হাইভোল্টেজ ম্যাচ এমনই হয়!

একেই বলে সেয়ানে সেয়ানে লড়াই। ঢাকা, চট্টগ্রাম ঘুরে আবার অবশেষে সেই ঢাকার মাটিতেই টের পাওয়া গেল বিপিএলের আসল উত্তাপ। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দলের মধ্যে হল জমপেশ এক ম্যাচ। শেষ বল পর্যন্ত চোখ আঁটকে থাকলো ম্যাচে। এমন স্নায়ুবিক আলোড়নের ম্যাচে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ২ রানের জয় পেয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্স।

বিপিএলে মঙ্গলবার দিনের প্রথম ম্যাচে টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বরিশালের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বোলিং ইনিংসে শুরুর গল্পটা লিখেন মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র। একাই গুড়িয়ে দেন সিলেটের টপ অর্ডার। ইনজুরি থেকে ফিরে এসে এ দিন ব্যাট হাতে দাঁড়াতে পারেননি তৌহিদ হৃদয়। ৪ রান করে ফিরে যান তিনি। আর জাকির হাসান, মুশফিকুর রহিম- দুজনই বিদায় নেন কোন রান না করেই। ১৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে তখন ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে যায় সিলেট।

তবে টম মুরসকে নিয়ে একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে যান নাজমুল হোসেন শান্ত। মুরস ৪০ রানে ফিরে গেলেও শান্ত তুলে নেন ফিফটি। ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূরণ করেন ৪৮ বলে। যা এ বারের বিপিএলে সবচেয়ে ধীর গতির অর্ধশতক। তবে ফিফটির পরেই হাত খুলে খেলতে শুরু করেন শান্ত। পরের ১৮ বলে করেন ৩৯ রান। আর এতেই ১৭৩ রানের লড়াই করার মত এক পুঁজি পায় সিলেট স্ট্রাইকার্স। শান্ত শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৬৬ বলে ৮৯ রান করে।

১৭৪ রানের লক্ষ্যে শুরুটা দুর্দান্ত করেছিল ফরচুন বরিশাল। সাইফ হাসানের ক্লিন হিটিংয়ে পাওয়ার প্লেতে বড় সংগ্রহের পথেই এগোচ্ছিল বরিশাল। তবে ৪ ছক্কায় ১৯ বলে ৩১ রান করে সাইফ হাসান ফিরে গেলে রানের গতি কিছুটা থেমে যায়। এর মাঝে শান্তর দুর্দান্ত এক ক্যাচে এনামুল হক ফিরে গেলে চাপে পড়ে যায় বরিশাল।

তবে সাময়িক সে চাপ কাটানোর দায়িত্বটা তুলে নেন অধিনায়ক সাকিব। শুরু থেকেই চালিয়ে খেলতে শুরু করেন। ইব্রাহিম জদরানকে নিয়ে দারুণ এক জুটি গড়েন। কিন্তু ১০৭ রানে ইব্রাহিম জদরান আউট হয়ে ফিরে যাওয়ার ঠিক ১ রানের ব্যবধানে আউট হয়ে যান সাকিবও। আর এতেই ব্যাকফুটে পড়ে যায় ফরচুন বরিশাল।

তবে মাশরাফির করা তৃতীয় ওভারে আবারো ম্যাচে ফেরে বরিশাল। সে ওভারের শেষ ৩ টি বলেই ছক্কা হাঁকান করিম জানাত। আর এতেই ম্যাচে ভালভাবে ফিরে আসে বরিশাল। তবে ঠিক পরের ওভারেই আবার মাত্র ১ রান দিয়ে বরিশালকে ম্যাচ থেকে এক মুহূর্তের জন্য দূরে ঠেলে দেন মোহাম্মদ আমির।

কিন্তু ম্যাচের তখনও আরো রঙ বদলানো বাকি। ১৮ তম ওভারে এসে ১৮ রান তুলে নেয় বরিশাল। শেষ ২ ওভারে তখন প্রয়োজন ২৩ রান। মোহাম্মদ আমির সে ওভারে একটা ছক্কা হজম করলেও দেন ৮ রান। তারপরও শেষ ওভারে অধিনায়ক মাশরাফি নিজে বল করবেন নাকি অন্য কাউকে দিয়ে করাবেন তা নিয়ে বেশ দ্বিধায় পড়ে যান ম্যাশ । তবে শেষমেশ মাশরাফি বল হাতে তুলে দেন রেজাউর রহমান রাজার হাতে।

১৫ রানের সমীকরণে প্রথম বলই ওয়াইড দেন রেজাউর। কিন্তু পরে দুই বলে ইফতিখার আর মিরাজ আউট হয়ে ফিরে গেলে বরিশালের হাত থেকে ম্যাচ ফসকে যায়। তারপরও মোহাম্মদ ওয়াসিম ৫ম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে শেষ বল পর্যন্ত ম্যাচের দৃষ্টি নিয়ে যান। শেষ বলে ৬ হলে ম্যাচ গড়াতো সুপার ওভারে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি। শেষ বলে ৪ মেরে ইনিংস শেষ করলেও বরিশাল লক্ষ্য থেকে দূরে থেকে যায় ২ রানে।

সিলেটের এ ম্যাচ জয়ে অবশ্য দুই দলের কোনো অবস্থার পরিবর্তন হল না। ৭ ম্যাচের ৬ জয়ে সিলেট স্ট্রাইকার্স যথারীতি ১ নম্বরে। আর একটি জয় কম নিয়ে ফরচুন বরিশাল রইল পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link