আফগান আবেগ গুড়িয়ে ইয়ানসেন দেখিয়েছেন বাস্তবতা

আবেগ আর বাস্তবতার ফারাকটা টের পেল আফগানিস্তান।

আবেগ আর বাস্তবতার ফারাকটা টের পেল আফগানিস্তান। গোটা দুনিয়া তাদেরকে দেখতে চেয়েছিল সেমিফাইনালে। তারা সে অধরা স্বপ্নকে বাস্তবে রুপান্তরিত করেছে বটে। মনের গহীন কোণে উঁকি দিয়েছিল ফাইনালের মৃদু আশা। তাতে একপ্রকার স্টিমরোলার চালাল দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশেষ করে মার্কো ইয়ানসেন।

একটা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছে আফগানরা। রোমাঞ্চ ছড়িয়ে রুপকথার একটা পথ ধরে তারা পৌঁছেছে সেমিফাইনালে। যে রাস্তার নেতৃত্ব দিয়েছেন দলটির ওপেনাররা। পুরো টুর্নামেন্টে ওপেনারদের কল্যাণেই শুভ সূচনা পেয়েছে দলটি। সেই জুটিই ছিল আফগানিস্তানের শক্তির জায়গা।

এই শক্তিই যে তাদের দূর্বলতা সেটা বেশ ভালভাবেই জানা ছিল প্রোটিয়া বোলারদের। তাদের প্রধান লক্ষ্যই হয়ত ছিল আফগান ওপেনিং জুটির যতদ্রুত সম্ভব পতন ঘটানো। সে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে ইয়ানসেন। আফগানিস্তানের টপ অর্ডার গুড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।

প্রথমে শিকার করেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। এবারের টুর্নামেন্টের গুরবাজ ছিলেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের একজন। সেই উইকেট ইয়ানসেন তুলে নেন ইনিংসের প্রথম ওভারেই। স্লিপ অঞ্চলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন গুরবাজ। ঠিক তখন থেকেই হয়ত আফগান রুপকথার গোধুলি আলোর শুরু।

দ্বিতীয় উইকেটও গিয়েছে মার্কো ইয়ানসেনের পকেটে। সেমিফাইনালে যেতে হলে সুপার এইটের শেষ ম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিল না রশিদ খানদের। বাংলাদেশের বিপক্ষে তাই অভিনয়ের আশ্রয়ও নিয়েছিলেন গুলবাদিন নাইব। সেই নাইবের স্ট্যাম্প উপড়ে ফেলেন ইয়ানসেন। প্রবল হতে থাকে রুপকথার সূর্যাস্ত।

তাতে করে স্বল্প রানে থমকে যাওয়ার শঙ্কাও হয়েছে প্রবল। শেষ অবধি হয়েছেও তাই। আরেক ওপেনার ইব্রাহিম জাদরানও ফিরে গেছেন দ্রুতই। কাগিসো রাবাদার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। পাওয়ার প্লে-তে আবারও আঘাত করে বসেন ইয়ানসেন। নানগেলিয়া খারোতে তৃতীয় উইকেটে পরিণত হন। আরেকপ্রান্তে রাবাদাও চালিয়েছেন নিজের ত্রাস।

যার ফলে পাওয়ার-প্লে এর মধ্যে ৫টি উইকেট হারিয়ে ফেলে আফগানরা। যা কি-না টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পাওয়ার-প্লে-তে হারানো সর্বাধিক উইকেট। সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়ানো হয়নি মোহাম্মদ নবীদের। আরও একটি রেকর্ড গড়ে ফেলে তারা। বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে সর্বনিম্ন দলীয় রান করেছেন আফগানরা।

স্রেফ ৫৬ রানে অলআউট হয়ে গেছেন তারা। সেখানেই মূলত রুঢ় সত্য়ের মোলাকাত হয় আফগানদের। স্বপ্নের সেমিফাইনালেই থেমে যাচ্ছে তাদের যাত্রা। প্রাপ্তির খাতাটা এখানেই থেমে যাচ্ছে তাদের। সেমিফাইনালের শুরতেই আবেগের মোলায়েম চাদর জাপ্টে ধরেছিল তাদেরকে। তাতে অবশ্য কনকনে বাস্তবতার ঠান্ডা ঠেকানো যায়নি।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...