আদতে তিনি ওপেনার, ঘরোয়া ক্রিকেটে তো বটেই জাতীয় দলেও লম্বা একটা সময় ইনিংস উদ্বোধন করেছিলেন। অথচ টিম ম্যানেজম্যান্টের চাহিদায় কোনো অসন্তোষ ছাড়াই নিজের প্রিয় পজিশন ছেড়ে মিডল অর্ডারে খেলতে রাজি হয়েছেন – বলা হচ্ছে ফখর জামানের কথা, যিনি চিরচেনা ওপেনার পরিচয় হারিয়েও দিব্যি পারফরম করে যাচ্ছেন।
সর্বশেষ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে ৪০ বলে ৭৮ রানের অনবদ্য এক ইনিংস উপহার দিয়েছেন এই ব্যাটার। সমান ছয়টি করে চার ও ছক্কার মারে ইনিংসটি সাজিয়েছেন তিনি। আর এতে ভর করেই ১৯৪ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে জয় তুলে নিয়েছে পাকিস্তান। দ্রুত দুই উইকেটের পতনের পর মোহাম্মদ রিজওয়ানের সাথে তাঁর ১৪০ রানের জুটি জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিল।
বাইশ গজে এসে শুরু থেকেই আগ্রাসী হয়ে উঠেছিলেন ফখর, একের পর এক বাউন্ডারির মারে সব চাপ নিমিষে উড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। হাফসেঞ্চুরির জন্যও বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি, মাত্র ৩১ বলেই মাইলফলক পূর্ণ হয় তাঁর।
এরপর অবশ্য আরো আক্রমণাত্বক হয়ে উঠেন এই বাঁ-হাতি, নিজের খেলা শেষ আট বল থেকেই ২৮ রান আদায় করেন। ফলে তাঁর আউট হওয়ার আগেই জয়ের সমীকরণ সহজ হয়ে গিয়েছিল বাবর আজমদের। যদিও চলতি বছরে এমন পারফরম্যান্স আরো অনেকবার দেখিয়েছেন এই তারকা। এবছর এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫০ স্ট্রাইক রেট আর ৩০ এর বেশি গড়ে রান করেছেন তিনি।
কিন্তু ধারাবাহিকতার প্রশ্নে খানিকটা পিছিয়ে আছেন, বড় ইনিংস খেলতে পারলেও নিয়মিত রান করতে পারছেন না। চার নম্বরের মত গুরুত্বপূর্ণ পজিশনে আরেকটু ধারাবাহিকতা যেকোনো দলের জন্যই বড্ড দরকার – তাছাড়া এই ব্যাটার আরেকটু ধারাবাহিক হতে পারলে ভয়ঙ্কর অস্ত্র হয়ে উঠবেন নি:সন্দেহে। তবে আশার কথা, গত দু’বছরের তুলনায় এবার তাঁর পারফরম্যান্স অনেক ভাল।
সামনেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ব্যাটিং লাইনআপের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবেই তাঁকে দেখা হচ্ছে। তাই তো ফখর জামানের ওপর প্রত্যাশা একটু বেশিই, সেই প্রত্যাশা পূরণের দায়িত্ব তাই নিতেই হবে তাঁকে। তিনি সেই দায়িত্ব কতটুকু পালন করেন সেটার উপর নির্ভর করবে পাকিস্তানের বিশ্বকাপ সাফল্য।