কে পানির বোতল আগে নেবেন সেটা রক-পেপার-সিজার খেলে ঠিক করছেন; কখনো আবার দর্শকদের সামনে গিয়ে নাচছেন; লামিন ইয়ামাল আর নিকো উইলিয়ামসের এসব দৃশ্য প্রমাণ করে এবারের ইউরো কতটা উপভোগ করছেন তাঁরা। তাঁদের মতই মনের মত করে টুর্নামেন্ট উপভোগ করছেন স্প্যানিশ সমর্থকেরাও। লম্বা সময় পর প্রিয় দলকে প্রত্যাশার চেয়ে ভাল খেলতে দেখছেন তাঁরা।
এবারের ইউরোতে স্পেন সত্যিই নবরূপ ধারণ করেছে। এখন পর্যন্ত ছয় ম্যাচের সব কয়টিতে জিতেছে তাঁরা, সবমিলিয়ে গোল করেছে তেরোটি, যা কি না পর্তুগাল, ফ্রান্স এবং ইতালির মোট গোলের চেয়ে বেশি।
কিন্তু হুট করে এমন আমূল বদলে যাওয়ার রহস্য কি – রহস্য আর কিছুই না, নিজেদের ভঙ্গুর প্লেয়িং স্টাইল বদলে লা ফুয়েন্তে ভিন্ন ঘরানার ফুটবল খেলছেন শিষ্যদের দিয়ে। আগের মত পজেশন বেসড নয়, তাঁর পরিকল্পনা অনেক বেশি ডায়নামিক। সেজন্যই ক্রোয়েশিয়া, জার্মানির মত বড় দলগুলোর বিপক্ষে বল দখলে পিছিয়ে থেকেও ম্যাচ বের করে আনতে পেরেছে স্পেন।
আর তাঁদের এই বদলে যাওয়ার পিছনে সবচেয়ে বেশি অবদান দুই তরুণ উইঙ্গার লামিন আর নিকো উইলিয়ামসের। ড্রিবলিং আর গতির সুবাদে বাঘা বাঘা ডিফেন্ডারদেরও গোল খাইয়েছেন তাঁরা। বিশেষ করে বার্সা ফরোয়ার্ড যেভাবে খেলছেন সেটা অন্য মাত্রা যোগ করেছে স্প্যানিশ আক্রমণভাগে।
ফরোয়ার্ড লাইনের ভরসা যদি হন এই দু’জন, তাহলে মিডফিল্ডে বলতে হবে রদ্রি আর দানি অলমোর কথা। পেদ্রির ইনজুরির ফলে নিয়মিত একাদশে জায়গা পাওয়া অলমো, এখন পর্যন্ত পাঁচ গোলে অবদান রেখেছেন। অন্যদিকে রদ্রিকে বলতে হয় দলের প্রাণ ভোমরা। পুরো খেলা দুর্দান্তভাবে নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি; কখন কাকে কোথায় পাস দিতে হবে সবকিছু তাঁর নখ দর্পণে।
এছাড়া লেফট ও রাইট ব্যাকে কুকুরেল্লা এবং দানি কারভাহালকে খেলানো; নাম্বার এইট ভূমিকায় ফ্যাবিয়ান রুইজকে রাখা – কোচের এসব সিদ্ধান্তও স্পেনকে আরো ক্ষুরধার হয়ে উঠতে সাহায্য করেছে। এখন অপেক্ষা শুধু আর এক ম্যাচের, এরপরই পূর্ণতা পাবে লা ফুয়েন্তের দর্শন।