‘চেজ মাস্টার’ এর ব্যাটে ভর করে জয় ভারতের

বিরাট কোহলি কেন সময়ের সেরা ব্যাটার, কেন তিনি আলাদা অন্য বিশ্বসেরাদের চেয়ে – সেই উত্তর আরো একবার পাওয়া গেলো চেন্নাইয়ের মাটিতে। দুরন্ত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ধুঁকতে থাকা স্বদেশকে অতীতের মতই টেনে তুলেছেন তিনি, ‘চেজ মাস্টার’ উপাধির যৌক্তিকতা প্রমাণ করে জয়ের পথে এগিয়ে দিয়েছেন দলকে।

অনেক অপেক্ষার পর বিশ্বকাপের উন্মাদনা টের পাওয়া গিয়েছে অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের ম্যাচে। দুই পরাশক্তির লড়াইকে ঘিরে যেমন উত্তাপ সৃষ্টি হয়েছিল ম্যাচের আগে, যদিও কোহলি আর রাহুলের পারফরম্যান্সে স্বাচ্ছন্দ্যেই জয় তুলে নিতে পেরেছে রোহিত শর্মার দল।

চেন্নাইয়ের স্পিন বান্ধব পিচে এদিন তিন স্পিনার নিয়ে একাদশ সাজিয়েছিল ভারত। অনুমেয় ভাবেই আগে ব্যাট করতে নামা অজিদের জন্য অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিলেন এই স্পিনাররা। বিশেষ করে রবীন্দ্র জাদেজা এবং কুলদীপ যাদবরা অজি ব্যাটারদের নাভিশ্বাস তুলেছেন।

ডেভিড ওয়ার্নার আর স্টিভেন স্মিথ ছাড়া আর কোন অস্ট্রেলিয়ানই এদিন ৩০ রানের গণ্ডি পেরুতে পারেননি। দলের পক্ষে তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৮ রান করেছেন মিচেল স্টার্ক; স্কোরবোর্ডে তাকালেই বোঝা যায়, দলটির পুরো মিডল অর্ডার একসাথে ব্যর্থ হয়েছে।

শেষদিকে নামা ব্যাটসম্যানরা রান না পেলে অবশ্য আরো বেশি লজ্জা পেতে হতো অস্ট্রেলিয়াকে। ১৪০ রানে সাত উইকেট হারালেও কামিন্স, স্টার্কদের দৃঢ়তায় ১৯৯ রান তুলতে পেরেছিল দলটি।

মামুলি পুঁজি তেই অবশ্য ভারতীয় ব্যাটারদের পরীক্ষা নিতে নিজেদের সর্বস্ব দেয়ার চেষ্টা করেছেন অস্ট্রেলিয়ান বোলাররা। প্রথম ওভারেই ঈশান কিষাণকে ফিরিয়ে স্বাগতিক শিবিরে আঘাত হানেন বাঁ-হাতি স্টার্ক। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপে পঞ্চাশ উইকেট পূর্ণ করেন তিনি। পরের ওভারে জস হ্যাজলউড রোহিত শর্মাকে আউট করে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দেন টিম ইন্ডিয়ার ড্রেসিংরুমে।

সেই ভাঁজ আরো গভীর হয় কয়েক বল পরে শ্রেয়াস আইয়ার বিদায় নিলে। দুই রানের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে যখন দিশেহারা ভারত, তখন ক্রিজে থাকা বিরাট কোহলি ছিলেন নির্ভার। নিজের ক্রিকেটীয় সামর্থ্য দেখানোর জন্য এই চ্যালেঞ্জিং সময়কেই বেছে নিলেন তিনি। আর তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দেন লোকেশ রাহুল।

দুজনের ধৈর্যশীল ব্যাটিংয়ে সাময়িক বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠে দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। এরপরই রানের গতি বাড়িয়ে ক্রমাগত সফরকারীদের ম্যাচ থেকে দূরে সরিয়ে দিতে থাকেন এই ডানহাতি জুটি।

সময়োপযোগী ব্যাটিংয়ে ব্যক্তিগত অর্ধশতকও করে ফেলেন তাঁরা। ৮৫ রানের মাথায় অবশ্য হ্যাজলউড ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন কোহলিকে, কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে। জয়ের বাকি আনুষ্ঠানিকতা সারতে মোটেই কষ্ট হয়নি রাহুল, পান্ডিয়ার জন্য। ৫২ বল আর ছয় উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় রোহিতরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link