সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাবেক ক্রিকেটারদের নিয়ে ভারতে আগামী ৫ মার্চ থেকে মাঠে গড়াবে রোড সেফটি ওয়ার্ল্ড সিরিজ টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচেই পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। শীর্ষ স্থান ধরে রাখতে বাংলাদেশের বিপক্ষে তারকা সমৃদ্ধ একাদশ মাঠে নামানোর পূর্বাভাস দিয়েছেন স্বাগতিকরা।
ভারতের রায়পুরের বিশিষ্ট শহীদ বীর নারায়ন সিং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গত বছরের মার্চে শুরু হয়েছিলো রোড সেফটি ওয়ার্ল্ড সিরিজ। কিন্তু মাত্র ৪ টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর করোনা বিপর্যয়ের কারণে স্থগিত হয় যায় টুর্নামেন্টটি। এক বছর বিরতি দিয়ে আবারো শুরু হচ্ছে টুর্নামেন্টের বাকি অংশ।
টুর্নামেন্ট স্থগিত হওয়ার আগে দুটি ম্যাচ খেলেছিলো ভারত লিজেন্ডস। শচীন টেন্ডুলকারের নেতৃত্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজ লিজেন্ডস ও শ্রীলঙ্কা লিজেন্ডসের বিপক্ষে দুটি ম্যাচেই জয় পেয়েছিলো ভারত লিজেন্ডস। তবে জয় পেলেও সেই দুই ম্যাচের একাদশে একাধিক পরিবর্তন আনবে স্বাগতিকরা। সম্প্রতি সব ধরণের ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে স্কোয়াডে যুক্ত হয়েছেন ইউসুফ পাঠান ও নামান ওঁঝা। এই দুজনের একাদশে জায়গা পাওয়া প্রায় নিশ্চিতই বলা চলে।
ভারতীয় কিছু গণমাধ্যম একাদশের ব্যাপারে একটা আভাস দিয়েছে। ভারত লিজেন্ডসের হয়ে ইনিংস উদ্বোধন করতে নামবেন শচীন টেন্ডুলকার ও বীরেন্দ্র শেবাগ। নিজেদের সময়ে তাঁরা সেরা তো ছিলেনই, ক্রিকেটের ইতিহাসেও এই জুটি অন্যতম সেরা।
রোড সেফটি ওয়ার্ল্ড সিরিজের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ লিজেন্ডসের বিপক্ষে ৮৩ রানের জুটি গড়েছিলেন তাঁরা। এছাড়া বাংলাদেশের জন্য সব সময়ই ভয়ংকর ছিলেন এই দু’জন। ২০১১ সালে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৭৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছিলেন শেবাগ। আর শচীন টেন্ডুলকার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শততম সেঞ্চুরি করা ছাড়াও টেস্ট ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংসটি খেলেছিলেন বাংলাদেশের বিপক্ষেই।
ভারত লিজেন্ডসের মিডল অর্ডার সামলাবেন যুবরাজ সিং, মোহাম্মদ কাইফ ও নামান ওঁঝা। দলের তিন নাম্বার পজিশনে ব্যাট করতে দেখা যাবে কাইফকে। কাইফের পরে ব্যাট হাতে নামবেন অলরাউন্ডার যুবরাজ সিং। রোড সেফটি ওয়ার্ল্ড সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে যুবরাজের ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ১১ রান। উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান নমন ওঝা সম্প্রতি সব ধরণের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। দলের পাঁচ নাম্বার পজিশনে ব্যাট করার পাশাপাশি উইকেটের পিছনেও থাকবেন তিনি।
সম্প্রতি সব ধরণের ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া ইউসুফ পাঠানের সাথে লোয়ার মিডল অর্ডারে দেখা যাবে ইরফান পাঠান ও মানপ্রিত গনিকে। তবে ডানহাতি পেসার মনপ্রীত গনির আগে ব্যাট করতে দেখা যাবে পাঠান ভাইদের। বড় ভাইয়ের মত ছোট ভাই ইরফানেরও ব্যাটিংয়ের হাত বেশ ভাল।
রোড সেফটি ওয়ার্ল্ড সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চার নাম্বারে ব্যাট করতে নেমে শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন গনি। তবে, গনির মূল পরিচয় হল – তিনি ফাস্ট বোলার। আইপিএল ছাড়াও একসময় খেলেছে ভারতীয় জাতীয় দলে।
ভারত লিজেন্ডসের বোলিং আক্রমণটা বেশ সমৃদ্ধ। একাদশের শেষ তিনজন হলেন – জহির খান, মুনাফ প্যাটেল ও প্রজ্ঞান ওঁঝা।
রোহিঙ্গা সুরক্ষা ওয়ার্ল্ড সিরিজ- ২০২০ এর দুটি ম্যাচে তিন উইকেট শিকার করেছিলেন জহির খান। বোলিংয়ে তিনিই এই দলের বড় ভরসা। সাফল্য পেতে ফর্মে থাকা জহির খানের দিকে তাকিয়ে থাকবে ভারত লিজেন্ডস। পেস বোলিংয়ে তাঁর সাথে থাকছেন মুনাফ, মানপ্রিত ও ইরফানরা। যুবরাজ সিং ও ইউসুফ পাঠানকে সাথে নিয়ে ভারতের স্পিন আক্রমণের নেতৃত্ব দিবেন প্রজ্ঞান ওঁঝা।
- বাংলাদেশ লিজেন্ডস স্কোয়াড
খালেদ মাহমুদ সুজন, নাফিস ইকবাল, মোহাম্মদ রফিক, আব্দুর রাজ্জাক, খালেদ মাসুদ পাইলট, হান্নান সরকার, জাভেদ ওমর, রাজিন সালেহ, মেহরাব হোসেন অপি, আফতাব আহমেদ, আলমগীর কবির, মোহাম্মদ শরিফ, মুশফিকুর রহমান বাবু, মামুনুর রশিদ।
- ভারত লিজেন্ডস স্কোয়াড
শচীন টেন্ডুলকার, বীরেন্দ্র শেবাগ, যুবরাজ সিং, মোহাম্মদ কাইফ, প্রজ্ঞান ওঁঝা, নোয়েল ডেভিড, মুনাফ প্যাটেল, ইরফান পাঠান, মানপ্রিত গনি, ইউসুফ পাঠান, নামান ওঁঝা, সুব্রামিনিয়াম বাদ্রিনাথ ও বিনয় কুমার।