পারিশ্রমিক দেবে কি, হোটেলের ভাড়াই দেয় না রাজশাহী!

শুধুই খেলোয়াড়দের বেতনই না, দলটি পরিশোধ করেনি টিম হোটেলের ভাড়াটাও। তাদের দেওয়া এই চেকটাও বাউন্স হয়েছে ব্যাংক থেকে। এজন্যই দলের মালিককে কড়া নজরদারিতে রেখেছে হোটেল কর্তৃপক্ষ। সব খানেই টাকা পয়সার গোঁজামিল করে বেশ বিপাকেই এখন ফ্রাঞ্চাইজিটি।

ভ্যালেন্টাইন্স গ্রুপের জন্য এই মুহূর্তে কোনো ভালবাসা নেই। একদিকে অর্থের অভাবে তাঁরা বিপিএল চলাকালেই টিম হোটেলের দেনা পরিশোধ করতে পারছে না। খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিকও বাকি। এমনকি লঙ্কান ক্রিকেটার লাহিরু সামারাকুন দাবি করেছেন, একটা টাকাও পাননি তিনি।

দেশি ক্রিকেটারদের বেতন দিতে যে একই রকম গড়িমসি করছে দুর্বার রাজশাহী, সেটা গোটা আসর জুড়েই সবাই কম বেশি জানে। এবার উঠে আসল বিদেশি ক্রিকেটারের প্রসঙ্গও। চলতি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) মাঝপথে এসেও সামারাকুনকে একটা কানাকড়িও দেয়নি ফ্রাঞ্চাইজিটি। শুধু খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক নয়, হোটেল রুমের ভাড়াও আটকে রেখেছে রাজশাহী ফ্রাঞ্চাইজি। মালিক রয়েছেন নজরদারিতে। তাঁদের হোটেল ত্যাগ না করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হয়েছে।

টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই নিজের ৪ ওভারে ৬৪ রান খরচা করেছিলেন তিনি। এরপর থেকেই ২৭ বছর বয়সী এই শ্রীলঙ্কান পেসার বেঞ্চ গরম করছেন দলটির ডাগআউটে। তবে এতদিনে বেতনের একটা পয়সাও না পেয়ে চটেছেন তিনি। ফ্রাঞ্চাইজিটির বিপক্ষে অভিযোগ দায়ের করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কাছে।

মুখ খুলেছেন গণমাধ্যমেও, প্রকাশ করেছেন চরম বিরক্তি। সম্প্রতি মুঠোফোনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি এখনো একটা কানাকড়িও পাইনি। আমি প্রতিদিন আমার বেতনের ব্যাপারে তাদের জিজ্ঞাসা করি। আজ দেবো, কাল ম্যাচের পরে দেবো বলে তারা এড়িয়ে যায়। কিন্তু এই কালকের দিনটা আর আসে না।’

আগের মৌসুমে বিপিএলে তিনি খেলেছিলেন দুর্দান্ত ঢাকার হয়ে। সেখানে এমন ভয়াবহ বাজে অভিজ্ঞতার শিকার তাকে হতে হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। লাহিরু বলেন, ‘আমি চলে যাবার আগেই তারা দৈনিক ভাতাসহ আমার সব টাকা পরিশোধ করে দিয়েছিল।’

যদিও ফ্রাঞ্চাইজিটির দাবি, তাদের দলের খেলোয়াড়রা ২৫ শতাংশ বেতন ইতিমধ্যেই পেয়েছেন। তবে সেটিও তিনি এখন অবধি পাননি। লাহিরু বলেন, ‘বেতন তো দূর আমি গত এক সপ্তাহ ধরে আমার দৈনিক ভাতাটাও পাচ্ছিনা।’

বিসিবির কাছে তার ম্যানেজার অভিযোগ জানিয়েছে। দলের অন্য খেলোয়াড়রা বেতনের ২৫ শতাংশ পেলেও তিনি এখনো পাননি। তার কাছে এখন আর টাকাও নেই। এই মর্মেই এই অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানালেন তিনি। দলের সাথে আপাতত অনুশীলন করছেন না তিনি।

বেতন না দিলে তিনি নেটে যাবেননা বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন লাহিরু। তবুও গত ২০ জানুয়ারি অনুশীলনে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। কেননা বেতনের ব্যাপারে দলের ম্যানেজার মেহেরাব হোসেন অপি এবং মালিক শফিক রহমানের সাথে আবারও যোগাযোগ করলে আশার বানী শুনিয়েছিলেন তারা।

তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল যে, ২৩ তারিখের ম্যাচের আগেই সব খেলোয়াড়দের বেতনের ৫০ শতাংশ টাকা পরিশোধ করা হবে। যদিও এখনো দলের কোন খেলোয়াড়ই চেক পাননি বলেই জানিয়েছেন তিনি।

শুধুই খেলোয়াড়দের বেতনই না, দলটি পরিশোধ করেনি টিম হোটেলের ভাড়াটাও। তাদের দেওয়া এই চেকটাও বাউন্স হয়েছে ব্যাংক থেকে। এজন্যই দলের মালিককে কড়া নজরদারিতে রেখেছে হোটেল কর্তৃপক্ষ। সবখানেই টাকা পয়সার গোঁজামিল করে বেশ বিপাকেই এখন ফ্রাঞ্চাইজিটি। যদিও দলটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিক রহমান খেলোয়াড়দের বেতন নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে নিষেধ করেছেন। সময়মতই সবাই সব বকেয়া টাকা পেয়ে যাবেন বলেই আশ্বস্ত করেছেন তিনি।

 

Share via
Copy link