ক্যাচ মিস, দৃষ্টিকটু ভুল রিভিউ ও শ্রীলঙ্কান ব্যাটারদের দাপট। চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনকে সংক্ষিপ্ত আকারে এভাবেই বর্ণনা করা যায়। প্রথম দিনটায় চার উইকেটর দেখা পেলেও তা মোটেও বাংলাদেশের জন্যে ছিল না ভাল দিন। নিজেদের ভুলেই অবশ্য বেশ খানিকটা ব্যাকফুটে রয়েছে বাংলাদেশ।
সিলেট টেস্টের একাদশে থেকে দুই পরিবর্তন নিয়ে সাগরিকার বুকে খেলতে নামে বাংলাদেশ। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করবার সিদ্ধান্ত নেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক ধনাঞ্জয় ডি সিলভা। সেই সিদ্ধান্তকে যথাযথ প্রমাণ করবার প্রয়াশে শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনারকে সহয়তা করেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররাই। উদ্বোধনী দুই ব্যাটারের দুইটি ক্যাচ পড়েছে ফিল্ডারদের হাতগলে।
প্রথম সেশনের একেবারের শুরুর দিকেই স্লিপ অঞ্চলে ক্যাচ তুলে দেন নিশান মাদুসকা। একেবারে সহজ হাতের ক্যাচ মাটিতে ফেলে দেন মাহমুদুল হাসান জয়। এরপর আর বাংলাদেশী কোন বোলার চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি লঙ্কানদের উপর। লাইফ পাওয়া মাদুসকা তুলে নেন ফিফটি। দুই ওপেনারের ৮৮ রানের জুটি মধ্যাহ্ন বিরতির আগে অবধি থাকে অক্ষত থাকে।
এর আগে ইনিংসের ২২ তম ওভারে আরও এক ক্যাচ মিস। আরেক ওপেনার দিমুথ করুণারত্নে শট বলে ক্যাচ তুলেছিলেন ডিপ ফাইন লেগে। আগের টেস্টে ঠিক একই রকমভাবে আউট হয়েছিলেন করুণারত্নে। তবে এবার তিনি বেঁচে ফিরলেন। সাকিব আল হাসান বাউন্ডারি লাইনে সে ক্যাচ ধরতে ব্যর্থ হন। এমনকি সে বলে ছয় রানও যুক্ত হয়ে করুণারত্নের নামের পাশে।
তবে মধাহ্ন বিরতির পরপরই নিজেদের পক্ষে মোমেন্টাম আসার আভাস পেয়েছিল বাংলাদেশ। ভুল বোঝাবুঝির কারণে রানআউট হয়ে যান নিশান মাদুসকা। এরপর শ্রীলঙ্কাকে চেপে ধরবার সুযোগ অবশ্য ছিল। কিন্তু তাতেও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বাংলাদেশের বোলাররা। কুশল মেন্ডিসকে সাথে নিয়ে বেশ সাবলীল ভঙ্গিমায় রান তুলতে থাকেন করুণারত্নে।
চা বিরতির আগেই ২০০ রানের গণ্ডি পেরিয়ে যায় লঙ্কানদের। সে যাত্রায় মেন্ডিস ও করুণারত্নে জুটি গড়েন ১১৪ রানের। দুই ব্যাটারই সহজাতভাবে নিজেদের ব্যাট চালিয়ে গেছেন। তাদের জন্যে বিন্দুমাত্র আতঙ্কের কারণ হতে পারেনি বাংলাদেশের কোন বোলার। তবে চা বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে হাসান মাহমুদের শিকারে পরিণত হন লঙ্কান ওপেনার।
অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলটা ব্যাটের ভেতরের খোঁচায় আঘাত হানে স্ট্যাম্পে। তাতে করুণারত্নের ২২৯ মিনিটের ইনিংসের হয় অবসান। ৮৬ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। এর পর খেলা গড়া দিনের তৃতীয় সেশনে। সেখানেও বাংলাদেশ যে আধিপত্য বিস্তার করতে পেরেছিল তা নয়। তবে সাকিব আল হাসান বল হাতে ছন্দে ফেরার আভাস অন্তত দিয়েছেন। ভয় ধরানো কুশল মেন্ডিসকে তিনিই ফিরিয়েছেন।
স্লিপে থাকা মেহেদী হাসান মিরাজ অন্তত ভুল করেননি। ক্যাচ লুফে নিয়েছেন দারুণ দক্ষতায়। ৯৩ রানে আউট হন কুশল। স্লিপ অঞ্চলে কি করে ক্যাচ ধরতে হয় তা অবশ্য মিরাজ আরও একবার দেখিয়েছেন। হাসান মাহমুদের বলে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের ক্যাচ লুফে নেন মিরাজ। তাতে করে শেষ সেশনে শ্রীলঙ্কার চতুর্থ উইকেটের পতন ঘটে। নতুন বল হাতে আসা মাত্রই হাসান পেয়ে যান উইকেটের দেখা।
এরপর আর বিপদকে বেশি ঘনিভূত হতে দেননি দীনেশ চান্ডিমাল ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। তাদের ২৫ রানের জুটিতে দিন শেষ করে শ্রীলঙ্কা। ৩১৪ রানের স্বস্তি নিয়েই দ্বিতীয় দিন খেলতে নামবে ডি সিলভার দল। হাতে রয়েছে তাদের আরও ছয়টি উইকেট। স্বাভাবিকভাবে পাহাড়সম সংগ্রহের দিকেই অগ্রসর হবে শ্রীলঙ্কা। সাগরিকার উইকেট যে বেজায় ব্যাটিং সহায়ক।