কুশল মেন্ডিস নিঃসন্দেহে বাংলাদেশকে প্রিয় প্রতিপক্ষ ভাবেন, পরিসংখ্যানও তাঁর এমন ভাবনার পক্ষে সাক্ষ্য দেয়। যখনই বাংলাদেশের মুখোমুখি হন তখনই নিজের সেরা ছন্দে আবির্ভূত হন তিনি; ব্যতিক্রম হয়নি এবারও, প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন; করেছেন অনবদ্য এক হাফসেঞ্চুরি।
এদিন ওপেনিংয়ে করতে নেমে ৩৬ বলে ৫৯ রান করেছেন এই ডানহাতি। ছয়টি চারের পাশাপাশি হাঁকিয়েছেন তিনটি বিশাল ছক্কা, দুর্দান্ত সব শট খেলেছেন। তাঁর এই ইনিংসে ভর করেই বড় সংগ্রহের ভিত পেয়েছে শ্রীলঙ্কা।
নতুন বলে টাইগারদের শুরুটা অবশ্য ভাল হয়েছিল, পাওয়ার প্লের মধ্যেই দুই উইকেটের পতন ঘটেছিল লঙ্কানদের। কিন্তু চাপের মুখে পথ হারাননি মেন্ডিস, শক্ত হাতে হাল ধরেছেন দলের। শুরুর দিকে রয়ে সয়েই খেলেছেন, এরপর আধিপত্য বিস্তার করেছেন বোলারদের উপর।
একটা পর্যায়ে ১৭ বলে ১৫ এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকে, কিন্তু এরপরই বদলে যায় সবকিছু। পরের ১৪ বলে ৩৫ রান করেন এই তারকা, এর মধ্য দিয়ে ছুঁয়ে ফেলেন ব্যক্তিগত ফিফটিও। তাছাড়া এই টর্নেডোর সৌজন্যে ম্যাচের মোমেন্টাম পেয়ে যায় সফরকারীরা।
সেই সাথে মর্যাদার এক কীর্তি স্পর্শ করেছেন তিনি, তেরোটি পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস নিয়ে টি-টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কান হিসেবে সর্বোচ্চ পঞ্চাশোর্ধ রানের ইনিংসের তালিকায় এখন যৌথভাবে দুই নম্বরে অবস্থান তাঁর। আর একটি হাফসেঞ্চুরি করতে পারলেই এই তালিকার শীর্ষে দেখা যাবে তাঁকে।
এর আগে টাইগারদের বিপক্ষে পাঁচটি টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন এই তারকা। পাঁচ ম্যাচের চারটিতেই হাঁকিয়েছিলেন হাফসেঞ্চুরি – সবমিলিয়ে ২৫১ রান করেছিলেন পঞ্চাশের বেশি গড়ে; আর তাঁর স্ট্রাইক রেট ১৬৭.৩৩! অর্থাৎ বাংলাদেশের জন্য রীতিমতো আতঙ্ক তিনি।
বাকি দুই ফরম্যাটের চিত্রও একই, ওয়ানডেতে প্রায় ৩৫ ব্যাটিং গড়ে ৪৮০ রান করেছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার; একটা শতকের পাশাপাশি অর্ধ-শতক করেছেন আরো তিনটি। অন্যদিকে টেস্ট সংস্করণে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৬৩৮ রান; ব্যাটিং গড় ৬৩.৮০ – এককথায় অতিমানবীয় পারফরম্যান্স।
চলতি সিরিজের শুরুটা তাই প্রত্যাশা অনুযায়ী ভালভাবেই করেছেন কুশল মেন্ডিস। সিরিজের বাকি অংশেও তাঁকে এমন বিধ্বংসী রূপে দেখতে চাইবে শ্রীলঙ্কা, যদিও এমনটা হলে নাজমুল হোসেন শান্তর দলকে ভুগতে হবে অনেক বেশি।