কেডিবি কাব্য লিখবেন, অন্য কোথাও!

ম্যানচেস্টার সিটি তাঁর ওপর এমন একটা সময় ভরসা রেখেছিল, যখন তাঁর পাশে কেউ ছিল না। না ছিল পরিবার, না ছিল প্রিয়তমা স্ত্রী। না সাবেক ক্লাব চেলসি। সেখান থেকে তিনি বনে যান ম্যানচেস্টার ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়। যতদিন খেলেছেন, ততদিন অ্যাটাকিং মিডফিল্ড পজিশন নিয়ে সিটিজেনদের দ্বিতীয়বার ভাবতে হয়নি।

ম্যানচেস্টার সিটি তাঁর ওপর এমন একটা সময় ভরসা রেখেছিল, যখন তাঁর পাশে কেউ ছিল না। না ছিল পরিবার, না ছিল প্রিয়তমা স্ত্রী। না সাবেক ক্লাব চেলসি। সেখান থেকে তিনি বনে যান ম্যানচেস্টার ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়। যতদিন খেলেছেন, ততদিন অ্যাটাকিং মিডফিল্ড পজিশন নিয়ে সিটিজেনদের দ্বিতীয়বার ভাবতে হয়নি।

গেল ১০ বছরের সেরা অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার কে? – এই প্রশ্নের জবাবে অনেক তর্ক-বিতর্ক হবে। কিন্তু, সব শেষে জবাব আসবে একটাই কেভিনন ডি ব্রুইনা। বেলজিয়ামের সোনালী প্রজন্মের সেনানী ক্যারিয়ারের চূড়ান্ত দিশা পেয়েছিলেন সিটিতে এসেই। সিটিও তাঁর সাফল্যের চূড়ায় উঠেছে কেডিবির হাত ধরেই।

কেডিবি কত বড় নাম? একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। মোহাম্মদ সালাহ লিভারপুলের কাছে পারিশ্রমিক চাইলেন কেডিবির সমান। লিভারপুলের সেরা তারকা তখন সালাহ। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা। তখন, লিভারপুল ম্যানেজমেন্ট একটা কথাই বলে, ‘আগে পারলে কেডিবির মত খেলে দেখাও, তারপর বাকিটা দেখা যাবে!’

হ্যাঁ, ব্রুইনা ওয়াজ আনম্যাচেবল। এমনকি লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতাও তাঁর ধারের কাছের কেউ নন। মাঝমাঠে বল পেলে তিনি যেন এক চিত্রশিল্পী—পাসগুলো তাঁর তুলি, মাঠটা ক্যানভাস। প্রতিপক্ষ বুঝে ওঠার আগেই রঙ লেগে যায় স্কোরবোর্ডে। বয়স ৩৩ পেরোলেও, কেডিবির পায়ে এখনো সময় থমকে দাঁড়ায়।

চেলসির জার্সিতে মরিনহোর ছাত্র ছিলেন একসময়, এখন ম্যানচেস্টার সিটির রাজসিংহাসনে তিনি যেন অর্ধেক রাজত্বের মালিক। ৪১৩ ম্যাচে ১০৬ গোল, আর ১৭ ৪টি অ্যাসিস্ট — সংখ্যাগুলো শুধু পরিসংখ্যান নয়, একেকটি গল্প, একেকটি মাহাত্ম্য।

প্রিমিয়ার লিগে তাঁর নাম আসে রায়ান গিগসের ঠিক পরেই। ১১৮ অ্যাসিস্ট—একটা যুগকে ছুঁয়ে ফেলা, ছাড়িয়ে যাওয়ার আগাম বার্তা। ২০১৫ সালে সিটিতে পা রাখার পর, ৮২৬ টি সুযোগ তৈরি করেছেন — চান্স ক্রিয়েশনে তাঁর ধারের কাছেও কেউ নেউ। যেন প্রতিটি ম্যাচে কবিতা লেখেন তিনি, আর গোলগুলো তাঁর ছন্দের অন্তরা।

চোট তাঁকে থামাতে চেয়েছে গত কয়েক মৌসুমে। সেপ্টেম্বরের পর কিছুটা ছন্দ হারালেও, ২০ ম্যাচে ফিরে এসেছেন সেই চেনা দৃপ্ততায়। এখনো গোলের সুযোগ বানান, ডান পায়ে ঝলক তোলেন, আর প্রমাণ করে যান — বয়স শুধু সংখ্যা। তারপরও আর সিটিতে থাকছেন না তিনি।

সৌদি আরব কিংবা এমএলএস — গুঞ্জন উঠছে, ডে ব্রুইনার শেষ গান হয়তো ইউরোপ গােইবেন না। কিন্তু, তাঁর বিদায়ের আগেও সিটির ট্রফি ক্যাবিনেটে যোগ হতে পারে আরও একখানি রূপালী অলঙ্কার — এফএ কাপের ট্রফি।

শেষ পর্যন্ত কোথায় থামবে তাঁর এই রুপকথার পথচলা, সেটা হয়তো জানে না কেভিন নিজেও। তবে, নীরব কবি তাঁর নতুন কোনো কবিতা লিখে চলবেন, অন্য কোথাও, অন্য কোনো মাঠে, অন্য কোনো জার্সি গায়ে চাপিয়ে!

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Share via
Copy link