সংশয় ছিল, বিতর্ক ছিল – এবারের বিশ্বকাপে শ্রেয়াস আইয়ারের টানা জায়গা পাওয়া নিয়ে অসন্তোষ ছিল। টুর্নামেন্টের শুরুর ছয় ম্যাচ তাঁর ছন্দহীন ব্যাটিং সেই সমালোচনার মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে সব প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে তিনি ফিরেছেন চেনা রূপে, সেরা ছন্দে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫৬ বলে ৮২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলার পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। এবার নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে করেছেন ৯৪ বলে ১২৮ রান। ১০ চার আর পাঁচ ছয়ে সাজানো এই ইনিংসে ভর করেই ৪১০ রানের পাহাড়সম পুঁজি পেয়েছে টিম ইন্ডিয়া।
১৮তম ওভারে রোহিত শর্মা সাজ ঘরে ফিরে যেতেই বাইশ গজে আসেন শ্রেয়াস আইয়ার। শুরুতে স্ট্রাইক রোটেট করে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন, এরপর শট খেলেছেন মনের মত করে। তাতেই ৪৮ বলে ফিফটি তুলে নেন তিনি।
কোহলি, গিলদের মত অবশ্য অর্ধশতক পূর্ণ করেই আউট হয়ে যাননি এই তরুণ। লোকেশ রাহুলকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে গিয়েছেন দুর্বার গতিতে। সময়ের সাথে রান তোলার গতিও বাড়িয়েছেন। তাই তো সেঞ্চুরির জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি, মাত্র ৮৪ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়ে ফেলেন এই ডানহাতি।
এরই মধ্য দিয়ে আট বছর পর ভারতের মিডল অর্ডার ব্যাটার হিসেবে বিশ্বকাপে শতকের দেখা পান তিনি, এর আগে সর্বশেষ ২০১৫ সালে সুরেশ রায়না সেঞ্চুরি করেছিলেন। শেষপর্যন্ত অপরাজিত থেকে ১২৮ রানের করেন আইয়ার। এই নিয়ে শেষ তিন ম্যাচে টানা তিনটি পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস এসেছে এই তারকার ব্যাট থেকে। সব কয়টি খেলেছেন ম্যাচ পরিস্থিতি অনুযায়ী।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টপ অর্ডারের গড়ে দেয়া ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে টি-টোয়েন্টি মেজাজে খেলেছিলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচে নিজেই বড় রানের ভিত তৈরি করে দিয়েছিলেন আর নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে তো পেয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম বিশ্বকাপ সেঞ্চুরি। এছাড়া পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম হাফসেঞ্চুরির দিনেও দলের জয় নিশ্চিত করেছিলেন তিনি।
তবে শ্রেয়াস আইয়ার ভাল খেললেও কেন যেন তেমন আলোচনা হয় না; কোহলি কিংবা রোহিত তো অনেক দূর, গিলের মত লাইমলাইটও পাচ্ছেন না তিনি। কিন্তু নীরবে নিজের কাজটা ঠিকই করে যাচ্ছেন; এখন পর্যন্ত তিন অর্ধশতক আর এক শতকের দেখা পেয়েছেন। মিডল অর্ডারে এমন ধারাবাহিক পারফর্ম করা হয়তো শ্রেয়াস আছেন বলেই সম্ভব হয়েছে।