শ্রীলঙ্কানরা আদর করেই তকমা দিয়েছিল ‘স্টারবয়’। সেই তাওহীদ হৃদয় লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে লংকানদের হৃদয়। লংকানদের বিশ্বকাপ যাত্রায় একটা ‘ফুলস্টপ’ দিয়ে দিলেন তাওহীদ। আগ্রাসনের রুদ্রমূর্তি হয়ে ভস্ম করেছেন সকল স্বপ্ন।
বাংলাদেশের বোলাররা কাটিয়েছে এক দুর্দান্ত দিন। মাত্র ১২৪ রানেই থমকে গেছে শ্রীলঙ্কার ইনিংস। নড়বড়ে আত্মবিশ্বাস, ব্যাটারদের দুর্দিনের মাঝেও জয়ের আশাই করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু টপ অর্ডারের ব্যর্থতার গল্প এদিনও বদলায়নি। সৌম্য সরকার, তানজিদ তামিম, নাজমুল হোসেন শান্তরা ফিরে গেছেন দ্রুতই।
২৮ রানেই নেই বাংলাদেশের ৩ উইকেট। আবারও তাসের ঘর হওয়ার অপেক্ষায় ছিল বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার। সেখানে দাঁড়িয়ে হৃদয় দৃঢ়তার গল্প শুনিয়ে গেলেন। গল্প না বলে কবিতাও বলা যায়, রীতিমত এক বিদ্রোহী কবিতা। সকল ঝঞ্ঝার বিরুদ্ধে পাল্টা আঘাত হানলেন।
অবশ্য তাকে হাল ধরতে হয়েছে শুরুতে। একটু দেখে শুনেই খেলেছেন। রানিং বিটুইন দ্য উইকেটে বরাবরই পটু হৃদয়। শুরুতে সে কাজটাই করে গেছেন। সঙ্গী হিসেবে আত্মবিশ্বাসের অভাবে থাকা লিটন দাস ছিল। তাকে সাথে করেই এগিয়ে যেতে থাকেন হৃদয়।
তবে যখন পরিস্থিতি বদলে যেতে শুরু করে তখনই নিজের হাত খুলে দেন হৃদয়। দারুণ সব শটের পসরা সাজিয়ে বসেন। ২০০ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করে গেছেন আউট হওয়ার আগে। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার এক ওভারেই টানা তিনটি বিশাল ছক্কা হাঁকিয়েছেন তাওহীদ হৃদয়।
৪০ রানের ইনিংসটিতে চারটি বিশাল ছক্কা হাঁকিয়েছেন। চার মেরেছেন মোটে ১টি। গ্যালারিতে বল আছড়ে ফেলতেই যেন তার সকল স্বাচ্ছন্দ্য। তার সেই ইনিংসটি আসলে বদলে দিয়েছে ম্যাচের গতিপথ। তাওহীদ হৃদয় পাল্টা আঘাত করেছেন বলেই জয়ের কাছে অবধি পৌঁছেছিল দল। কেননা তিনি আউট হওয়ার আগে পরে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ছিল বেগতিক।
হাসারাঙ্গার বলে আউট হওয়ার পর আবারও ব্যাটিং ধ্বস নামে বাংলাদেশের। হৃদয় যখন আউট হন তখন বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৯১ রান। উইকেট হারিয়েছিল ৪টি। জয়ের জন্য তখন প্রয়োজন ছিল ৩৪ রান। কিন্তু জয় পাওয়ার পথে বাংলাদেশ হারিয়েছে আরও পাঁচটি উইকেট।
পরিস্থিতি বিবেচনায় হৃদয়ের সেই ইনিংসটির মাহাত্ম্য অন্তত বর্ণনাতীত। তার ওই ইনিংসটিই বদলে দিয়েছে ম্যাচের ফলাফল। তিনিও যেন বাড়তি এক আত্মবিশ্বাস পেলেন। এই আত্মবিশ্বাসকে সঙ্গী করে আগ্রাসনের ধারাবাহিক পথিকৃৎ হবেন হৃদয়, সমর্থকরা সম্ভবত সেই প্রত্যাশাই রাখছেন।