আজ আর নয় আড়ালে থাকার রাত

পাঞ্জাবের রানের স্রোতে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়ে তিনি লিখলেন এক বহুল আকাঙ্খিত জয়ের উপন্যাস। ক্রুনাল জানতেন তার ঘূর্ণিতেই ঘুরে যেতে পারে সমস্ত গল্প। সেটাই হয়েছে শেষমেশ। 

ভাইয়ের জৌলুসের আড়ালে সর্বদা হারিয়ে যান ক্রুনাল পান্ডিয়া। অবশেষে কোন এক স্পটলাইট পড়ল তার উপর। সেই আলোর উৎসকে অবশ্য তিনি বাধ্য করেছেন তাকে আলোকিত করতে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু জিতল তাদের ইতিহাসের প্রথম শিরোপা। আর এই শিরোপা জয়ের অন্যতম কারিগর ক্রুনাল পান্ডিয়া।

এর আগেও ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ জিতেছেন ক্রুনাল পান্ডিয়া। তবে আবেগের মাপকাঠিতে সম্ভবত ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় ম্যাচই খেলতে নেমেছিলেন ক্রুনাল পান্ডিয়া। আর সেই ম্যাচে মনে রাখার মত এক বোলিং স্পেল করে গেলেন। পেন্ডুলামকে বাধ্য করলেন ব্যাঙ্গালুরুর পক্ষে ঝুকে যেতে। মাঝের ওভার গুলোতে পাঞ্জাব কিংসের রান প্রায় শুকিয়ে ফেলেছিলেন তিনি একাহাতে।

শুধু কি তাই? দু’টো মহাগুরুত্বপূর্ণ উইকেট গিয়েছে তার ঝুলিতে। দারুণ খেলতে থাকা জশ ইংলিসকে ফিরিয়েছেন তিনি। এছাড়াও পাঞ্জাবের সফলতার অন্যতম চাবিকাঠি প্রভসিমরান সিংয়ের উইকেটও গিয়েছে ক্রুনালের পকেটে। নিজের প্রথম ওভারে তিনি দিয়েছেন মাত্র তিন রান।

আইপিএলের মেগা ফাইনালের মঞ্চে এত স্বল্প রান খরচা সর্বোচ্চ প্রশংসার দাবি রাখে। এই কৃপণতা তিনি দেখিয়ে গেছেন পুরো স্পেল জুড়ে। মাত্র ১৭ রান দিয়েছেন ক্রুনাল নিজের কোটার চার ওভারে। এমন চাপের মুহূর্তেও নিজের স্নায়ুচাপকে আয়ত্ত্বে রেখেছিলেন তিনি। ঠান্ডা মাথায় নিজের কাজটা করে গেছেন বা-হাতি এই অলরাউন্ডার।

তার ওই চার ওভারই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সকে দিয়েছে ভরসা। পাঞ্জাবের রানের স্রোতে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়ে তিনি লিখলেন এক বহুল আকাঙ্খিত জয়ের উপন্যাস। ১৮ বছরের দীর্ঘ এক অপেক্ষার গল্প মাথার মধ্যে ঘুরে বেড়িয়েছে নিঃসন্দেহে। কিন্তু ক্রুনাল জানতেন তার ঘূর্ণিতেই ঘুরে যেতে পারে সমস্ত গল্প। সেটাই হয়েছে শেষমেশ।

এই স্পেলটা ক্রুনালের জীবনের এক উজ্জ্বল স্মৃতি হয়ে থাকবে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর সেই সব বিশ্বস্ত সমর্থকদের মনে গেঁথে থাকবে ক্রুনালের এই পারফরমেন্স। নিজের সামর্থ্য়ের প্রমাণ রেখে তিনি এক উজ্জ্বল আলোর বিকিরণ ঘটালেন। আজ আর তাকে থাকতে হচ্ছে না ভাইয়ের ছায়ার আড়ালে।

Share via
Copy link