লিটন দাস বাদ পড়েছেন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলবেন না শেষ ওয়ানডে। বাদ তিনি পড়তেই পারেন। সর্বশেষ দুই ওয়ানডের দু’টোতেই ডাকের শিকার হওয়ার পর ৫০ ওভারের ক্রিকেটে তাঁর বাদ পড়াটাই যৌক্তিক। দলে এসেছেন টি-টোয়েন্টির পারফরমার জাকের আলী।
নির্বাচকরা এখানে সাধুবাদ পেতেই পারেন। কঠিন সিদ্ধান্ত – এটা নিয়ে আলোচনা হবেই। তবে, প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর কথায় আপত্তি করতে পারেন লিটন দাস।
লিপু বলেছেন, ‘ সাদা বলে সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় নিয়েই আমরা এই পরিবর্তন আনছি। আর দলে আরো দুজন সামর্থ্যবান ওপেনার থাকার বিষয়টিও আমাদের মাথায় রয়েছে।’
সমস্যা এই ‘সাদা বল’ কথাটায়। বিবেচনাটা এখানে শুধু ওয়ানডেই রাখা উচিৎ। কারণ, পরিসংখ্যান বলঠেছ ২০২৩ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে লিটনই বাংলাদেশের সেরা ব্যাটার।
শেষ ১২ টি-টোয়েন্টি ইনিংসে লিটনের রান ৩৬৬। গড় ৩৬.২৭। স্ট্রাইক রে ১৩৪.০৬। এই সব গুলোই আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পাশমার্ক পাচ্ছে। সর্বশেষ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও (বিপিএল) ছিলেন ফর্মে। ফলে সব রকমের সাদা বলের ক্রিকেটে তিনি ফর্মে নেই – সেটা বলার সুযোগ নেই।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে তিনি একাদশের বাইরে থাকবেন – এটা অনুমিতই। তবে, একেবারে স্কোয়াডের বাইরে তাঁকে ঠেলে দেওয়াটা নির্বাচকদের পক্ষ থেকে কঠিন সাজাই বলা উচিৎ।
কারণ, বিশ্বকাপেও লিটন ছিলেন বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। হ্যাঁ, বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স যে রকম ছিল – তাতে এটাকে বড় কোনো প্রাপ্তি মানার উপায় নেই।
তবে, নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ওয়ানডেতে লিটন ওপেনিংয়ে নন, চার নম্বরে খেলেছেন। বিশ্বকাপের পর ওপেনিংয়ে ফিরেছেন এই শ্রীলঙ্কা সিরিজ দিয়েই। তবে, সেই ফেরাটাও স্থায়ী হল না।
বাদ তিনি পড়তেই পারেন, সর্বশেষ ১০ ওয়ানডেতে তাঁর কোনো হাফ সেঞ্চুরি নেই। ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করেছেন দুই বছরেরও বেশি সময় আগে।
ফলে, নির্বাচকদের প্রক্রিয়া নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করার সুযোগ নেই। তবে, টি-টোয়েন্টি আর ওয়ানডেকে গুলিয়ে ফেলাটায় আপত্তি তোলাই যেতে পারে।
মজার ব্যাপার হল, লিটনের জায়গায় আসা জাকের আলীকে আবার নেওয়া হয়েছে, টি-টোয়েন্টি সিরিজের পারফরম্যান্স মাথায় রেখে। ফলে, আসলেই কি সাদা বলের দুই ফরম্যাটকে এক করে দেখছেন কি না নির্বাচকরা – সেটা বোঝার দরকার। আর তাঁদের এমন বক্তব্য বা কর্মকাণ্ড স্যোশাল মিডিয়ার উত্তাপের আগুনেও ঘিঁ ঢালার জন্য যথেষ্ট।