বাংলাদেশের সাথে হাশিম আমলার সম্পর্কটা বরাবরই অন্যরকম। প্রথমত, এই বাংলাদেশের মাটিতেই ওয়ানডে অভিষেক হয় তাঁর।
সেটা ছিল নয় মার্চ, ২০০৮। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম। টেস্ট অভিষেকের চার বছর পর দক্ষিণ আফ্রিকানদের হয়ে সেদিনই প্রথম রঙিন পোশাকে খেলতে নামেন দ্য মাইটি হ্যাশ।
বাংলাদেশ কেন হাশিম আমলার জন্য ‘স্পেশাল’? এর কারণ একটা নয়, একাধিক। তার দ্বিতীয় ও প্রধান কারণটা শুনলে প্রথম কারণটাকে খুব বড় করে দেখার উপায় পাওয়া যাবে না।
বাংলাদেশের সাথে ক্লাসিক এই ব্যাটসম্যানের সম্পর্কটা আরও ঘনিষ্ঠ, আরও অনেক বেশি গভীর। হাশিম আমলা যে এই ঢাকারই ‘ভাতিজা’। না ভুল পড়ছেন না, এটাই সত্যি।
দীর্ঘকাল ধরে এই ঢাকাতেই বসবাস করছেন হাশিম আমলার চাচা। বাংলাদেশে খেলতে আসলে আমলা নিজেও ছুটে আসেন চাচার বাসায়। কখনোই এর খুব একটা ব্যতিক্রম হয় না। কঠিন সফর সূচীর মাঝে আমলা ঠিকই সময় বের করেন।
আমলাদের পূর্ব পুরুষের বসবাস ছিল ভারতের গুজরাটে। আমলার দাদা ছিলেন সেখানকার সুরাট শহরের বাসিন্দা। ২০১৫ সালে চাচার বাড়ির উঠোনে ক্রিকেট খেলেন হাশিম আমলা।
আমলার বাবারা তিন ভাই। তিন ভাই তিন দেশে থাকেন। বলাই বাহুল্য, এর মধ্যে আমলার বাবা মোহাম্মদ এইচ. আমলা থাকেন দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে। সেখানেই ১৯৮৩ সালে জন্ম হয় হাশিম আমলার। চার বছরের বড় ভাই আহমেদ আমলার মত হাশিমও ওই ডারবানেই ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন বড় ক্রিকেটার।
হাশিম আমলার বাকি দুই চাচার মধ্যে একজন থাকেন আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলসে। আরেকজন থাকেন ঢাকার সিদ্ধেশ্বরীতে। ২০১৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা দল বাংলাদেশে খেলতে এসেছিল সেবারও চাচার বাসায় বেড়িয়ে এসেছিলেন হাশিম।
ওই সময় অ্যাপার্টমেন্টের উঠোনেই তাঁকে দেখে স্থানীয় মানুষজন ঘিরে ধরেন। ক্ষুদে শিশুরা তাঁর সাথে ক্রিকেটও খেলে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সুবাদে সেই ছবিগুলো বেশ ভাইরাল হয়। পরে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) খেলতে এসেও গিয়েছিলেন চাচার বাসায়।
ভারতীয় বংশোদ্ভুত বলে বরাবরই গণমাধ্যমের অনেক প্রশ্নের সামনে পড়তে হয় হাশিমকে। যদিও তিনি বরাবরই বলে এসেছেন, ‘আমার পূর্ব পুরুষ গুজরাটের। কিন্তু, আমি পুরোদস্তর দক্ষিণ আফ্রিকান।’
আমলা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে এরই মধ্যে অবসর নিয়ে ফেলেছেন। তাই, ঢাকায় খুব একটা আর আসা হয় না তাঁর। তবে, চাচার সাথে নিশ্চয়ই যোগাযোগটা ধরে রেখেছেন নিপাট এই ভদ্রলোক।