দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে তাঁদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয় মোটেই সহজ কিছু নয়, গত কয়েক বছরে এমন ঘটনা ঘটেছে হাতেগোনা কয়েকবার। তবে বিরল এই ঘটনা এবার ঘটলো ভারতের তরুণ ক্রিকেটারদের হাত ধরে; সঞ্জু স্যামসনের দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে তৃতীয় ওয়ানডেতে জয় পায় লোকেশ রাহুলের দল। আর তাতেই ২-১ ব্যবধানে সিরিজ নিজেদের করে নেয় তাঁরা।
আগে ব্যাট করতে এদিন আগ্রাসী শুরু করেন দুই ভারতীয় ওপেনার। কিন্তু পাওয়ার প্লের মধ্যেই তাঁরা আউট হলে খানিকটা চাপ সৃষ্টি হয়; সেই চাপ সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন স্যামসন আর রাহুল। দুজনের পঞ্চাশোর্ধ জুটিতে যখন ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছিল টিম ইন্ডিয়া, তখন রাহুলকে ফিরিয়ে ব্রেক থ্রু এনে দেন মুল্ডার।
এরপর তিলক ভার্মাকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন স্যামসন; কিন্তু স্বাগতিক বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে খোলস বন্দী হয়ে থাকতে হয় তাঁদের। তবে সময় গড়াতেই হাত খুলে খেলা শুরু করেন তাঁরা, চল্লিশ ওভারের মধ্যে দলীয় রান ২০০ এর গন্ডি পেরিয়ে যায়। ততক্ষণে হাফসেঞ্চুরিও তুলে নিয়েছিলেন দুজনে। যদিও ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হন তিলক।
অন্য প্রান্তে স্যামসন ছুটেছিলেন আপন গতিতে, ৪৬তম ওভারে আউট হওয়ার আগে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ১০৮ রানের ঝকঝকে ইনিংস; সতীর্থদের ব্যর্থতার দিনেই ক্যারিয়ারের প্রথম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি পেলেন তিনি – শেষদিকে রিংকু সিংয়ের ৩৮ রানের ক্যামিওর কল্যাণে ২৯৬ রানের পুঁজি পায় বর্তমান রানার আপরা।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনফর্ম টনি ডি জর্জি এদিনও ঝড় তুলেছিলেন বাইশ গজে। ওপেনার রেজা হেন্ড্রিকসের সঙ্গে গড়েছিলেন ৫৮ রানের জুটি, মাঝে রসি ভ্যান ডার ডুসেন স্থায়ী হতে না পারলেও এইডেন মার্করাম আবার ভাল সঙ্গ দিয়েছেন তাঁকে। প্রোটিয়া অধিনায়ককে ৩৬ রানের মাথায় আউট করে জুটি বিচ্ছিন্ন করেন ওয়াশিংটন।
খানিক পরে ৮১ রানে ব্যাট করতে থাকা ডি জর্জির উইকেট তুলে নিয়ে ভারতকে এগিয়ে দেন আর্শ্বদীপ সিং। এরপর আর ছন্দ ফিরে পায়নি দলটির ব্যাটাররা – হেনরিখ ক্ল্যাসেন, ডেভিড মিলাররা সেট হয়েও বড় রান করতে পারেননি। ফলতঃ ২০০ রান তোলার আগেই স্বীকৃত ব্যাটারদের হারিয়ে বসে দক্ষিণ আফ্রিকা।
লোয়ার অর্ডার আর কোন প্রতিরোধ গড়তে না পারায় শেষমেশ ২১৮ রানেই গুটিয়ে যায় প্রোটিয়ারা, আর এর মধ্য দিয়ে ৭৮ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হয় দলটি।