২০ ওভার শেষে স্কোরবোর্ডে ভারতের রানের সংখ্যা মাত্র ১২৪। মারকাটারি টি-টোয়েন্টির এই যুগে যথেষ্ট রান নয়। ইনিংস বিরতিতে দক্ষিণ আফ্রিকার খেলোয়াড়দের বডি ল্যাঙ্গুয়েজই জানান দিয়েছিল, ম্যাচ জয়ের জন্য তারাই ফেভারিট।
তারপরেও ম্যাচে যতটুকু ‘যদি-কিন্তু’র আলোচনা রইলো, প্রতিপক্ষ ভারত বলেই সম্ভবত। এই দল ঠিক হারার আগে হারে না, লড়াইটা তাদের ধমনিতে। তবে, বল হাতে কোন একজনকে দায়িত্ব নিতেই হতো। ১২৪ রান ডিফেন্ড করতে চাইলে, কোন একজনের মহীরুহ হয়ে ওঠার বিকল্প নেই।
সেই দায়িত্বই যেন নিজের কাঁধে তুলে নিলেন বরুন চক্রবর্তী। দক্ষিন আফ্রিকার মাটিতে, ঘাসে ভরা উইকেটে একজন স্পিনার মহীরুহ হয়ে উঠলেন। হাতের ‘মিস্ট্রি’তে নাস্তানাবুদ করে ছাড়লেন প্রোটিয়া টপ ও মিডল অর্ডার ব্যাটারদের।
ষষ্ঠ ওভারে এইডেন মার্করামের স্ট্যাম্প তুলে নিয়ে শুরু, এরপর একে একে উপরেছেন হেনড্রিকস, ইয়ানসেন, ডেভিড মিলারের উইকেট। বাদ পড়েনি স্পিন বলের ত্রাস হেনরিখ ক্লাসেনের উইকেটও। লং অফে ক্যাচ দিতে বাধ্য হয়েছেন ক্লাসেন।
বরুণ যখন নিজের বোলিং কোটা শেষ করেছেন, তখন নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে ৪-০-১৭-৫। ১২৫ রানের লক্ষ্য যেন ২২৫ রানের সমান। বরুণের শিকার পাঁচ উইকেটের চারটাই সরাসরি বোল্ড।
শেষ পর্যন্ত ট্রিস্টান স্টাবসের দৃঢ়তা এবং জেরাল্ড কোয়েটজির ঝড়ে অবশ্য জয় নিশ্চিত হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার। তবে, নিখাদ ক্রিকেট প্রেমীদের চোখে লেগে থাকবে বরুণের এই বোলিং স্পেল। তারা নিশ্চয়ই স্রোতের বিপরীতে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে যাওয়া স্টাবসকেও সমান মর্যাদাই দিবেন।
একের পর এক উইকেট হারিয়ে বিপর্যস্ত দক্ষিণ আফ্রিকাকে জয়ের বন্দরে ভিড়িয়েছেন এই তরুণই। শুরুতে বরুণের গোলা সামলেছেন, লক্ষ্যের দিকে ছোট ছোট পদক্ষেপে এগিয়েছেন, শেষে আর্শদ্বীপের উপরে পাল্টা গোলা ছুঁড়ে দলকে পৌঁছে দিয়েছেন জয়ের বন্দরে।
স্টাবসের ৭ চারে অপরাজিত ৪১ বলে ৪৭ রানের ইনিংসে এখন সিরিজে ১-১ সমতায়। কিন্তু বরুন-স্টাবস এর মহাযুদ্ধে, জিতল যেন ক্রিকেটই।