ভারতীয় ব্যাটারদের স্পিন খেলার দক্ষতার অবনতি নিয়ে বর্তমানে ক্রিকেট ভক্তকুল দুভাগে বিভক্ত – একদল মনে করেন সুনীল গাভাস্কার ও মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন থেকে শুরু করে নভজ্যোৎ সিং সিধু, শচীন টেন্ডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুলি, রাহুল দ্রাবিড়, ভিভিএস লক্ষ্মণ ও বীরেন্দ্র শেবাগ যুগে ভারত যেভাবে স্পিন বোলারদের উপরে কর্তৃত্ব করত, সেটা বর্তমানে টেকনিকের অবনতির কারণে তলানিতে এসে ঠেকেছে।
বর্তমান দলের কাছে বিশ্বের প্রথম সারির স্পিনারদের ডমিনেট করা তো দূরের কথা, সম্মান বাঁচাতেই অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। ইংল্যান্ডের জো রুটের মতো অনিয়মিত বোলারের ৬ উইকেট হোক বা নিউজিল্যান্ডের আজাজ প্যাটেলের ১০ উইকেট হোক, ও কিফ বা জেসন ক্রেজার ( যদিও সেটা ফ্যাব ফোরের সময়কার) দাদাগিরিও আমাদের মনে আছে, একটু পিছিয়ে গেলে মাইকেল ক্লার্কের ৬ উইকেট ও বিস্মৃত নয়; যদিও আগে যেটা ব্যতিক্রম ছিল ২০১২ তে সোয়ান পানেসারের হাতে বধ হবার পর থেকে ক্রমে সেটা নিয়ম হয়ে দাঁড়ায়।
অন্যপক্ষের মতে, প্রাচীনপন্থীরা শুধু শুধু অতীত আঁকড়ে বাঁচেন, তখন এরকম সাংঘাতিক যাঙ্ক টার্নার পিচ হতোই না এবং পছন্দসই ব্যাটিং উইকেটে ফ্যাব ফোররা যথেচ্ছ রানের ফোয়ারা ছোটাতেন।
দ্বিতীয় দলের মত পুরোপুরি অগ্রাহ্য না করলেও, আজকের ইন্দোর টেস্টের প্রথম দিনে ১০৯ রানে অস্ট্রেলিয়ার তিন স্পিনারের বিরুদ্ধে (যাদের মধ্যে দুজন একেবারেই আনকোরা নতুন) ধরাশায়ী হবার পরে একই পিচে যখন অস্ট্রেলিয়া আট কি নয় উইকেট হাতে রেখে সেই রান প্রায় ছুঁয়ে ফেলে তখন স্পিন খেলার অক্ষমতার অভিযোগ কি একেবারেই ফেলে দেবার মতো?
ভারতের ব্যাটসম্যানরা অস্ট্রেলিয়ার স্পিনারদের ঘরের মাঠে যেভাবে সামলাচ্ছেন, তার থেকে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা বেশি ভালো সামলালেন ভারতীয় স্পিনারদের, এটা কি লজ্জাজনক নয় ? আগে এরকম ঘটনা কোনোদিন ঘটেছে কি? মনে রাখতে হবে ক্লার্ক বা ক্রেজার পারফরম্যান্সের ম্যাচ গুলোতেও কিন্তু ভারত ই জিতেছিল, কেননা ভারতের স্পিনাররা আরো ভালো বল করেছিলেন এবং অস্ট্রেলিয়ান স্পিনাররা উইকেট নিলেও অনেক রানও বিলিয়েছিলেন, যা আজকে দেখা গেল না।
ভারত এখনো ২০০৪ মুম্বাই টেস্টের মতো ফিরে এসে জিততে পারে, কিন্তু ভারতের পিচে টেস্ট ক্রিকেটের মান ও ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের স্পিন খেলার দক্ষতার উপরে বড় প্রশ্নচিহ্ন কিন্তু উঠেই যাচ্ছে!