বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের প্লেয়ার ড্রাফট শেষে তারকা খেলোয়াড়ে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা দলটির নাম মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী। সে অর্থে তারকা কোন খেলোয়াড় নেই। বর্তমান জাতীয় দলের নিয়মিত খেলোয়াড় বলতে এক মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন (যদিও, গোড়ালির ইনজুরির কারণে তিনি প্রথম দুই-তিন ম্যাচ খেলবেন না) আর নাজমুল হোসেন শান্ত। সবচেয়ে কম খরচে তৈরি করা দলটিতে ‘এ’ ক্যাটাগরির কোন খেলোয়াড় নেই। প্লেয়ার ড্রাফটে সুযোগ পেয়েও তারা মাহমুদউল্লাহ কিংবা মুস্তাফিজুর রহমানকে দলে নেয়নি। দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীতে অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন, শেখ মেহেদি হাসান, ফরহাদ রেজাদের নিয়ে তারুণ্য ও অভিজ্ঞতার মিশেলে দল গড়ার চেষ্টা করা হয়েছে। ব্যাটিংয়ে দলটির ভরসা মোহাম্মদ আশরাফুল, নাজমুল হোসেন শান্ত, ফজলে রাব্বি, রনি তালুকদার, নুরুল হাসান সোহান, রকিবুল হাসান। যদিও মোহাম্মদ আশরাফুল এবং রকিবুল হাসান কতটা ভরসা হয়ে উঠতে পারেন সে ব্যাপারে যথেষ্ঠ সন্দেহ রয়েছে।
অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বেশ খুশি দল নিয়ে। তিনি বলেন, বেশ ব্যালান্সড একটা দল হয়েছে তারুণ্য ও অভিজ্ঞতার মিশেলে। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি পেস বোলিং দলের সম্পদ হয়ে উঠতে পারে। শেখ মেহেদি হাসানের ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি অফ স্পিনও যথেষ্ট কার্যকরী। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর কাছে দলের দাবি দায়িত্বশীল ব্যাটিং।
নুরুল হাসান সোহান স্পেশালিস্ট উইকেটরক্ষক হিসেবে আছেন। তার ব্যাটও দলের পক্ষে কথা বলতে পারে। অভিজ্ঞ ফরহাদ রেজার কাছে দলের দাবি দায়িত্বশীল পারফরম্যান্স। ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে বরাবরই তিনি বড় তারকা – তাই তার ওপর বাড়তি নজর থাকবে। একসময় বাংলাদেশের আশার ফুল আশরাফুল আছেন স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে।
পড়ন্ত আশরাফুল কতটা ভরসা হয়ে উঠতে পারেন, সময়ই বলবে। বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানির কাছে আরেকটি সুযোগ বলা যেতে পারে। ব্যাটসম্যান ফজলে রাব্বি আর রনি তালুকদারের কাছে পায়ের নিচের মাটি শক্ত করে তোলার সুযোগ এটি। একই কথা বলা চলে অল রাউন্ডার আনিসুল ইমন এবং পেসার রেজাউর রহমানের ক্ষেত্রে।
স্ট্যান্ডবাই উইকেটরক্ষক জাকের আলি অনিকের ব্যাটিংটাও দলের কাজে লাগতে পারে। ব্যাটসম্যান রকিবুল হাসানের ক্ষেত্রে রাজশাহী খুব বড় একটা ঝুঁকি নিয়েছে বলা চলে। কারণ, রকিবুল কখনোই পরীক্ষিত ২০ ওভারের খেলোয়াড় নন।
মিডীয়াম পেসার মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধর সুযোগ বড় মঞ্চে নিজেকে প্রমাণের। আর বাঁহাতি স্পিনার সানজামুল ইসলামের পায়ের নিচের মাটি শক্ত করার। প্রত্যেক পজিশনেই বিকল্প খেলোয়াড় থাকা এই দলের একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আর একাধিক অলরাউন্ডার থাকার কারণে ব্যাটিং ও বোলিং ভারসাম্য আসবে। আধুনিক ক্রিকেটে তথা টি-টোয়েন্টিতে অল্প ব্যাটিং অল্প বোলিং জানা অলরাউন্ডারের গুরুত্ব সবসময়েই বেশি। সেদিক চিন্তা করলে রাজশাহীর এই দলকে একেবারে পিছিয়ে রাখা যাবে না।
মিনিস্টার গ্রুপও সন্তুষ্ট রাজশাহীর এই দল নিয়ে। কোচ সারোয়ার ইমরান এই দল নিয়ে লড়াই করেই শীর্ষে যেতে চান। রাজশাহীর এই দলে বড় নাম না থাকাটাই দলের শক্তি হয়ে উঠতে পারে। সবারই তাড়না থাকবে নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার। আর কে না জানে বড় মঞ্চেই নজর কাড়া সবচেয়ে সহজ। পাদপ্রদীপের বাইরে থাকা কেউ এসে রাজশাহীকে পৌঁছে দেবেন অভিষ্ঠ লক্ষ্যে, এটাই সংশ্লিষ্টদের আশা।
কোচ হিসেবে দলের সাথে আছেন সারওয়ার ইমরান। তার অভিজ্ঞতাও দলের জন্য ফেলতে পারে ইতিবাচক ভূমিকা।
- এক নজরে মিনিস্টার রাজশাহী
স্কোয়াড: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, শেখ মেহেদী, নুরুল হাসান সোহান, ফরহাদ রেজা, মোহাম্মদ আশরাফুল, আরাফাত সানি, ইবাদত হোসেন, ফজলে রাব্বি, রনি তালুকদার, আনিসুল ইমন, রেজাউর রহমান, জাকের আলি অনিক, রকিবুল হাসান, মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ, সানজামুল ইসলাম।
কোচ: সারওয়ার ইমরান।