জার্মানি তখন জয় নিশ্চিত ধরেই নিয়েছিল, চার মিনিটের অতিরিক্ত সময় বলতে গেলে শেষ হবে এক্ষুনি। কিন্তু ভুলটা হলো একেবারে অন্তিম মুহূর্তে, ঠিক যেসময় শেষ বাঁশি বাজানোর কথা রেফারির, সেসময় তিনি জানালেন পেনাল্টির সিদ্ধান্ত। মিহালির কাটার শট হাতে লাগে রবিনের কচের, সেটাই হাঙ্গেরিকে সমতায় ফেরার পথ খুলে দেয়।
অধিনায়ক ডমিনিক সোবোসলাই কোন ভুল করেননি, পানেককা কিক নিয়েছেন একেবারে গোলপোস্টের মাঝামাঝি জায়গায়। অ্যালেক্সান্ডার নুবেল ততক্ষণে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ভুল দিকে – ফলাফল, গোল!
ঘরের মাঠে নিজেদের দর্শকের সামনে এমন মুহূর্ত অবশ্য প্রাপ্য ছিল সোবোসলাইয়ের। পুরো ম্যাচ জুড়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের ঝলকানি দেখিয়েছেন তিনি। একাই সাতটা গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলেন, বল রিকোভারি করেছেন আটবার। বলতে গেলে, তাঁর বীরত্বই মূলত জার্মানির সাথে পুরো নব্বই মিনিট জুড়ে লড়াইয়ে রেখেছিল হাঙ্গেরিকে।
বসনিয়াকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দেয়ার পর হাঙ্গেরির বিপক্ষে ম্যাচটা ছিল কেবলই আনুষ্ঠানিকতা, জার্মানি তাই মাঠে নেমেছিল নয় নয়টা পরিবর্তন নিয়ে। সহজ বাংলায় বললে দ্বিতীয় সারির একাদশ নিয়ে হাঙ্গেরির মুখোমুখি হয়েছিল তাঁরা; সেটার প্রভাব অবশ্য খেলায় পড়েছিল।
প্রথমার্ধে গোলমুখে কোন শটই নিতে পারেনি জুলিয়ান নাগেলসম্যানের শিষ্যরা। উল্টো দাপট দেখিয়েছিল স্বাগতিকরা। অপ্রত্যাশিত দৃশ্য কিছুটা পাল্টেছে দ্বিতীয়ার্ধে; জামাল মুসিয়ালা, কাই হাভার্টজ আর ফ্লোরিয়ান উর্টজকে মাঠে নামানোর পর। গোলও এসেছে খানিক সময় পরে, স্লটারবেকের ডাইভিং হেডার গোলরক্ষক ফিরিয়ে দিলে রিবাউন্ডে জালের ঠিকানা খুঁজে নেন ফেলিক্স নেচা। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে এটিই তাঁর প্রথম গোল।
জার্মানি অবশ্য নিজেদের দুর্ভাগা ভাবতেই পারে; শেষ মুহূর্তে পেনাল্টি হজম তো আছেই, এর আগে জুলিয়ান ব্র্যান্ডটের গোল বাতিল হয়েছে অফসাইডের কারণে। হাভার্টজও বাম পায়ের ভলিতে গোল আদায় করেই নিয়েছিলেন প্রায়, কিন্তু বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় গোলবার।
তবে হাঙ্গেরিও চাইলে নিজেদের দুর্ভাগা ভাবতে পারে, নুবেল পাঁচ পাঁচটা সেভ দিয়েই তো আটকে রেখেছিল তাঁদের। বিশেষ করে ৬৭ মিনিটের মাথায় ওয়ান ভি ওয়ান পরিস্থিতিতে ভারগার শট যেভাবে ঠেকিয়ে দিলেন তিনি সেটা আফসোসে পোড়াবে স্বাগতিক সমর্থকদের।