাহমুদ। জানিয়েছেন এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।

তবে আনন্দে ভেসে না গিয়ে বাস্তবতা মনে করিয়ে দিলেন হাসান মাহমুদ। এই পেসারের এখন একটাই লক্ষ্য প্র্যাক্টিস ম্যাচে ভালো করে মূল স্কোয়াডে জায়গা করে নেওয়া। তিনি বলেন, ‘মূল স্কোয়াডে জায়গা পাওয়া ডিপেন্ড করে আমার পারফরম্যান্সের উপর। যদি প্রস্তুতি ম্যাচ গুলোতে ভালো করি তাহলে আশা করি যে অবশ্যই স্কোয়াডে থাকবো। আগামীকাল ঢাকা যাবো। ৭ তারিখে করোনা টেস্ট। এরপর অনুশীলন শুরু। আপাদত প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো করাটা গুরুত্বপূর্ণ আমার কাছে।’

হাসান মাহমুদের জন্য জাতীয় দল একেবারে নতুন নয়। প্রাথমিক দলে তিনি আগেও ছিলেন। এমনকি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে আর্ন্তজাতিক অভিষেকও হয়েছে তার। তবে এখনও পর্যন্ত নিজের জায়গাটা শক্ত করে ফেলার সময় পাননি। সে জন্য বিশেষ করে ওয়ানডের লড়াইটা খুব জরুরী হবে।

এখন পাইপলাইনে অনেক পেসার। তাই চ্যালেঞ্জটা ভালো করেই জানা আছে হাসান মাহমুদের। সুযোগ পেলে সেটা কাজে লাগাতেও বদ্ধপরিকর এই পেসার। তিনি বলেন, ‘জায়গা পেতে অবশ্যই নিজের সেরা পারফর্ম করতে হবে। পাইপলাইনে যেহেতু অনেক পেসার আছে, তাই সবার থেকে আলাদা পারফর্ম লাগবে। সুযোগ পেলে অবশ্যই নিজের সেরাটা দেবো। এখানে বসে থাকার সুযোগ নেই। সুযোগ পেলেই কাজে লাগাতে হবে।’

সদ্য শেষ হওয়া টুর্নামেন্ট টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে হলেও ওয়ানডে ভালো করতে আশাবাদী হাসান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘রিসেন্টলি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট শেষ করলাম, এখন ওডিআই ফরম্যাটে খেলা হবে। এটা টোটালি ডিফারেন্ট। এখানে ১০ ওভার বল করতে হবে। লক্ষ্য থাকবে লাইন লেংথ ঠিক রেখে বল করা। আমি আশাবাদী ভালোই করবো।’

টি-টোয়েন্টি কাপে জেমকন খুলনাতে হাসান মাহমুদ সতীর্থ হিসেবে পেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ, মাশরাফি ও সাকিবের মতো তারকাদের। তাদের কাছে থেকেও অনেক কিছু শিখেছেন তিনি। সেই অভিজ্ঞতাও কাজে লাগাতে চান এই পেসার। হাসান মাহমুদ বলেন, ‘তাঁদের সাথে খেলার অভিজ্ঞতা আসলে মুখে প্রকাশ করার মতো না। যাদেরকে মাঠে দেখে বড় হয়েছি, যাদের দেখে অনুপ্রেরণা পেয়েছি তাদের সাথে খেলা অনেক বড় বিষয়। পরিস্তিতি অনুযায়ী ওনারা সব সময় পরামর্শ দিয়েছেন। অনেক কিছু শিখেছি। এটা কাজে লাগবে।’

জেমকন খুলনা শিবিরে শেষের দিকে যোগ দিয়েছিলেন মাশরাফি। বাংলাদেশের তরুণ পেসারদের ভিতর অনেকেরই আইডল তিনি। মাশরাফি তাকে কোন পরামর্শ দিয়েছে কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে খেলা-৭১ কে হাসান মাহমুদ বলেন, ‘মাশরাফি ভাই বলেছে নিজকে যদি মেইন্টেইন করতে পারো, তবে তোমার যে কোয়ালিটি আছে তুমি অনেক দূর পর্যন্ত যেতে পারবা। বাংলাদেশকে লম্বা সময় সার্ভিস দিতে পারবা।’

বাংলাদেশ সফরে দ্বিতীয় সারির দল পাঠাচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এটা নিয়ে একটুও ভাবছেন না হাসান মাহমুদ। বরং প্রতিদ্বন্দ্বীকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে দেখে সুযোগ পেলে সেরা খেলারই চেষ্টা করবেন তিনি। সেই চেষ্টাটা কাজে লেগে গেলে লাভটা বাংলাদেশ দলেরই হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link