নি:সন্দেহে এই বিশ্বকাপে নেপালের জন্য জাদুর চেরাগ হতে পারেন সন্দীপ লামিছানে। এই লেগ স্পিনারের প্রতিটি বলের ঘূর্ণিতে ধ্বসে পড়তে পারে বিশ্বের নামিদামী সব ব্যাটারে উইকেট। তবে সদ্য ধর্ষণ মামলা থেকে খালাস পাওয়া লামিছানেকে ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব নেপাল (সিএএন) দিবে কি সেই সুযোগ?
নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে নিজের ক্যারিয়ারের অপ্রত্যাশিত সমাপ্তি টানতে হয়েছে, এমন খেলোয়াড়ের সংখ্যা নেহাতই কম নয়। ক্রিকেট, ফুটবল কিংবা অন্য কোনো খেলায়, সবখানেই এমন ঘটনা অহরহ। হিমালয়ের দেশ নেপালের সম্ভাবনাময় ক্রিকেটার সন্দীপ লামিচানের ঘটনাও এর ব্যতিক্রম নয়।
২০২২ সালে এক ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত হন নেপালের পোস্টার বয় সন্দীপ লামিছানে। গত জানুয়ারিতে ধর্ষণের ওই মামলায় লামিচানেকে কাঠমুন্ডু জেলা আদালত আট বছরের কারদণ্ডের রায় দিয়েছিল। ২৩ বছর বয়সী এই মামলায় আদালতের চূড়ান্ত রায় না হওয়া পর্যন্ত দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। সেই সাথে তাঁকে গুনতে হয় বিশাল অঙ্কের জরিমানা।
গত ফেব্রুয়ারীতে নেপালের বিপক্ষে ৩ উইকেটে হারে পর স্কটল্যান্ডের খেলোয়াড়েরা লামিছানের সাথে করমর্দন করতে অসম্মতি জানায়। সেই ঘটনাকে নীরব প্রতিবাদ হিসেবেই দেখে ক্রিকেট বিশ্ব। রায়ের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানান তিনি। লামিছানে সম্প্রতি সেই মামলা থেকে মুক্ত হন।
গত বুধবার নেপালের উচ্চ আদালত তাঁকে সেই মামলা থেকে খালাসের রায় দেন। নেপাল উচ্চ আদালতের মুখপাত্র এবং রেজিস্ট্রার বিমল পারাজুলি বলেন, ‘জেলা আদালতের রায় বাতিল করেছে নেপালের উচ্চ আদালত।’ এই বিষয়ে লামিছানের উকিল সাবিতা ভাদরী বড়াল বলেন, ‘তিনি (লামিছানে) এখন মুক্ত। উচ্চ আদালত তাঁর খালাসের রায় ঘোষণা করেছে।’
আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ঘোষিত নেপালের স্কোয়াডে ছিল না লামিছানের নাম। তবে, আগামী ২৪ মে পর্যন্ত যে কোন দেশ তাঁদের স্কোয়াডের পরিবর্তন আনতে পারবে। আদালতের এই রায়ের মধ্য দিয়ে লামিছানের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পথটা আরো সুগম হল।
তবে, নেপাল কি সেই সুবর্ণ সুযোগ লুফে নিবে কি না সেই প্রশ্ন রয়েই যায়। সন্দীপ লামিছানের এই ঘটনার সাথে বাংলাদেশের রুবেল হোসেনের নারী কেলেঙ্কারীতে জড়ানোর ঘটনার রয়েছে বেশ সাদৃশ্য।
তবে, রুবেল হোসেন সেই সব বাঁধা টপকে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে দেখিয়েছিলেন অসাধারণ সব পারফর্ম্যান্স। সেই বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের নায়কই বনে গিয়েছিলেন রুবেল হোসেন। এখন দেখার বিষয় নেপালের ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তারাও লামিছানেকে সেই সুযোগ করে দেয় কিনা।
দেশটির ক্রিকেট উত্থানের পিছনে ২৩ বছর বয়সী এই লেগ স্পিনারের বিশাল অবদান রয়েছে বলে মনে করা হয়। কেননা, তিনিই একমাত্র নেপালি ক্রিকেটার যিনি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) খেলেছেন।
তাছাড়া এই লেগ স্পিনার মাতিয়েছেন পাকিস্তান সুপার লিগ আর অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশের মত সব বড় বড় টুর্নামেন্ট। তাই তো আসন্ন বিশ্বকাপে সন্দীপ লামিছানে হতে পারেন নেপালের তুরুপের তাস।