দিপক হুডা, ভারতের নতুন ফিনিশার

শ্রীলংকার বিপক্ষে তারুণ্যনির্ভর এক দল সাজিয়ে যেন টি-টোয়েন্টিতে নতুন যুগের সূচনা করলো ভারত। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুল কিংবা জাসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ শামিদের ছাড়াই লংকানদের বিপক্ষে ম্যাচ জিতেছে তাঁরা। আর সেই নতুন যুগের সেই জয়যাত্রায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন দিপক হুডা।  

৭৭ রানে চার উইকেট হারিয়ে ভারত যখন ধুঁকছে তখন ক্রিজে আগমণ হুডার। ওয়াংখেড়ের পিচটা কাল মোটেই ব্যাটিং সহায়ক ছিল না, স্পিনাররা বেশ ভালোই সহায়তা পাচ্ছিলেন। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা এবং মহেশ থিকসানার পাশাপাশি ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাও ক্রমেই ভয়ংকর হয়ে উঠছিলেন। ১১ ওভার শেষে লংকান স্পিনাররা পাঁচ ওভার বল করে মাত্র ২২ রানে তুলে নিয়েছিলেন তিন উইকেট। ভারতের সামনে তখন অল্প রানেই গুটিয়ে যাবার শংকা। 

এমন সময়ে ক্রিজে আসলেন দিপক হুডা। শুরুটা করলেন খানিকটা ধীরস্থিরভাবেই, প্রথম আট বলে মনোনিবেশ করলেন দৌড়ে রান নেয়াতেই। ঝড়টা শুরু করলেন ১৬তম ওভারে, থিকসানাকে ব্যাকফুটে গিয়ে দারুণ এক ছক্কা হাঁকিয়ে। পরের বলের গল্পটাও একই রইলো, একই জায়গা দিয়ে সীমানার বাইরে। ভারতের রান রেটটাও মূহুর্তের মধ্যে ৬.৭৩ থেকে বেড়ে দাঁড়ালো ৭.৩৭ এ। 

ম্যাচ শেষে হুডা বলেন, ‘ওটা ছিল থিকসানার শেষ ওভার আর সে বাজে জায়গায় বল ফেলছিল। আর টি-টোয়েন্টিতে বাজে বলের কোনো ছাড় নেই। আক্সার এবং আমি তাই পরিকল্পনা করছিলাম বোলারদের উপর চড়াও হবার। সে অনুযায়ীই ব্যাট করেছি।’

ওই ওভারের পরই ম্যাচের মোমেন্টাম ঘুরে যায় ভারতের দিকে। লংকান বোলারদের আর ম্যাচে ফেরা হয়নি। পরের ওভারে হাসারাঙ্গাকেও একই ভঙ্গিতে পাঠিয়েছেন সীমানার বাইরে। তাঁর ২৩ বলে ৪১ রানের সুবাদেই এলোমেলো লংকান বোলিং। অল্প রানেই গুটিয়ে যাবার শংকা থাকলেও ভারত পেয়ে যায় ১৬২ রানের লড়াকু পুঁজি। 

ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে টপ অর্ডারে ব্যাটিং করলেও বর্তমানে ব্যাট করতে হচ্ছে ফিনিশার হিসেবে। মূলত দীনেশ কার্তিকের জায়গায় ছয় নম্বরে তাঁকে বাজিয়ে দেখছে টিম ম্যানেজমেন্ট। হুডাও মেনে নিয়েছেন নিজের পজিশন, বুঝে নিয়েছেন নিজের দায়িত্ব।

তিনি বলেন, ‘শুরুতে দ্রুত উইকেট হারিয়ে ফেলায় আমাদের মূল কাজটা ছিল ভাল পার্টনারশিপ গড়ে তোলা। আপনি যখন নিচের দিকে ব্যাট করবেন তখন আপনাকে এরকম পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। কখনো ব্যাটিং ধ্বসে পড়লে জুটি গড়তে হবে, আবার কখনো দ্রুত রান তুলে দলকে ভালো জায়গায় পৌঁছে দিতে হবে। নাম্বার ছয় কিংবা সাতের দায়িত্ব এটাই।’

হুডার মতে, ‘ম্যাচের চাহিদা মত ব্যাট করতে হবে। উইকেটের চরিত্র বুঝতে হবে এবং সে অনুযায়ী দলকে ভালো সংগ্রহ এনে দিতে হবে। ছয় নম্বরে ব্যাট করার সময় আমি এভাবেই চিন্তা করছিলাম যে আমাকে ফিনিশারের ভূমিকা পালন করতে হবে।’

আক্সার প্যাটেলের সাথে ৩৫ বলে ৬৮ রানের জুটি গড়ে দলকে বিপদসীমা পার করান হুডা। পরবর্তীতে তাঁর গড়ে দেয়া ভিতের উপর ভর করে দলকে জয় এনে দেন ভারতীয় বোলাররা। যদিও খুব একটা সহজ হয়নি সেটা, শেষ ওভারে টানটান উত্তেজনায় দুই রানের জয় পায় হার্দিক পান্ডিয়ার দল। 

ভারতের নতুন ফিনিশারের ভূমিকায় প্রথম ম্যাচে দারুণ সফল দীপক হুডা। এখন দেখার বিষয় টপ অর্ডারের ফর্মটা এখানেও ধরে রাখতে পারেন কিনা এই অলরাউন্ডার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link