প্রোটিয়া রূপকথার স্বপ্ন সারথি

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলাটা নিঃসন্দেহে দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট ইতিহাসের সেরা অর্জন। আর এই অর্জনের কথা যতবার আলোচনায় উঠে আসবে ততবার উঠে আসবে তাঁর নাম। তবে স্রেফ ফাইনাল খেলে নিশ্চয়ই তুষ্ট থাকতে চাইবেন না তিনি, জিততে চাইবেন সেটা। আর সেজন্য যা করতে হবে তাঁকে তাই করবেন!

আজীবন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে চোক করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা – চোকার্স ট্যাগটা তো আর এমনি এমনি গায়ে লাগেনি। আরো একবার সেই অভিজ্ঞতা প্রায় হয়েই যাচ্ছিলো তাঁদের। জিতলেই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল এমন ম্যাচে স্রেফ ১৪৮ রানের লক্ষ্য, অথচ ৯৯ রানে আট উইকেট হারিয়ে লেজেগোবরে অবস্থা।

তবু শেষমেশ জিতেছে দলটা, নিজেদের ভাগ্যকে বোকা বানিয়ে আদায় করে নেয়া জয়টার অন্যতম নায়ক মার্কো ইয়ানসেন। নবম উইকেট জুটিতে কাগিসো রাবাদার সঙ্গে পঞ্চাশোর্ধ রানের জুটি গড়েছেন। মোহাম্মদ আব্বাস, নাসিম শাহদের উত্তপ্ত বোলিংয়ের বিপরীতে তাঁদের এই জুটি সম্ভবত প্রোটিয়াদের টেস্ট ইতিহাসের সেরা স্মৃতিগুলোর একটি।

৯৬/৪ থেকে ৯৯/৮ – দুঃস্বপ্নের মত সময়টা খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন এই অলরাউন্ডার। এরপর নিজে সামলেছেন পাক পেসারদের ঝড়, শেষপর্যন্ত দলকে জিতিয়ে তবেই মাঠ ছেড়েছেন। ধৈর্য আর গেমসেন্সের দুর্দান্ত একটা প্রদর্শনী হয়ে রইলো তাঁর ব্যাটিং।

এর আগে বল হাতেও পাকিস্তানের বিশাল ক্ষতি করেছেন এই দীর্ঘদেহী ক্রিকেটার। বাবর আজম আর সৌধ শাকিলের জুটিতে দারুণভাবে এগুতে থাকা পাকিস্তান থমকে গিয়েছিল তাঁর সামনে। উপরের সাত ব্যাটারের ছয়জনকেই তিনি একা হাতে প্যাভিলিয়নে পাঠিয়েছিলেন। তাঁর এমন বিধ্বংসী বোলিংয়ের কারণেই প্রতিপক্ষের লিড দেড়শ’র গণ্ডি পেরুতে পারেনি।

একজন সত্যিকারের অলরাউন্ডার কি করতে পারেন সেটাই বাইশ গজে দেখিয়ে দিলেন ইয়ানসেন। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পুরো চক্র জুড়েই তিনি অবশ্য ধারাবাহিক পারফর্ম করেছেন।

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলাটা নিঃসন্দেহে দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট ইতিহাসের সেরা অর্জন। আর এই অর্জনের কথা যতবার আলোচনায় উঠে আসবে ততবার উঠে আসবে তাঁর নাম। তবে স্রেফ ফাইনাল খেলে নিশ্চয়ই তুষ্ট থাকতে চাইবেন না তিনি, জিততে চাইবেন সেটা। আর সেজন্য যা করতে হবে তাঁকে তাই করবেন!

Share via
Copy link