ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে রাজস্থান রয়্যালসকে ৮৬ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে শেষ চারের আশা বাঁচিয়ে রাখল কলকাতা নাইট রাইডার্স। আগামীকাল মু্ম্বাই ইন্ডিয়ান্স ও সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের ম্যাচ শেষে নিশ্চিত হবে চতুর্থ দল হিসেবে কারা যাচ্ছে প্লে অফে।
তবে রানরেটে এগিয়ে থাকার কারণে চতুর্থ দল হিসেবে শেষ চারে যাওয়ার সম্ভবনা কলকাতারই বেশি। আর আজকের ম্যাচ হেরে এবারের আসর থেকে বিদায় নিল রাজস্থান রয়্যালস। দলের পরাজয়ের দিনে বল হাতে ব্যর্থ ছিলেন মুস্তাফিজুর রহমানও। ৪ ওভারে ৩১ রান দিয়ে উইকেট শূন্য ছিলেন তিনি।
তবে ব্যাট হাতে সুযোগ না পেলেও বল হাতে দলের জয়ে অবদান রেখেছেন সাকিব আল হাসান। এক ওভার বল করে মাত্র এক রান দিয়ে এক উইকেট শিকার করেন এই স্পিনার। তবে এরপর আর বল করার সুযোগ পাননি তিনি।
কলকাতার দেওয়া ১৭২ রান তাড়া করতে নামা রাজস্থানের ইনিংসে প্রথম আঘাত হানেন সাকিবই। ইনিংসের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে সাকিবের দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে যান জয়স্বী জয়সওয়াল। ৩ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি এই ওপেনার। পরের ওভারেই সাঞ্জু স্যামসনকে ফিরিয়ে দেন শিভাম মাভি।
১ রানে ২ উইকেট হারানোর পর চতুর্থ ওভারে রাজস্থানের ইনিংসে জোড়া আঘাত হানেন লকি ফার্গুসন। ওভারের দ্বিতীয় বলে লিয়াম লিভিংস্টোনকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর চতুর্থ বলে অনুজ রাওয়াতকে ফিরিয়ে দেন এই পেসার। ৬ বলে ৬ রান করেন লিভিংস্টোন আর রানের খাতায় খুলতে পারেননি রাওয়াত।
১৩ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর অস্টম ওভারে রাজস্থানের ইনিংসে আবার জোড়া আঘাত হানেন মাভি। ওভারের তৃতীয় বলে ১২ বলে ৮ রান করা গ্লেন ফিলিপসকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর শেষ বলে ২০ বলে ১৮ রান করা শিভাম দুবেকে ফিরিয়ে দেন এই পেসার।
এরপর বরুণ চক্রবর্তীর প্রথম শিকার হয়ে ক্রিস মরিস শূন্য রানে ফিরে গেলে ৩৭ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে রাজস্থান রয়্যালস। এরপর শেষের দিকে রাহুল তেলওয়াতার ৩৬ বলে ৪৪ রানে ভর করে অলআউট হওয়ার আগে ৮৫ রান সংগ্রহ করে রাজস্থান।
কলকাতা নাইট রাইডার্সের বোলারদের ভিতর শিভাম মাভি চারটি ও লকি ফার্গুসন তিনটি উইকেট শিকার করেন। এছাড়া একটি করে উইকেট পেয়েছেন সাকিব আল হাসান এবং বরুণ চক্রবর্তী।
এর আগে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামা কলকাতার দুই ওপেনার ভেঙ্কাতেস আইয়ার ও শুভমান গিল সাবধানী শুরু করেন। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে দুই ওপেনার সংগ্রহ করেন মাত্র ৩৪ রান। পাওয়ার প্লে শেষেই রানের গতি বাড়াতে চেষ্টা করেন দু’জন। পরের পাঁচ ওভারে দুই ওপেনার যোগ করেন ৪৫ রান।
তবে এরপর আর এই জুটি উইকেটে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। ৩৫ বলে ৩৮ রান করে রাহুল তেওয়াতিয়ার প্রথম শিকার হয়ে আইয়ার ফিরে গেলে ভাঙে ৭৯ রানের উদ্বোধনী জুটি। এই জুটি ভাঙার পর উইকেটে এসে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি নীতিশ রানা। ছয় মেরে দারুণ শুরু করা রানা ফিরে যান ৫ বলে ১২ রান করে।
৯২ রানে দুই উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেট জুটিতে রাহুল ত্রিপাঠিকে নিয়ে ৪১ রান যোগ করেন গিল। ক্রিস মরিসের প্রথম শিকার হয়ে ৪৪ বলে ৫৬ রান করে গিল ফিরে গেলে ভাঙে এই জুটি। গিল বিদায় নেওয়ার পর চেতন সাকারিয়ার বলে বোল্ড হয়ে ১৪ বলে ২১ রান করে ফিরে যান রাহুলও।
১৪৫ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর শেষের দিকে দীনেশ কার্তিক ও ইয়ন মরগ্যানের ব্যাটে ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৭১ রান সংগ্রহ করে কলকাতা। রাজস্থানের বোলারদের ভিতর একটি করে উইকেট পেয়েছেন ক্রিস মরিস, চেতন সাকারিয়া, রাহুল তেওয়াতিয়া ও গ্লেন ফিলিপস।
- সংক্ষিপ্ত স্কোর
কলকাতা নাইট রাইডার্স: ১৭১/৪ (ওভার: ২০; আইয়ার- ৩৮, গিল- ৫৬, রানা- ১২, রাহুল- ২১, কার্তিক- ১৪*, মরগ্যান- ১৩*) (সাকারিয়া- ৪-০-২৩-১, মরিস- ৪-০-২৮-১, ফিলিপস- ১-০-১৭-১, রাহুল- ১-০-১১-১, মুস্তাফিজুর- ৪-০-৩১-১)
রাজস্থান রয়্যালস: ৮৫/১০ (ওভার: ১৬.১; জয়সওয়াল- ০, লিভিংস্টোন- ৬, স্যামসন- ১, রাওয়াত- ০, ফিলিপস- ৮, দুবে- ১৮, মরিস- ০, রাহুল-৪৪) (ফার্গুসন- ৪-০-১৮-৩, মাভি- ৩.১-০-২১-৪, চক্রবর্তী- ৪-০-১৪-১)
ফলাফল: কলকাতা নাইট রাইডার্স ৮৬ রানে জয়ী।