৩৬ এখন কাঁপিয়ে দিচ্ছে পুরো ভারতকে।
দল নির্বাচন, করনীয়, সবকিছু নিয়ে পাওয়া যাচ্ছে পরামর্শ। সাবেক ক্রিকেটাররা বলে দিচ্ছেন, কী করতে হবে। সবমিলিয়ে একটা এলোমেলো অবস্থা।
অ্যাডিলেড থেকে মেলবোর্ন যাবার আগে নির্বাচক, টিম ম্যানেজমেন্ট সবার কপালেই চিন্তার ভাঁজ। অ্যাডিলেড লজ্জার পর মেলবোর্ন টেস্ট খেলার আগে ফিরে গেছেন অধিনায়ক কোহলি। ইনজুরিতে ছিটকে গেছেন মোহাম্মদ শামি। তাহলে ঠিক কেমন হবে ভারতের একাদশ? একাদশে পাঁচজনের জায়গা নিশ্চিত ধরা যায়- অধিনায়ক আজিঙ্কা রাহানে, চেতেশ্বর পূজারা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, জাসপ্রিত বুমরাহ আর উমেশ যাদব! কিন্তু বাকিরা?
- ওপেনার
পৃথ্বী শর ব্যাপারটা একটু অদ্ভুত। তাঁকে নিয়ে প্রশংসার শেষ নেই। অনেকেই তার মধ্যে শচীন টেন্ডুলকারের ছায়া দেখেছেন। কিন্তু অ্যাডিলেডে দুই ইনিংসেই কুৎসিতভাবে আউট হয়েছেন তিনি। ব্যাট-প্যাডের মাঝে বড় ফাঁক দেখা গেছে। খোদ সুনীল গাভাস্কার বলেছেন, তাঁর টেকনিকে সমস্যা আছে। ফলে তিনি বাদ পড়াটা অনেকটাই স্বাভাবিক।
আবার পৃথ্বী শ ‘পাবলিক ডিমান্ড’। তাঁকে নিয়ে ভারতীয়দের একটা উচ্ছাস আছে। সেই জনপ্রিয়তার কথা বিবেচনায় নিলে খুব সম্ভবত তিনি টিকে যাবেন। তবে তাঁর মানে মায়াঙ্ক আগারওয়ালের বাদ পড়াও নিশ্চিত নয়। পৃথ্বী-মায়াঙ্ক জুটি এই সিরিজের আগে নিউজিল্যান্ডের সাথে ওপেনিংয়ে নেমে ভাল করেছে, হাফ সেঞ্চুরি করেছে। তবে ভারতীয় দলে রিজার্ভ ওপেনার হিসেবে শুভমান গিল আর কেএল রাহুলের কথাটাও মাথায় রাখতে হবে। শুভমান গিল তো শেষ ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচে পাঞ্জাবের হয়ে ৪৩ আর ৬৫ রানের ইনিংসও খেলেছেন। আর রাহুল কি করতে পারেন সেটা তো আমরা সবাই জানি!
- কোহলির বদলি
অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করবেন আজিঙ্কা রাহানে। তবে, ব্যাটসম্যান কোহলির না থাকা চার নম্বর পজিশনটাতে একটা শূন্যতা এনে দিয়েছে। খুব সম্ভবত হনুমা বিহারীকে উপরে এনে চার নম্বরে খেলানো হতে পারে, সাথে রাহানে পাঁচ নম্বরে থাকছেনই।
তবে, কোহলির জায়গাতে গিলকেও বিবেচনায় নিতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট। আবার কোহলি যেহেতু থাকছেনা, টিম ম্যানেজমেন্ট অতিরিক্ত বোলার নিয়েও খেলতে পারে। রবীন্দ্র জাদেজাকে তাই ছয়ে নেমে পড়তে দেখলে অবাক হবেন না।
- উইকেটরক্ষক
এশিয়ার বাইরে লম্বা সময় ধরে রিশাভ পান্থকেই দেখা গেছে উইকেটের পেছনে। তবে অ্যাডিলেডে ছিল ভিন্নতা। গ্লাভস জোড়া ছিল ঋদ্ধিমান সাহার হাতে। তবে সাহার সুযোগ খুব সম্ভবত শেষ হতে যাচ্ছে, মার্নাস লাবুশানেকে জীবন পাইয়ে দিয়ে তিনি পান্থকে একটা দরজা খুলে দিলেন বলে আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে। তাই, বাদ পড়া রিশাভ এই মেলবর্নেই আবার ফিরে এলে অবাক হবার কিছু থাকবেনা।
- শামির বদলি
অ্যাডিলেডে ইনজুরির পর মেলবোর্নে একাদশে থাকবেন না শামি। যদিও এখনও তার বদলি হিসেবে কারো নাম ঘোষণা করেনি বিসিসিআই, তবে একাদশ নির্বাচনের তোড়জোড় তো শুরু হয়েই গেছে। তোড়জোড়ে শামির বদলে দলে ঢুকে যেতে পারে তিনটি নামের যেকোনটি- টি নাটারাজন, কার্তিক ত্যাগী, শার্দুল ঠাকুর। তবে এই তিনজনের কারোরই একাদশে থাকার সম্ভাবনা খুব কম।
একাদশে ঢোকার লড়াইটা খুব সম্ভবত হবে মোহাম্মদ সিরাজ আর নভদ্বীপ সাইনির মধ্যে। তবে পিচ যদি কিছুটা স্পিন সহায়ক হয়, জাদেজাও খেলতে পারেন শামির জায়গাতে, সে সম্ভাবনা অবশ্য মিরাকল বলাই চলে।
- গিল-রাহুল
কোহলির বদলে সম্ভবত রাহুল ঢুকে পড়বেন; ব্যাটিং পজিশন এদিক ওদিক হতে পারে। তবে শুভমান গিল এখনই সুযোগ পাচ্ছেন কি না, সেটা বলা কঠিন। গিল ও রাহুল দু জনকেই জায়গা দিতে হলে একজন ওপেনারকে বাদ পড়তে হবে। সেটা পৃথ্বী শ হলে ব্যাপারটা একরকম হবে। তবে আগারওয়ালের বাদ পড়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
গিল ও রাহুলকে যেভাবেই হোক একাদশে অনেকেই দেখতে চাইছেন। দু জনই দারুন ফর্মে আছেন। রাহুল সব ফরম্যাটেই এখন ভারতের সেরাদের একজন। তাকে বসিয়ে রাখাটা মানতে পারছেন না সমর্থকরা। সাবেক ক্রিকেটার ওয়াসিম জাফর ‘গুপ্ত সংকেট’ দিয়ে টুইট করে বলেছেন গিল ও রাহুলকে দলে নেওয়ার জন্য।
আসলে, ভারতের একাদশ অনুমান করাটা সবসময়ই কঠিন। তবে একাদশ নির্বাচনে ভারতকে মনে রাখতে হবে, টেস্ট ক্রিকেটে ডিফেন্সিভ স্ট্রাটেজীর কোন জায়গা কিন্তু নেই!