তুমি কি কখনো একটা টাকার বস্তাকে গোল করতে দেখেছো? – ইয়োহান ক্রুইফের কথাটা এখন বোধহয় সবচেয়ে বেশি মিলে ম্যানচেস্টার সিটির সাথে। কাড়ি কাড়ি টাকা, প্রতিটা পজিশনে বিশ্বসেরা ফুটবলার, ইতিহাসের অন্যতম সেরা কোচ; কিন্তু কোন কিছুই তাঁদের ত্রাতা হয়ে উঠতে পারছে না। সবশেষ দশ ম্যাচে তাঁরা জিতেছে স্রেফ একটা ম্যাচ!
কারণটা অবশ্য সবারি জানা, ইনজুরির কারণে গত মৌসুমের লিগ জেতা দলটা এখন একাদশ গড়তেই হিমশিম খাচ্ছে। আর এর নেপথ্যে মূলত একাডেমিকে গুরুত্ব না দেয়া, সাম্প্রতিক সময়ে তাঁরা একাডেমিকে ব্যাকআপ তৈরির স্কুল ভাবার পরিবর্তে টাকা কামানোর উপায় ভাবতে শুরু করেছে।
গত তিন বছরে শুধুমাত্র একাডেমির ফুটবলার বিক্রি করেই ১৭৬ মিলিয়ন ইউরো আয় করেছে ম্যানসিটি। এর ফলে রেভেনিউ বেড়েছে ঠিকই কিন্তু স্কোয়াড ডেপথ কমেছে। নিশ্চিতভাবেই তাই এমন সিদ্ধান্তকে ভুল বলা যায়।
সিটিজেনদের মূল দলে আর্লিং হাল্যান্ড ছাড়া গোল করার মত কেউ নেই বললেই চলে। অথচ তাঁদের হাতে গড়ে উঠা কোলে পালমার চেলসির তো বটেই প্রিমিয়ার লিগেরই বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা গোলদাতা। ফিল ফোডেন, জেরেমি ডকু কিংবা ম্যাথিউস নুনেজ কেউই আসলে তাঁর সঙ্গে তুলনা করার পারফরম করতে পারছেন না। অথচ ডকুকে দলে ভেড়ানোর জন্য তাঁকে ছেড়ে দিতে দুইবার ভাবেনি ক্লাব ম্যানেজম্যান্ট।
পালমার যেমন ডি ব্রুইনার উত্তরসূরী হতে পারতেন তেমনি রদ্রির উত্তরসূরী হতে পারতেন রোমিও লাতভিয়া। চেলসির হয়ে চলতি মৌসুমে যেভাবে খেলছেন তিনি তাতে সিটিজেনরা আক্ষেপের আগুনে পুড়ে যেতেই পারে। তাছাড়া রদ্রির চোটের কারণে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে দলটির স্কোয়াডে সেটাও পূরণ করতে পারতেন এই তরুণ।
এদের ছাড়া পেদ্রো পোররো, ইয়ান কৌতার মতন প্রতিভাবানদের ম্যানচেস্টার সিটি ছেড়ে দিয়েছে স্রেফ অর্থের জন্য। এদের অনেকের মূল দলে অভিষেকই হয়নি; অথচ একটু সুযোগ দিলে ম্যানসিটি পেতে পারতো একাধিক তারকাকে, যাদের ওপর বিপর্যয়ের সময়েও ভরসা করা যায়।
সেক্ষেত্রে হয়তো চলমান দুরাবস্থা এতটা তীব্র হতো না গার্দিওলার, প্রয়োজনমত ফুটবলার নিয়ে ভিন্ন কোন পরিকল্পনা আঁটতে পারতেন তিনি।