অন্যায়ভাবে বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে ভারত!

ভারতের অন্যায় সুবিধা প্রাপ্তিতে ক্ষিপ্ত অনেকেই। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে পাকিস্তানে যেতে চায়নি ভারত ক্রিকেট দল।

ভারত অন্যায় সুবিধা পাচ্ছে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। এমন আলোচনা ছড়িয়ে পড়েছে পুরো ক্রিকেট বিশ্বে। ঘরের মাঠে আয়োজিত টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে পাকিস্তানকে ২০০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। অন্য আরেকটা দেশের মাটিতে গিয়ে তাদের লড়তে হয়েছে চিরপ্রতিদ্বন্দী ভারতের বিপক্ষে।

শুধু যে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে এমনটি ঘটছে তাও নয়। সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলেছে নিউজিল্যান্ড। দলটাকে ফাইনালের আগে সবমিলিয়ে মোট আট হাজার কিলোমিটার পথ ভ্রমণ করতে হবে। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ খেলতে তারা যাবে দুবাইতে। আবার সেমিফাইনাল খেলতে তাদেরকে ফিরতে হবে পাকিস্তানে।

ঠিক এখানেই আসলে ভারতের অন্যায় সুবিধা প্রাপ্তিতে ক্ষিপ্ত অনেকেই। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে পাকিস্তানে যেতে চায়নি ভারত ক্রিকেট দল। তা নিয়ে ভীষণ জলঘোলা হয়েছে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে। এরপর এক প্রকার বাধ্য হয়েই ভারতকে নিউট্রাল ভেন্যুতে ম্যাচ খেলার বিশেষ অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু আদোতে সেটি আর তাদের জন্যে নিরপেক্ষ থাকেনি। এক প্রকার ঘরের বাইরে ঘর পেয়ে গেছে তারা। কেননা তাদের নড়তে হচ্ছে না, এক ভেন্যু থেকে আরেক ভেন্যুতে কিংবা এক স্টেডিয়াম থেকে আরেক স্টেডিয়ামে। তারা একই হোটেল থাকছেন, একই মাঠে খেলছেন নিজেদের প্রতিটি ম্যাচ।

এমনকি সেমিফাইনালও তারা খেলবেন সেই মাঠে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ফাইনালও আয়োজিত হবে ভারতকে বরাদ্দ করা নিরপেক্ষ ভেন্যুতে, যদি ভারত ফাইনালে ওঠে। ভারত এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতার অন্যতম দাবিদার, সে বিষয়ে তো সন্দেহ নেই। কিন্তু এই যে একই ভেন্যুতে খেলার বাড়তি সুবিধা, তাদেরকে দল গঠনেও সহয়তা করেছে।

তারা তাদের জাতীয় দলের আশেপাশে থাকা সকল স্পিনারদের নিয়েই স্কোয়াড সাজিয়েছে। আর সেই স্পিনাররা দুবাইয়ের উইকেটে তাদের সফলতাও এনে দিচ্ছে। এমনটিই তো হওয়ার কথা। কেননা দুবাইয়ের উইকেট যে বরাবরই স্পিনারদের সহয়তা করে থাকে।

বাকি থাকা দলগুলো কিন্তু এই সুবিধা পায়নি। তাদের স্কোয়াড সাজাতে হয়েছে দুই ভিন্ন কন্ডিশনের কথা মাথায় রেখে। তাতে করে মনমত দলও গড়তে পারেনি বহুদল। ভারত কিন্তু ঠিকই পেরেছে। তাতে করে তাদের পরিকল্পনার ছক আঁকাও সহজ হয়ে গিয়েছে।

আইসিসি টুর্নামেন্টে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকা প্রয়োজন। এটাও সত্য পাকিস্তান ও ভারতকে ছাড়া কোন টুর্নামেন্ট আয়োজন করা সম্ভব নয়। এমন পরিস্থিতিতে আদর্শ হতো আরব আমিরাতেই পুরো টুর্নামেন্ট আয়োজিত করা। একটা দলের জন্যে বাকি দলগুলোকে বিপাকে ফেলা অনুচিত।

ভারতের এই বাড়তি সুবিধাপ্রাপ্তি অবশ্য নতুন নয়। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ তারা প্রায় জিতেই ফেলেছিল। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে পরাজিত হওয়ার আগে, পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে দাপট দেখিয়েছিল দলটি। সেবার তাদের ঘরের মাঠেই আয়োজিত হয়েছিল ওয়ানডে বিশ্বকাপ।

একটা নির্দিষ্ট দেহস আয়োজক হলেও, উইকেট পরিচর্যা করা হয় আইসিসির তদারকিতে। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেমিফাইনালের আগে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের উইকেটে ঘাস ছিল। সেই ঘাস ছেটে ফেলে, উইকেটকে স্লো বানানোর অভিযোগ রয়েছে আয়োজক ভারতের বিপক্ষে।

যে ফর্মের রয়েছে ভারত, তাতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতার সম্ভাবনা তাদের সবচেয়ে বেশি। জিতে গেলে তাদেরকে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। যত যাই হোক তারা তো বাকিদের তুলনায় বাড়তি সুবিধা পেয়েছেন- সে কথা অস্বীকার করবার তো উপায় নেই।

লেখক পরিচিতি

রাকিব হোসেন রুম্মান

কর্পোরেট কেরানি না হয়ে, সৃষ্টি সুখের উল্লাসে ভাসতে চেয়েছিলাম..

Share via
Copy link