লজ্জার রেকর্ড থেকে ম্যাচ জয়ের নায়ক

সবমিলিয়ে সাত ওভার হাত ঘুরিয়েছেন এই ডানহাতি, খরচ করেছেন মাত্র ২৪ রান। উইকেটের পাশাপাশি তাঁর ইকোনমিও ঈর্ষা জাগানোর মতন। স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচের সেরা পারফরমার বলা উচিত তাঁকে। বড় মঞ্চে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেয়ার গুণটাই বোধহয় একজন ক্রিকেটারের সবচেয়ে আরাধ্য ব্যাপার।

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে লজ্জার একটা রেকর্ড গড়েছিলেন ইকবাল হোসেন ইমন, নয় ওভারে ১০৪ রান খরচ করেন তিনি। লিস্ট এ ক্রিকেটে বাংলাদেশের ইতিহাসে এটিই সর্বোচ্চ রান খরচের রেকর্ড – একেবারে অল্প বয়সে এমন দুঃস্বপ্ন দেখতে হবে সেটা বোধহয় তিনি নিজেও ভাবেননি, কিন্তু নিষ্ঠুর বাস্তবতা ঠিকই আঘাত হেনেছিল তাঁর ওপর। এরপর তিনি আদৌ ঘুরে দাঁড়াতে পারেন কি না সেটাই ছিল আগ্রহের কেন্দ্রে।

তবে এই তরুণ ঘুরে দাঁড়িয়েছেন, সত্যিই ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে তিনিই হয়ে উঠেছেন দলের জয়ের নায়ক, একাই চার উইকেট তুলে নিয়ে প্রতিপক্ষকে পুরোপুরি ধসিয়ে দিয়েছেন। মিডল অর্ডার ব্যাটাররা তাঁর বিরুদ্ধে আসলে কোন জবাবই দিতে পারেনি।

দলের চতুর্থ বোলার হিসেবে আক্রমণে এসেছিলেন এই পেসার, এরপর থেকে তিনি কেবল ঝড় তুলেছেন বাইশ গজে। শুরুটা সেট ব্যাটার সাদ বেগকে দিয়ে; খানিক পরেই আরেক সেট ব্যাটার রিয়াজ উল্লাহকে প্যাভিলিয়নের পথ চেনান তিনি।

ক্ষণিকের বিরতিতে দুই ব্যাটারকে হারিয়ে ততক্ষণে বিপর্যয়ের মুখোমুখি পাকিস্তান, সেই বিপর্যয় আরো ঘনীভূত হয় ইমনের তান্ডবেই। ডেথ ওভারে টেলএন্ডারদের কোন প্রতিরোধ গড়তে দেননি তিনি।

সবমিলিয়ে সাত ওভার হাত ঘুরিয়েছেন এই ডানহাতি, খরচ করেছেন মাত্র ২৪ রান। উইকেটের পাশাপাশি তাঁর ইকোনমিও ঈর্ষা জাগানোর মতন। স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচের সেরা পারফরমার বলা উচিত তাঁকে। বড় মঞ্চে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেয়ার গুণটাই বোধহয় একজন ক্রিকেটারের সবচেয়ে আরাধ্য ব্যাপার।

গত যুব বিশ্বকাপে ভাল সময় কাটিয়েছিলেন ইকবাল হোসেন ইমন, মারুফ মৃধা, রোহানাত দৌলা বর্ষণের মত খ্যাতি না পেলেও নিজের কাজটা ঠিকঠাক করেছিলেন। স্বপ্নের ডালপালা তাই বড় হয়েছিল, ডিপিএলে সেই স্বপ্ন ধাক্কা খেলেও এখন আবার ডালপালা মেলেছে আকাশে। আপাতত কেবল উড়ার পালা।

Share via
Copy link