এক মৌসুমে কখনও ১৪-এর বেশি গোল না করা ব্রাজিলিয়ান তারকা গ্যাব্রিয়েল জেসুসের ওপর ভরসা করছে আর্সেনাল। নিজেকে তিনি আর্সেনাল এর জার্সিতে নিয়ে যাবেন এলিট অ্যাটাকারদের কাতারে এটাই তাঁদের বিশ্বাস।
২১-২২ মৌসুমের জানুয়ারি ট্রান্সফার উইন্ডোতে অবামিয়াংকে হারানোর পর এবং এই গ্রীস্মের ট্রান্সফার উইন্ডোতে লাকাজেট কে হারানোর পর মিকেল আর্তেতা তার দলের জন্য একজন স্ট্রাইকার কে খুজছিলেন। গত বেশ কিছু ট্রান্সফার উইন্ডোতে গানার্সরা মিডফিল্ড এবং ডিফেন্সকে শক্তিশালী করার দিকে মনোযোগী ছিল, তাই একজন নাম্বার নাইন কে যে তারা সাইন করাবে তা ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র।
ম্যানচেষ্টার সিটিতে সহকারী কোচ থাকার সুবাদে জেসুসকে মিকেল আর্তেতা আগে থেকেই চিনেন। তিনি জানেন যে তার যে ধরনের অ্যাটাকার দরকার জেসুস ঠিক তাই। আর এই কারণেই অন্য সকল ‘টার্গেট’কে বাদ দিয়ে আর্সেনাল এই ব্রাজিলিয়ান কে তাদের এক নম্বর ‘ট্রান্সফার টার্গেট’ বানায়।
কিছুদিন আগে ৫৫ মিলিওন ইউরোতে সিটি থেকে আর্সেনালে যোগ দেন জেসুস ,তাকে পেয়ে আর্তেতা উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, ‘তার মাপের একজন খেলোয়াড়কে দলে আনতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত, আমরা অনেকদিন থেকেই এই পজিশনে এমন একজন খেলোয়াড়কে সাইন করাতে চাইছিলাম। তিনি আরও বলেন তাকে আমি সিটিতে থাকাকালীন সময় থেকে চিনি, সে প্রিমিয়ার লিগের একজন সফল খেলোয়াড়। তাঁর এই চ্যাম্পিয়নক মানসিকতা সে আর্সেনাল এ নিয়ে আসবে বলে তার বিশ্বাস।’
আর্সেনালের রিক্রটমেন্ট স্টাফের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা ,টেকনিকাল ডিরেক্টর এডু এবং আর্তেতা যখন তাঁদের আক্রমণ বিষয়ক পরিকল্পনায় বসেন তখন তাদের একটাই লক্ষ্য ছিল এমন কাউকে দলে আনা যে এই তরুণ আর্সেনাল দলের খেলার ধরণের সাথে সহজেই মানিয়ে নিতে পারবে। সে হবে এমন কেঋ যে গোল ও করবে এবং ডিফেন্সের প্রথম লাইন হিসেবে প্রেস করবে।
তবে জেসুসের আর্সেনালের ‘মেইন ম্যান’ হওয়া নিয়ে বেশ অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছে। ২০১৯- ২০ মৌসুমে তিনি মোটে ১৪ গোল করেন। যদিও এক মৌসুমে করা এটাই তাঁর সবচেয়ে বেশি গোল। সিটির মত দল যারা প্রচুর গোল করে তাদের একজন ফ্রন্টম্যান হিসেবে গোলের সংখ্যাটা অনেক কম।
তবে এটাও হিসেবের মধ্যে ধরতে হবে যে জেসুস কখনও সিটির মূল স্ট্রাইকার হিসেবে দলে নিয়মিত ছিলেন না। তিনি মূলত সার্জিও অ্যাগুয়েরোর সাব হিসেবে খেলতেন আর এই আর্জেন্টাইনের যাওয়ার পরও তিনি কখনও দলের মূল স্ট্রাইকার হিসেবে নিয়মিত হতে পারেননি। তবে তিনি যখনই সুযোগ পেয়েছেন ভাল পারফর্ম করেছেন।
২০১৭ সালে সিটিতে যোগ দেওয়ার পর এই ব্রাজিলিয়ান ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ৫৮ গোল ও ২৯ টি অ্যাসিস্ট করেন। প্রতি ১০৭ মিনিটে একটি গোলে অবদান, ১৯৯২ সালে ইপিএলের যাত্রা শুরুর পর আর মাত্র ছয় জনের এর চেয়ে ভাল রেকর্ড আছে। প্রথম একাদশে ৯৯ বার তিনি সুযোগ পেয়েছেন আর এতে গোল পেয়েছেন ৫৩ টি এবং অ্যাসিস্ট ২৩ টি।
জেসুস অ্যাটাকিংয়ে একাধিক পজিশনে খেলতে পারলেও মূলত নিজেকে একজন নাম্বার নাইন হিসেবেই দেখেন তিনি। তিনি বলেন আর্সেনাল এ তিনি তার ওয়ার্ক রেট ও অ্যাসিস্ত দিয়ে শুধু সাহায্য করতে চান না তিনি গোল করতে চান এবং নিজেকে একজন নাম্বার নাইন হিসেবে প্রথিস্তিত করতে চান।
৪-৩-৩ ফরমেশনে জেসুসকে সেন্ত্রাল ফরওয়ার্ড হিসেবে দেখা যাবে যেখানে তিনি এডি এনখকেতিয়ার সাথে পজিশন শেয়ার করবেন। এই মৌসুম এই নতুন চুক্তি তে সই করে এনখকেতিয়া আর্সেনাল এই থেকে যান এবং তিনি বেশ ভাল খেলার সময় পাবেন তা ধারণা করা হয়, তবে জেসুস যে আক্রমণের প্রধান হবেন তাতে কোন সন্দেহ নেই।
গত মৌসুম এ পেপ গার্দিওলা জেসুসের অফ দ্য বল মুভমেন্ট এবং তাঁর ওয়ার্ক রেট নিয়ে বেশ প্রসংশা করেন আর আর্ততা এমন একজন নাম্বার নাইনকে দলে নিতে চাইছিলেন যে আর্সেনাল কে আরো শক্তিশালী করে তুলবে এবং তিন বছর ধরে তিনি যেই সিস্টেমে দলকে খেলাচ্ছেন তাকে পূর্ণতা দান করবে।