সেইন্ট উইলিয়ামসন ইজ ব্যাক!

চেন্নাইয়ের দর্শকরা তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিল করতালিতেই। গত জানুয়ারির পর প্রথমবারের মতো ওয়ানডে খেলতে নেমেই যে কিউই কাপ্তান কেইন উইলিয়ামসন পেয়েছেন ফিফটির দেখা। সোনায় মোড়ানো প্রত্যাবর্তন যাকে বলে। এম চিদাম্বারাম স্টেডিয়ামের গ্যালারিও তাই থেমে থাকেনি। উইলিয়ামসনের ফেরার উৎসবের রঙ ছড়িয়ে গিয়েছিল পুরো স্টেডিয়ামে।

চোটের কারণে দীর্ঘ দিন বাইরে থাকা উইলিয়ামসনের জন্য ব্যাটিংটা সমস্যা ছিল না বেশ কিছুদিন আগে থেকেই। মূলত ফিল্ডিং আর পুরো ম্যাচ ফিটনেসের পরীক্ষাতেই তিনি উতরাতে পারছিলেন না। এ কারণে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার পরেও বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচে খেলেননি তিনি।

তবে টুর্নামেন্টে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে এসেই শুরুতে অধিনায়ক হিসেবে মাঠে ফিরলেন। এরপর ফিরলেন ব্যাটার হিসেবে। দুটোতেই রাঙিয়েছেন তিনি। দল জিতেছে, ব্যাট হাতে নামের পাশে যোগ করেছেন একটা ফিফটিও।

রাচিন রবীন্দ্রকে শুরুতেই হারিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। ব্যাটার হিসেবে কেন উইলিয়ামসনের আগমনে তাই তেমন বিলম্ব ঘটেনি। তবে বহুদিন বাদে এসেই যেন কিছুটা অস্বস্তিতে পড়লেন। শরীফুলের এক ওভারেই দু’বার পরাস্ত হলেন। বাংলাদেশ শিবির থেকে উঠেছিল জোরালো আবেদনের সুর। তবে কেন উইলিয়ামসন শেষ পর্যন্ত আউট হননি।

আর সেখান থেকেই অনুপ্রেরণা নিয়ে এরপর সাবলীল গতিতে ব্যাট চালিয়েছেন কিউই এ অধিনায়ক। সাকিব থেকে শুরু করে মিরাজ কিংবা তাসকিন-মুস্তাফিজ-শরিফুল পেসত্রয়ীর কাউকেই ছাড় দেননি। শান্তচিত্তে নিজের দাপুটে ব্যাটিং প্রদর্শনী দেখিয়েছেন পুরো ইনিংস জুড়েই। আর তাতেই শুরুতে উইকেট তুলে নেওয়ার সাকিব, মিরাজদের রণকৌশল ছত্রখান করে দেয় কনওয়ে-কেইন উইলিয়ামসন জুটি।

দলীয় ৯২ রানে যদিও ডেভন কনওয়ে ফিরে গিয়েছিলেন, তবে কেন উইলিয়ামসনকে টলাতে পারেনি কেউ। এরপর ড্যারিল মিশেলকে নিয়ে ছুটেছে জয়ের পথে। তবে জয়ের পথে হেঁটে শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা শেষ করে আসতে পারেননি উইলিয়ামসন। সেঞ্চুরির পথে হেঁটেও ৭৮ রানে ফিরে যান তিনি। কিন্তু এ যাত্রায় আউট হয়ে মাঠ ছাড়েননি উইলিয়ামসন। তিনি মাঠ ছেড়েছিলেন রিটায়ার্ড হার্ট হিসেবে।

মূলত ম্যাচ চলাকালীন নাজমুল হোসেন শান্ত একটা থ্রো করেছিলেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ককে রানআউটের চক্রে ফেলতে। কিন্তু সেটি স্ট্যাম্পে না লেগে সরাসরি গিয়ে লাগে কেনের বাঁ হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলিতে। এরপর ফিজিওর দ্বারস্থ হতে হয় তাঁকে। তবে তেমন গুরুতর মনে না হওয়ার গ্লাভস পরে আবার প্রস্তুত হতে শুরু করেন তিনি।

তবে একটা সময় আঙুলের অস্বস্তিটা বাড়তে থাকে তাঁর। শেষ পর্যন্ত ১০৭ বলে ৭৮ রান করে থামতে হয় তাঁকে। তাতে অবশ্য কেন উইলিয়ামসনের তিন অঙ্কের ম্যাজিক্যাল ফিগারে পৌছানো হয়নি। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনটা দারুণভাবে রাঙালেন তিনি।

এটা নিশ্চয়ই আরো বেশি স্বস্তির। তবে দিন চারেক বাদেই কিউদের সামনে অপেক্ষা করছে আফগান পরীক্ষা। এখন শেষ দিকের আঙুলের এই ইনজুরি কেইনকে আবারো মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দিল কিনা, সেটিই এখন ভাবনার বিষয়।

অবশ্য কেইন উইলিয়ামসন ফেরার কৌশলটা জানেন। টানা দুইবার বিশ্বকাপের মঞ্চে রানার্সআপ হওয়ার তিক্ততার স্বাদও তাঁর রয়েছে। এবার নিশ্চয়ই সে সব আক্ষেপে পুড়তে চান না এ কিউই অধিনায়ক। তিন বারে চেষ্টাই বিশ্বজয়ের স্বপ্নেই নিশ্চয় বিভোর থাকবেন তিনি।

 

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link