বাইশ গজের চক্রটা গোল করে আঁকলেন ব্যাট দিয়ে। পতাকা পুঁতে ফেলার মত ব্যাটটা ঠোকালেন মাঠে। ঝাঁকড়া চুলের ক্রাইসিসম্যানের শরীরি ভাষা তখন একটা কথাই বলছিল, ‘এটা আমার জঙ্গল, এই জঙ্গলে আমিই রাজা!’
ব্যাঙ্গালুরর চিন্নাস্বামীতে লোকেশ রাহুলের রাজকীয় প্রত্যাবর্তন দেখল, সেটাও আবার খোদ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে।আদরের চেনা ছেলেকে যেন নতুন রূপে দেখল ব্যাঙ্গালুরু। শান্ত মুখে ব্যাট হাতে আগুনের ঝাঁজ দেখালেন ‘বীর’ রাহুল। ব্যাট হাতে এক অনবদ্য ইনিংস খেললেন —৯৩ রান, অপরাজিত, মাত্র ৫৩ বলে।
ছক্কা দিয়ে ম্যাচ শেষ করলেন, ব্যাঙ্গালুরুকে ছিটকে দিলেন। যুদ্ধ শেষে বর্ম খুলে বললেন, এই মাঠ আমার, এখানে আমিই রাজা। রাজাকে হারানো এত সহজ নয়।
দিল্লী ক্যাপিটালস ছয় উইকেটে হারিয়ে দিলো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুকে। দিল্লী বিরাট কোহলিদের বেঁধে ফেলেছিল ১৬৩ রানে। তবে, আসল কাহিনী শুরু হয় দিল্লির ব্যাটিংয়ে। একের পর এক উইকেট পড়ছিল, মনে হচ্ছিল পথটা কঠিন হবে। কিন্তু তখনই সামনে এলেন লোকেশ রাহুল।
যেন এক পুরোনো নাটকের নায়ক—নিজের শহরে, নিজের মঞ্চে। ব্যাট হাতে স্টেডিয়ামের প্রতিটি কোণা চেনে এমন আত্মবিশ্বাস নিয়ে, তিনি শুরু করলেন এক অপূর্ব ইনিংস।
শেষ ১৮ বলে দরকার ছিল ১৮ রান। রাহুল দেখালেন, বড় মঞ্চে কীভাবে শেষটা করতে হয়। টানা দুই ছয়, একটি চার—তারপরই জয়ের ছক্কা! আর তার পরের দৃশ্যটা লেখা হয়ে গেল ইতিহাসের পাতায়। বুকের ওপর গর্জে ওঠা মুষ্ঠি। ব্যাট দিয়ে বললেন – এই মাঠ, এই শহর’ – একটা নীরব উদযাপন এতটা সরব হতে পারে – সেটা কে ভেবেছিল কবে!
ম্যাচ শেষে রাহুল বললেন, ‘উইকেটটা একটু ট্রিকি ছিল, কিন্তু কিপিং করার সময় বুঝতে পেরেছিলাম কীভাবে বল আচরণ করছে। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লেগেছে। আমার শট কোথায় যাবে, তা জানতাম। এটা আমার মাঠ, এটা আমার শহর। জানতাম, কীভাবে খেলতে হয় এখানে।’
হ্যাঁ, লোকেশ রাহুল সবই জানেন, সবই পারেন!