সৌন্দর্য্যের সাঙ্গাকারা ঘরানা

কুমার সাঙ্গাকারা। ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেটের খ্যাতনামা এক ভদ্রলোক। শ্রীলঙ্কার হয়ে দীর্ঘদিন ধরে খেলে নিজেকে নিয়ে গেছেন কিংবদন্তিদের তালিকায়। ব্যাটসম্যান হিসেবে বছরের পর বছর ধরে বইয়েছেন রানের বন্যা। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের এক একটা শট যেন তানসেনের আগুন ঝরানো সুর। সাঙ্গাকারার কভার ড্রাইভ তো ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে শতভাগ নিখুঁত।

কুমার সাঙ্গাকারা। ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেটের খ্যাতনামা এক ভদ্রলোক। শ্রীলঙ্কার হয়ে দীর্ঘদিন ধরে খেলে নিজেকে নিয়ে গেছেন কিংবদন্তিদের তালিকায়। ব্যাটসম্যান হিসেবে বছরের পর বছর ধরে বইয়েছেন রানের বন্যা। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের এক একটা শট যেন তানসেনের আগুন ঝরানো সুর। সাঙ্গাকারার কভার ড্রাইভ তো ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে শতভাগ নিখুঁত। গ্লাভস হাতে উইকেটের পেছনেও দুর্দান্ত ছিলেন এই লঙ্কান। দারুণ সব ক্যাচ নিয়েছেন। স্ট্যাম্পিং করে অগুনতি বার প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানকে প্যাভিলিয়নের রাস্তা ধরিয়ে দিয়েছেন।

জীবন্ত এই কিংবদন্তির জন্ম ১৯৭৭ সালের ২৭ অক্টোবর।শ্রীলঙ্কার মাথেলায়।তাঁর পিতার নাম ছিল স্বর্ণকুমারা সাঙ্গাকারা আর মায়ের নাম আনুশকা সুরাঙ্গানা। সাঙ্গাকারার জন্ম মাথেলাতে হলেও পরবর্তী সময়ে পরিবারের সবার সাথে ক্যান্ডিতে চলে যান। সেখানে তাকে ট্রিনিটি কলেজে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয়। ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার প্রতি তাঁর আকর্ষণ ছিল। ক্রিকেটের পাশাপাশি খেলতেন ব্যাডমিন্টন।সাতারু হিসেবেও ছিলেন খুব ভালো। এমনকি এই দুইটায় স্কুল লেভেলের ন্যাশনাল ট্রফিও জিতেছিলেন তিনি। পরবর্তী সময়ে অবশ্য মনোযোগটা শুধু ক্রিকেটেই দেন।

স্বর্ণকুমারা সাঙ্গাকারা পেশায় ছিলেন উকিল। কুমার সাঙ্গাকারাও হয়তো মনে মনে ঠিক করেছিলেন সেই পেশায় যাবেন। তাই কলেজ শেষ করার পর আইন বিষয় নিয়ে অনার্স করতে ভর্তি হয়েছিলেন। ক্রিকেটের কারণে পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটলেও অনার্স শেষ করেছিলেন।এজন্যই তো যতবারই সাক্ষাৎকার দেন তখন এতো সুন্দর আর গুছিয়ে কথা বলতে পারেন তিনি।

শ্রীলঙ্কা-এ দলে প্রথম বার সুযোগ পেয়েছিলেন ১৯৯৮-৯৯ সিজনে দক্ষিণ আফ্রিকা-এ দলের বিপক্ষে সিরিজে। এরপর জিম্বাবুয়ে-এ দলের বিপক্ষে অপরাজিত ১৫৬ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলেন। আর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওই ইনিংসের পরেই নির্বাচকদের নজরে পড়ে যান কুমার সাঙ্গাকারা, যার ফলে ২০০০ সালে অনুষ্ঠেয় সিঙ্গার ত্রিদেশীয় সিরিজে গলে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডেতে অভিষেক ঘটে এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের। অভিষেক ওয়ানডেতে গ্লাভস হাতে একটি ক্যাচ ও ব্যাট হাতে ৩৫ রান করেন তিনি। পরের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৮৫ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে দলকে ৯৭ রানের জয় এনে দেওয়ার পাশাপাশি ম্যাচসেরার পুরস্কারটিও পেয়ে যান সাঙ্গাকারা। ফলস্বরূপ সেই মাসেই গলে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে অভিষেক ঘটে তার।

২০ জুলাই, ২০০০। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথম ম্যাচে টেস্ট অভিষেক হয় ২২ বছর বয়সী সাঙ্গার। শ্রীলঙ্কা ম্যাচটি জিতেছিল এবং একমাত্র ইনিংসটি সাঙ্গাকারা তৃতীয় উইকেটের পতনে ব্যাট করতে নেমেছিলেন। নিকি বোজের বলে লেগ বিফোর উইকেট হওয়ার আগে করেছিলেন ২৩ রান। পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেকের সময় তিনি ৩৫ রান করেছিলেন এবং ২০০০ সালে সিঙ্গার ট্রাই নেশন সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথম ম্যান অফ দ্য ম্যাচ পুরস্কার পেয়েছিলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে করেছিলেন ৮৫ রান। এভাবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আসন্ন টেস্ট সিরিজের জন্য নিজের জায়গাটি সুরক্ষিত করেন; ৬৬.৫ গড়ে ১৯৯ রান দিয়ে সিরিজটি শেষ করেছিলেন। ওয়ানডেতে তার জার্সি নং ১১।

নিজের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির আগে নার্ভাস নাইন্টিজে আউট হয়েছিলেন দু’বার, একবার দক্ষিণ আফ্রিকা এবং আরেকবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ২০০১ এর আগস্টে ভারত তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে শ্রীলঙ্কা আসে এবং এই সিরিজের প্রথম ম্যাচেই সাঙ্গাকারা টেস্টে তার প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন। তিন নম্বরে নেমে তার খেলা অপরাজিত ১০৫ রানের সেই ইনিংসটি শ্রীলঙ্কাকে দশ উইকেটের এক বিশাল জয় এনে দিয়েছিল।

পরে সেই বছর সাঙ্গাকারা তার দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরিও তুলে নিয়েছিলেন, এবারও সফরকারী ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের প্রথম ম্যাচেই। ২০০২ সালে তিনি পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করেন। তার ব্যাটই সেবার শ্রীলঙ্কাকে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ নিশ্চিত করতে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করেছিল।

২০০৩ সালের এপ্রিলে, সাঙ্গাকারা পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেছিলেন, যদিও ম্যাচটি হেরেছিল লঙ্কানরা। মারভান আতাপাত্তুর সাথে ২০০৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪৪৮ রানের জুটি গড়েন সাঙ্গা। সেই খেলায় তিনি করেছিলেন ২৭০ রান, এটিই তার প্রথম ২৫০+ স্কোর। জুলাই ২০০৫-এ, সাঙ্গা আইসিসি ওয়ার্ল্ড ইলেভেন ওয়ানডে দলে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কা যখন বাংলাদেশ সফর করেছিল, তখন নিয়মিত অধিনায়ক মারভান আতাপাত্তু ইনজুরিতে আক্রান্ত থাকার কারণে অধিনায়কের দায়িত্ব পান মাহেলা জয়াবর্ধনে। আর প্রথম বার কুমার সাঙ্গাকারাকে সহ-অধিনায়ক করা হয়।

পাকিস্তান ২০০৬ এর মার্চ মাসে দু’টি টেস্ট ও তিনটি ওয়ানডে খেলতে শ্রীলঙ্কা সফরে যায় এবং এখানেও মাহেলা–সাঙ্গাকারা জুটিই অধিনায়কত্বের দায়িত্বে বহাল থাকেন। এই জুটি কেবলমাত্র অন্তর্বর্তীকালীন সময়টুকুতেই এই পদে অধিষ্ঠিত থাকতে চেয়েছিল। তবে তৃতীয় বারের মতো সিরিজে এটির সময়সীমা বাড়ানো হয় কারণ আতাপাত্তি এপ্রিল মাসেও ইংল্যান্ড সফরে যেতে ব্যর্থ হয়েছিলেন।

জুলাই, ২০০৬। সেবার শ্রীলঙ্কায় খেলতে আসে সাউথ আফ্রিকা। সেবার মাহেলার সাথে মিলে গড়েন ৬২৪ রানের ম্যারাথন জুটি। পাক্কা দুইদিন ধরে ব্যাটিং করেছিলেন তাঁরা।
দ্রুততম ৮০০০, ৯০০০, ১১০০০, ১২০০০ রানের মালিক তিনি। তিন নম্বরে নেমে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির (৩৭) মালিক তিনি। তিন নম্বরে সবচেয়ে বেশি রানের মালিকও তিনি। যে তিন নম্বরকে ধরা হয়ে থাকে ব্যাটিং পজিশনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কঠিন পজিশন, সেখানেই ১১০০০-র উপর রান। উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান। বিশ্বকাপে টানা চার সেঞ্চুরি। এক পঞ্জিকাবর্ষে ২৮৬৮ রান! কিংবদন্তি মানদন্ডে নিজেকে নিয়ে গিয়েছিলেন সেবার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান স্কোরার ক্রিকেট ইতিহাসে।শচীন টেন্ডুলকারের ঠিক পরে।

২০০৭ সালের ৬ ডিসেম্বর তিনি আইসিসি টেস্ট প্লেয়ার র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ স্থান অর্জন করেন ৯৩৮ রেটিং নিয়ে। যেকোনো শ্রীলঙ্কান খেলোয়াড়ের প্রাপ্ত সর্বোচ্চ রেটিং এবং টানা চারটি টেস্টে ১৫০ এর বেশি রান করা প্রথম ব্যাটসম্যান তিনি।

ওয়ানডেতে তার সুনাম বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে ২০০৫ সালের অক্টোবরে ওয়ার্ল্ড ইলেভেনের হয়ে অস্ট্রেলিয়ায় জনি ওয়াকার সিরিজ খেলার পর। ওয়ার্ল্ড ইলেভেন বড় ব্যবধানে সবকটি ম্যাচ হেরে গেলেও সাঙ্গাকারা তার প্রতিভার ছাপ রেখেছিলেন পুরো সিরিজ জুড়ে। ২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হোবার্টে ১৯২ রানের এক দানবীয় ইনিংসে নিজের জাত আরেকবার চেনান কুমার।

টেস্ট ক্রিকেটে অসামান্য ব্যাটিংয়ের জন্য ২০০৮ সালের উদ্বোধনী ক্রিকইনফো পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। সাঙ্গাকারা টেস্ট ক্রিকেটে দ্রুততম ৮ হাজার, ৯ হাজার, ১০ হাজার (যৌথভাবে), ১১ এবং ১২ হাজার রানের ক্লাবে ঢোকার অনন্য রেকর্ড গড়েন।

২০০৯ সালের ৩ মার্চ পাকিস্তানে শ্রীলঙ্কান দলের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় শ্রীলঙ্কার ৬ জন খেলোয়াড় আহত হয়।এদের মাঝে সাঙ্গাকারাও ছিলেন। তিনি কাঁধে আঘাত পেয়েছিলেন। ২০০৬ সালের নভেম্বর মাসে সাঙ্গাকারা আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট একাদশে জায়গা পান। পরের বছর তিনি ওয়ারউইকশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবে যোগদানের জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। একই বছর টেস্টে পরপর দুইটি ডাবল সেঞ্চুরি করেন এবং ইতিহাসের ৫ম ক্রিকেটার হিসেবে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন। সাঙ্গাকারার ক্যারিয়ারে তার সতীর্থ মাহেলা জয়াবর্ধনে একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম। ‘কুমার-মাহেলা’ এমন এক জুটি যা শ্রীলঙ্কাকে টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়নের খেতাব এনে দিয়েছে এবং একদিনের বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছিয়েছে দুইবার।

‘কুমার ও মাহেলা’ শব্দ দুটি একে অপরের সাথে প্রায় মিশে গেছে এবং এমন একটি সত্তায় পরিণত হয়েছে যা শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট অনুরাগীদের স্বপ্ন দেখিয়েছে, সান্ত্বনা দিয়েছে আবার ব্যাট হাতে বিশ্ব শাসনও করেছে। ৫৫০ ম্যাচ একসাথে খেলেছেন এই দুজন কিংবদন্তী। সিডনিতে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচটিই ছিল একসঙ্গে তাদের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ।

কুমার সাঙ্গাকারা এমনি একজন ক্রিকেটার যাকে সংখ্যা দিয়ে বিচার করা যায়না। একজন নির্ভরশীল ব্যাটসম্যান, দায়িত্ববান কাপ্তান, যোগ্য উইকেট রক্ষক; হাতে গোনা কয়েকজন গ্রেটদের মধ্যে তিনি একজন যারা টেস্ট এবং ওয়ানডে উভয় ফরম্যাটে ১০ হাজার রান করেছেন।

১৫ বছরের ক্যারিয়ারে টেস্ট খেলেছেন ১৩৪ টি। ২৩৩ ইনিংসে রান করেছেন ১২৪০০। সর্বোচ্চ ৩১৯, গড় ৫৭.১৪। টেস্টে তার ডাবল সেঞ্চুরি ১১ টি, ৩৮ টি সেঞ্চুরির পাশাপাশি হাফসেঞ্চুরি রয়েছে ৫২ টি।

একদিনের ক্রিকেটে ৪০৪ ম্যাচে ৩৮০ ইনিংসে রান করেছেন ১৪২৩৪। গড় ৪২, সর্বোচ্চ ১৬৯। ওয়ানডেতে স্ট্রাইক রেট ৭৮.৫। একদিনের খেলায় সেঞ্চুরি ২৫ টি আর হাফসেঞ্চুরি ৯৩ টি। উপরের পরিসংখ্যান-ই প্রমাণ করে দলের মিডল অর্ডার কীভাবে সামলেছেন পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে।

এতো এতো পাওয়ার মাঝেও না পাওয়ার একটা শিরোপা আক্ষেপ সবসময়ই ছিল সাঙ্গার। ২০০৭, ২০১১ পরপর দুটি ওয়ানডে ফাইনালে হেরে তাদের কানের কাছে প্রতিধ্বনিত হতে থাকে চোকার উপাধি। শেষমেষ বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ফাইনালে আবার জায়গা পায় শ্রীলঙ্কা। সমালোচকদের মুখ বন্ধ করার জন্য সাঙ্গা বেছে নেন ফাইনাল ম্যাচকেই। এর আগের চার ফাইনাল হারায় এ ম্যাচের আগে বেশ চাপে ছিল শ্রীলঙ্কা। ভারতের দেওয়া ১৩১ রানের সহজ টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৭৮ রানে ৪ উইকেট হারালে সেই চাপ আরো বেড়ে যায়। তবে এবার আর চাপের মুখে দমে যাননি সাঙ্গাকারা, ঠাণ্ডা মাথায় ৩৫ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেলে দলকে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টির বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেন তিনি।

ফাইনালে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারটিও জিতে নেন। আর এ ম্যাচের মধ্য দিয়েই টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেন কুমার সাঙ্গাকারা ও তার সতীর্থ মাহেলা জয়াবর্ধনে।

জীবনের শেষ টেস্ট ম্যাচে ২৪ আগস্ট, ২০১৫ ভারতের বিপক্ষে খেলা শেষে এক আবেগঘন ভাষণ দেন কুমার সাঙ্গাকারা। সাঙ্গাকারা বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার জনগণ এবং শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট অনুরাগীদের সামনে খেলাটা ছিল আমার জীবনের অন্যতম বিশেষ সুযোগ। আমি আপনাদের ভালবাসা এবং সমর্থনের জন্য বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। আমার ইনিংস শেষ। আমি আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলব না। তবে আমি আপনার সাথে খেত্তরমামা, গল, তামিল ইউনিয়নে এবং এসএসসিতে তরুণ ক্রিকেটারদের খেলা দেখতে আসব।’

ব্যক্তিগত জীবনে যমজ দুই সন্তানের পিতা তিনি। তাঁর স্ত্রীর নাম ইয়াহেলি যিনি কিনা কিশোর বয়স থেকেই ছিলেন কুমার সাঙ্গাকারার সাথে। চ্যারিটিমূলক কাজের জন্য বিখ্যাত তিনি শ্রীলঙ্কায়।

কুমার সাঙ্গাকারাকে যুক্তরাজ্যে শ্রীলঙ্কার হাই কমিশনার পদে নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি মাইথ্রিপাল সিরিসেনা। এই প্রস্তাব সাঙ্গাকরাকে অবাক করে দিয়েছিল, তবে যারা লঙ্কান ক্রিকেটারকে ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ করেন তারা সম্ভবত এটি প্রত্যাশাই করেছিল। ২০১১ সালের এমসিসি স্পিরিট অফ ক্রিকেট কাউড্রে স্পিচে সাঙ্গাকারা তার স্পষ্টবাদী মতামতের জন্য বিখ্যাত হয়েছিলেন যেখানে তিনি শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটে রাজনৈতিক প্রভাবের সমালোচনা করেছিলেন। সেটা সাঙ্গাকারা বলেই বলতে পেরেছিলেন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...