এক ইনিংসে তিন শতক, তবুও দলীয় রান স্কোরবোর্ডে একেবারেই বেমানান। টেস্ট ক্রিকেটে ক্ষণে ক্ষণে বদলে যায় সব হিসাব। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ভারত যেন সে কথাই প্রমাণ করলো। দেখে নেওয়া যাক এমন চারটি ইনিংস, যেখানে তিনটি শতক থাকলেও দলীয় সংগ্রহ ছিল তুলনামূলক কম।
- ওয়েস্ট ইন্ডিজ – ৪৯৭ বনাম ভারত
২০০২ সালের অক্টোবর-নভেম্বরে ইডেন গার্ডেন্সে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় টেস্টে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে তিন ব্যাটারের ব্যাট থেকে সেঞ্চুরি আসে। ওপেনার ওয়েভেল হাইন্ডস ২০০ বলে করেন ১০০ রান। শিবনারায়ণ চন্দরপল করেন ইনিংস সর্বোচ্চ ১৪০। আর মার্লন স্যামুয়েলস খেলেন ১৮২ বলে ১০৪ রানের ইনিংস। তবুও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪৯৭। সেই ম্যাচটি অবশ্য ফলাফলশূন্য থাকে।
- অস্ট্রেলিয়া – ৪৯৪ বনাম ইংল্যান্ড
১৯২৬ সালে অ্যাশেজের তৃতীয় টেস্টে হেডিংলিতে ৪৯৪ রান তোলে অস্ট্রেলিয়া। ওপেনিং পার্টনার বিল উডফুল ও তিন নম্বরে নামা চার্লস ম্যাকার্টনি করেন দৃষ্টিনন্দন শতক এবং গড়েন ২৩৫ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি। নম্বর পাঁচে ব্যাট করতে নামা আর্থার রিচার্ডসন করেন ১০০ রান। অথচ পুরো ইনিংসে আর কেউ পঞ্চাশও করতে পারেননি! ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত রূপ নেয় ড্রতে।
- দক্ষিণ আফ্রিকা – ৪৭৫ বনাম ইংল্যান্ড
২০১৬ সালের জানুয়ারিতে সেঞ্চুরিয়নে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে মুখোমুখি হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াদের ব্যাটিং ইনিংসে স্টিফেন কুক ও তিন নম্বরে নামা হাশিম আমলা তুলে নেন অসাধারণ শতক। ইনিংসের শেষদিকে সব আলো কাড়েন উইকেটকিপার-ব্যাটার কুইন্টন ডি কক—মাত্র ১২৮ বলে করেন অপরাজিত ১২৯ রান। তবুও দলের রান শেষ পর্যন্ত দাঁড়ায় মাত্র ৪৭৫ রানে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ম্যাচটিতে ২৮০ রানের বড় জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
- ভারত – ৪৭১ বনাম ইংল্যান্ড
তিনটি ডাক, দুটি এক রান, অপরাজিত তিন ও একটি ১১—এসব থাকা সত্ত্বেও ভারত দাঁড় করায় ৪৭১ রানের সংগ্রহ! হেডিংলিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে এমনই অদ্ভুত পরিসংখ্যান গড়ে ভারত।
ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল করেন ১০১, তাঁর সঙ্গে ছিলেন অধিনায়ক শুভমন গিল, যিনি ১৪৭ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন। এরপর লাইমলাইটে আসেন উইকেটরক্ষক ঋষাভ পান্ত, ১৭৮ বলে খেলেন ১৩৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। এছাড়াও ওপেনিংয়ে কেএল রাহুল করেন ৪২ রান। স্কোরবোর্ডে তিন শতক থাকার পরেও শেষ পর্যন্ত ভারতের ৪৭১ রান স্কোরবোর্ডকে কিছুটা অপূর্ণই রেখেছে।
এই ইনিংসগুলো আবারও প্রমাণ করে দেয়, ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সাফল্য যতই জ্বলজ্বলে হোক, দলীয় সাফল্যের জন্য তা যথেষ্ট নাও হতে পারে