অবসরের হিড়িক লেগেছে। অবশ্য সেটাই যে ছিল অবধারিত। সাকিব আল হাসান টি-টোয়েন্টি আর টেস্টকে বিদায় জানিয়েছেন। মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল তো সেই কবেই ছেড়েছেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। এদফা পঞ্চপাণ্ডবের শেষ সদস্য হিসেবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ জানিয়ে দিচ্ছেন নিজের সিদ্ধান্ত। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের অধ্যায়কে আর এগিয়ে নিতে চান না তিনি।
সুদীর্ঘ একটা ক্যারিয়ার তার। ১৭ বছরের বেশি সময় ধরে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটই খেলে গেছেন তিনি। বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সময় জুড়ে বিচরণ তার টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট প্রাঙ্গণে। বেশ উত্থান-পতনের একটা ক্যারিয়ারকে অবশেষে থামিয়ে দিলেন। অবশ্য থামতে তাকে হতোই।
বয়সের ভারে নুইয়ে যেতে হয়েছে তাকে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অভিজ্ঞতার চাইতেও তারুণ্য প্রাধান্য পায় বেশি। তবে অভিজ্ঞতা যদি কার্যকর হয় তবে তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার সুযোগ নেই। কিন্তু মাহমুদউল্লাহ কার্যকর কোন ইনিংস শেষ কবে খেলেছেন, তা মনে করা দায়।
ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে এসে, অনেক বেশি সমালোচনা সইতে হয়েছে মাহমুদউল্লাহকে। কেননা তিনি অনেক বেশি টাইমিং নির্ভর খেলোয়াড়। হ্যান্ড-আই কম্বিনেশন এখন আর ঠিকঠাক কাজ করছে না। সেজন্য ব্যাট হাতে রানের দেখাও তিনি পাচ্ছেন না। পেলেও তা দলের কাজে আসছে না। ব্যয় হয় মূল্যবান বল ও গুরুত্বপূর্ণ সময়।
তাছাড়া ফিল্ডিংয়েও খানিক স্থবিরতা পরিলক্ষিত হয়। এসবকিছুর কারণ সেই বয়সের ভার। দীর্ঘদিন ধরে খেলে যাওয়ার ক্লান্তিও নিশ্চয়ই রয়েছে। এসব কিছু মিলিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটটা আর ঠিক মত খেলতে পারছিলেন না মাহমুদউল্লাহ। অগত্যা এবার তিনি সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন।
যদিও সিদ্ধান্তটা আরেকটু আগেও নিতে পারতেন তিনি। তখন হয়ত দর্শক-সমর্থকদের রোষানলে পড়তে হতো না মাহমুদউল্লাহকে। তবে দোষ আর অপারগতা ছাপিয়ে তাকে এবার বিদায় জানাতে হচ্ছে। বাংলাদেশের ক্রান্তিলগ্নে তিনি বহুবার ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। বেশকিছু স্মরণীয় জয়ের কাণ্ডারি তিনি। সেসব স্মৃতি মুছে ফেলার নয়।
শেষবেলায় বয়সের ভারে নুইয়ে পড়া মাহমুদউল্লাহকে নিশ্চয়ই মনে রাখতে চাইবেন না আপনি। আপনার মনে রয়ে যায় ২০১৫ বিশ্বকাপের জোড়া সেঞ্চুরি, নিদাহাস ট্রফিতে হাঁকানো সেই ছক্কা, সেই সাথে বিপর্যয়ের মুখে সাইলেন্ট কিলারের আস্থা। যদিও রিয়াদকে ঘিরে অধিকাংশই রয়েছে ওয়ানডে ক্রিকেটের স্মৃতি। সেটাও যে বেশিদিন চালিয়ে যাবেন না তিনি।