কিছুদিন আগেও মাদ্রিদ শহরে রিয়াল মাদ্রিদ ক্লাবটি ছিল শক্তিশালী, প্রতিরোধী এবং অপরাজেয়। কিন্তু এই মৌসুমে যেন অজানা অভিশাপ তাদের পিছু নিয়েছে। মৌসুম ঠিক মতো শুরু হতেই একে একে তারকারা চোটে পড়তে শুরু করলো, যা দেখে সমর্থকরা এবং কোচ হতবাক হয়ে গেলেন। যেন দলটির উপর কালো মেঘ ঘনিয়ে আসছিল।
শুরুটা হয়েছিল মিলিতাওকে দিয়ে, যিনি প্রথম চোট কাটিয়ে উঠতেই আবারও চোটে পড়েন এবং শেষ ম্যাচে তিনি আবারো পুরো মৌসুমের জন্য ইনজুরিতে পড়েন। নতুন তারকা জুড বেলিংহ্যাম, যিনি মাঠে দুর্দান্ত খেলছিলেন, তিনিও চোটে পড়লেন। তরুণ তারকা কামাভিঙ্গা এরপর তালিকায় যোগ দিলেন, আর চুয়ামেনি তো দু’বারই চোটের কবলে পড়েন।
দলের প্রতিরক্ষায় থাকা ফারল্যান্ড মেন্ডি, আলাবা, আর ভালেয়োও চোটে জর্জরিত হয়ে পড়েন। এমনকি বহু যুদ্ধের অভিজ্ঞ দানি কার্ভাহালও এই মৌসুমের আঘাতের হাত থেকে রক্ষা পাননি। ব্রাজিলের প্রিয় দুই তারকা ভিনিসিয়াস জুনিয়র এবং রদ্রিগোও চোটের শিকার হন, যেখানে রদ্রিগো তো পিঠের ব্যথা নিয়েও মাঠে ছিলেন। অবশেষে রদ্রিগো পেশীর চোটের কারনে আবারো ছিটকে পড়লেন দল থেকে।
এদিকে তরুণ প্রতিভা ব্রাহিম দিয়াজ, অভিজ্ঞ সেবাইয়োস, এবং রামনও চোটে জর্জরিত হয়ে পড়েন। সব চেয়ে দু:খজনক হলো, দলের অমূল্য রক্ষক কোর্তোয়া একবার নয়, দুইবার চোটে পড়েন, যা গোলবারে এক বিশাল শূন্যস্থান তৈরি করে। যদিও লুনিন সেই শূন্যস্থান পূরণের আপ্রাণ চেষ্টাই চালাচ্ছেন।
তালিকাটি যেন শেষ হতে চাইছিল না, কারণ অনেক সমর্থকের স্বপ্নের তারকা এমবাপ্পেও চোটে পড়েন। মনে হচ্ছিলো যেন মাদ্রিদ তার সমস্ত শক্তি এবং জাদু আগের মৌসুমগুলোতে ব্যয় করেছে, আর এই মৌসুমে যেন অভিশাপ তাদের পিছু ছাড়ছে না।
রিয়াল মাদ্রিদের এই চোটে ভরা মৌসুম মাদ্রিস্তাদের অনেক ভোগাচ্ছে। মাদ্রিদের ইতিহাসে তাঁরা টানা তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হেরেছে এমন ঘটনা বিরল তার মধ্যে দু’টি ম্যাচ ছিল তাদের ঘরের মাঠ বার্নাব্যুতে।
মাদ্রিদের এমন সমস্যা তাদের অনেক ভোগাচ্ছে। ডিফেন্স লাইনকে খুবই ভঙ্গুর অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। কার্ভাহাল পুরো মৌসুমের জন্য বাহিরে থাকার কারণে লুকাস ভাসকুয়েজকে খেলতে হয়েছে রাইট ব্যাক পজিশনে। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস লুকাস ভাস্কেসও শেষ ম্যাচে ৩ সপ্তাহের জন্য দল থেকে ছিটকে পরেন। ফলে মাদ্রিদের ডান দিকের ডিফেন্স অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে।
মিডফিল্ডের কথা তো না বললেই নয়। মিডফিল্ড থেকে তারা প্রগ্রেসিভ পাস তৈরি করার সুযোগই পাচ্ছে না। যার ফলে মাদ্রিদের ফরোয়ার্ডরা তেমন আশানুরূপ সাফল্য পাচ্ছে না।