ফ্রম পাকিস্তান উইদ লাভ!

গণমাধ্যমের জন্য তাঁদের সম্পর্কের খবরটা বেশ অবিশ্বাস্য ছিল। কারণ, রিনা রয়ের জীবন কখনোই বিতর্কের উর্ধ্বে ছিল না। অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহার সাথে তাঁর সম্পর্কের আলোচনা বেশ মুখরোচক খবরের জন্ম দিত ভারতীয় সিনেমার পাতায়। শত্রুঘ্ন বিয়ে করেছিলেন পুনম সিনহাকে। তারপরও ‘আদার উইম্যান’ হয়ে তাঁর জীবনে এসেছিলেন রিনা রয়। যদিও, পরিস্থিতি ঘোলাটে হওয়ার আগেই সরে এসেছিলেন রিনা।

এই জু’টির গল্পটা খুবই মুখরোচক। ৮০’র দশকে পাকিস্তানি ক্রিকেটার মহসিন খান প্রেমে পড়েছিলেন বলিউডের রিনা রয়ের। ‘নাগিন’, ‘জানি দুশমন’ সিনেমাগুলোর জন্য রিনা তখন হিট নায়িকা।

যদিও, গণমাধ্যমের জন্য তাঁদের সম্পর্কের খবরটা বেশ অবিশ্বাস্য ছিল। কারণ, রিনা রয়ের জীবন কখনোই বিতর্কের উর্ধ্বে ছিল না। অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহার সাথে তাঁর সম্পর্কের আলোচনা বেশ মুখরোচক খবরের জন্ম দিত ভারতীয় সিনেমার পাতায়।

শত্রুঘ্ন বিয়ে করেছিলেন পুনম সিনহাকে। তারপরও ‘আদার উইম্যান’ হয়ে তাঁর জীবনে এসেছিলেন রিনা রয়। যদিও, পরিস্থিতি ঘোলাটে হওয়ার আগেই সরে এসেছিলেন রিনা।

আর মহসিন খান আশির দশকে পাকিস্তানের সেরা ওপেনারদের একজন। বেশ সুদর্শন। আর ব্যাট হাতেও ছিলেন বেশ স্টাইলিশ।

১৯৮৩ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। করাচিতে বেশ গোপনীয়তার সাথে তাঁদের বিয়ে হয়।  তবে, মহসিনের পরিবার বিয়েতে নাখোশ হয়। তবে, এর মধ্যেই চলছিল সব কিছু। ঘর আলো করে জন্ম হয় তাঁদের একমাত্র মেয়ে জান্নাত।

মাত্র ৩১ বছর বয়সেই খেলোয়াড়ী জীবনের ইতি টানেন মহসিন খান। স্ত্রীর হাত ধরে তিনিও নাম লেখান বলিউডে, সিনেমার জগতে আসেন বাইশ গজ থেকে।

১৯৮৯ সালে জেপি দত্ত’র ‘বাটওয়ারা’ সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। যে সিনেমায় তার সহশিল্পী ছিলেন ধর্মেন্দ্র, বিনোদ খান্না, ডিম্পল কাপাডিয়া, অমৃতা সিং, পুনম ধীলন, শাম্মি কাপুর, অমরিশ পুরি প্রমুখ। সেই ছবিতে সেরা সহ-অভিনেতা হিসেবে খ্যাতনামা ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের জন্য মনোনয়নও পান তিনি।

বড় সাফল্য আসে ১৯৯১ সালে। সেবার মহেশ ভাটের ব্যবসায়িক সফল ‘সাথি’ ছবিতে ছিলেন তিনি। আরো ছিলেন আদিত্য পাঞ্চোলি ও বর্ষা উসগাওকার। পরে নব্বইয়ের দশকে পাকিস্তানেও কিছু ছবি করেন মহসিন খান। ১৯৯১ সালে তাঁর আরে তিনটি ছবি মুক্তি পায় – ফাতেহ, গুনেহগার কউন ও প্রতিকার।

যদিও, বলিউডের জগতে খুব স্থায়ী হননি মহসিন। সংসারে রিনার সাথে টানাপোড়েনও শুরু গয়। দ্রুতই তাই তাদের বিচ্ছেদ হয়। কি কারণে? এই বিষয়ে অবশ্য নানারকম মত পাওয়া যায়।

কেউ কেউ বলেন, পারিবারিক কারণেই আলাদা হন তাঁরা। কারণ, ভিন্ন দেশে ভিন্ন ধর্মের বিয়ে নাকি দুই পরিবারই মেনে নিলেও ঠিক মনে নেয়নি। 

আরেকটা মত হল, ইংল্যান্ডে স্থায়ী হতে চেয়েছিলেন মহসিন খান। ব্রিটিশ নাগরিকত্ব নিয়ে চেয়েছিলেন বাকিটা জীবন কাটাতে। তবে, রিনার তাতে আপত্তি ছিল। আবার কেউ কেউ বলেন, খানের আভিজাত্যের জীবনের সাথে কখনোই মানিয়ে নিতে পারেননি রিনা।

আবার ডিভোর্সের সময়ও বেশ জল ঘোলাও হয়। বিশেষ করে মেয়ের কাস্টোডি কে নেবে সেটা আদালত অবধি গড়ায়। খানই মেয়ের দায়িত্ব পান। পরে তিনি আবার বিয়ে করলে মেয়ে জান্নাত চলে আসে মায়ের কাছে। জান্নাতের নাম মা রিনা পাল্টে রাখেন ‘সানাম’।

রিনাকে আজকাল আর সিনেমায় খুব একটা দেখা যায় না। সর্বশেষ ২০০০ সালের ‘রিফিউজি’ ছবিতে কাজ করেন। রিনার সাথে ছাড়াছাড়ির পর আরো দুবার বিয়ে করেন মহসিন খান।

মহসিন পরে পাকিস্তানের ক্রিকেটেও ফেরেন। ২০০৯-১০ মৌসুমে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) তাঁকে প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব দেয়। ২০১১ সালে ডেভ হোয়াটমোর আসার আগে অন্তবর্তীকালীন কোচের দায়িত্বও পালন করেন।

মেয়ের সাথে যোগাযোগটা কখনোই নষ্ট হয়নি মহসিনের। রিনা রয় বলেন, ‘মহসিনের সাথে আমার আর কোনো ভুলবোঝাবুঝি নেই। ওর বিপক্ষেও আমি নই। ও চমৎকার মানুষ। আমার পর ও আরো দু’টো বিয়ে করেছে। ওর তৃতীয় স্ত্রীর সাথে ও বেশ ভালই আছে এখন। ওর সাথে সানামের (জান্নাত) রোজ যোগাযোগ হয়। বাবা-মেয়ের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক।’

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...