চ্যাম্পিয়নের মতো শুরু করলেন কোহলি

বিরাট কোহলি এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর জন্য আইপিএল এক দু:স্বপ্নের নাম। বারবার শিরোপার দোরগোড়ায় গিয়েও ফিরে আসতে আসতে হয়েছে খালি হাতে। তবে এবারের আইপিএলের প্রথম ম্যাচেই অপরাজিত ৮৩ রানের ইনিংস খেলে কোহলি জানিয়ে দিলেন খানিকটা ভাগ্যের ছোঁয়া পেলে শিরোপা ছাড়া ফিরবেন না এই তারকা। তাঁর দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের সুবাদে পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে আট উইকেটের বড় জয় পেয়েছে ব্যাঙ্গালুরু। 

টানা তিন বছর ব্যাটে সেঞ্চুরি পাননি, আইপিএল তো বটেই সরে দাঁড়িয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব থেকেও। ব্যাট হাতে থাকতে চেয়েছিলেন নির্ভার, ফিরতে চেয়েছিলেন পুরনো রূপে। নতুন বছরে কথা রেখেছিলেন, ব্যাট হাতে নিয়মিত রান করে জানান দিচ্ছিলেন ফুরিয়ে যায়নি বিরাট। এদিন তাই চেন্নাস্বামীতে কোহলি আগুনে পুড়নো মুম্বাইয়ের বোলাররা। 

অথচ ম্যাচের প্রথম ইনিংস শেষেও ঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়া যায়নি। বরং তরুণ তিলক ভার্মার ৮৪ রানের সুবাদে ১৭২ রানের লড়াকু এক সংগ্রহই পেয়েছিল মুম্বাই। কিন্তু ব্যাটিং করতে নেমে জোফ্রা আর্চার কিংবা ক্যামেরন গ্রিনদের নিয়ে যেন ছেলেখেলাই করলেন বিরাট কোহলি। অন্যপ্রান্তে তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন প্রোটিয়া ফাফ ডু প্লেসিকে। দুজনে মিলে এমন ছন্দে রান করেছেন যেন ব্যাটিংয়ের চাইতে সহজ কোনো কাজ হতেই পারে না।

প্রথমে খানিকটা ধীরে সুস্থেই শুরু করেছিলেন কোহলি। একটু যেন রয়েসয়ে খোলস ছেড়ে বেরোনোর ভাবনা। এরপর সময় যত গড়িয়েছে কোহলি তত ধ্বংসাত্মক হয়েছেন। উইকেটের চারপাশে মোহনীয় সব শটে মুগ্ধ করেছেন দর্শকদের, মুম্বাইয়ের বোলারদের অসহায় চাহনিতে যেন খুঁজে পেয়েছেন প্রশান্তি।  

কখনো আর্চারকে মাথার উপর দিয়ে সীমানার বাইরে আছড়ে ফেলেছেন। আবার কখনো আরশাদ খানের অফস্ট্যাম্পের বলটাকে পাঠিয়েছেন লং অনের সীমানার ওপারে। ম্যাচ শেষে অপরাজিত ছিলেন ৪৯ বলে ৮২ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে। ছয়টি চারের পাশাপাশি তাঁর ব্যাটিংয়ে ছিল পাঁচটি ছয়ের মার। কোনো মারকাটারি ব্যাটিং কিংবা গায়ের জোরে নয়, কোহলির প্রতিটি শটেই ছিল শিল্পীর নিখাদ তুলির আঁচড়। 

ফাফ ডু প্লেসিকে নিয়ে উদ্বোধনী জুটিতেই এক প্রকার ম্যাচের ভাগ্য লিখে দেন। ১৪৮ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর দীনেশ কার্তিক দ্রুত ফিরলেও লাগাম ছাড়া হতে দেননি কোহলি। দায়িত্বশীল ব্যাটিং করেছেন, দলের জয়টা নিশ্চিত করেই মাঠ ছেড়েছেন। 

গত তিন মৌসুমে আইপিএলে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জেতা দল ব্যাঙ্গালুরু। শেষ চারে উঠেছে প্রতিবারেই, কিন্তু ভাগ্যের মারপ্যাঁচে শিরোপা জেতা হয়নি। এবারে অবশ্য শিরোপা খরা কাটাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ দলটি। কোহলির এমন ফর্ম বজায় থাকলে আর ভাগ্যবিধাতা খানিকটা মুখ তুলে তাকালে শিরোপা খুব বেশি দূরের পথ নয় ব্যাঙ্গালুরুর জন্য।    

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link