টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অনেকদিন ধরেই আর জাতীয় দলের পরিকল্পনাতে নেই। বাংলাদেশের হয়ে শেষ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচও খেলেছেন প্রায় এক বছর আগে। এবারের বিপিএলেও ব্যাট হাতে রান পাচ্ছিলেন না। এই ফরম্যাট থেকে যেন হারিয়ে যাবার পথই খুঁজছিলেন মোহাম্মদ মিঠুন। তবে মিরপুরের উইকেটেই আবার ফিরে আসার পথ খুঁজে পেলেন এই ব্যাটসম্যান।
বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বে রান হয়েছে অনেক। সব দলের ব্যাটসম্যানই জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেটের ফায়দা তুলেছেন। তবে মিঠুনে তাঁর ব্যাট যেন লুকিয়ে রেখেছিলেন। কোন ভাবেই রানের দেখা পাচ্ছিলেন না। তবে মিরপুরের কঠিন উইকেটই বুঝি মিঠুনের প্রিয় হয়ে উঠেছে। তাই রানে ফিরলেন ঢাকা পর্বেই।
মাসখানেক আগেই বিসিএলে এই মিরপুরে রানের বন্যা বসিয়ে দিয়েছিলেন এই ব্যাটসম্যান। করেছিলেন ডাবল সেঞ্চুরিও। এছাড়া ওয়ানডে দলে তাঁকে আবার ফিরিয়ে আনার ব্যাপারেও আলোচনা উঠেছিল। জানা যায়, ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল নাকি মিঠুনকে তাঁর ব্যাটিং লাইন আপে পেতে চাইছেন। যদিও সাদা বলের ক্রিকেটে একেবারেই রানের দেখা পাচ্ছিলেন না তিনি।
বিসিএলের ওয়ানডে ভার্শনে সিলেটে দুই ম্যাচ খেলেও নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি। এরপর বিপিএলে খেলছেন সিলেট সানরাইজার্সের হয়ে। সিলেট এই আসরে তেমন সুবিধা করতে পারছেনা। সিলেটের মত ব্যাট হাতে মিঠুনের অবস্থাও বেহাল।
ওদিকে বিপিএলের খেলা আবার মিরপুরে ফিরেছে। মিরপুরের বিশেষ করে দিনের খেলাগুলোতে যেন রানই হয় না। আর এই উইকেটেই নিজেকে ফিরে পেলেন মিঠুন। কঠিন উইকেটে নিজেকে ফিরে পাওয়ার অভ্যাসটা অবশ্য মিঠুনের পুরনো।
২০১৮ সালে এশিয়া কাপে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কঠিন কন্ডিশনে গিয়েই নিজেকে প্রথম প্রমাণ করেছিলেন। এছাড়া নিউজিল্যান্ডের উইকেটে যখন ব্যাটসম্যানরা টিকে থাকতে হিমশিম খায়, সেখানেও বেশ ভালো ব্যাটিং করার রেকর্ড আছে মিঠুনে। ২০১৯ বিশ্বকাপেও বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন।
তবে রঙিন পোশাকে তাঁর ধারাবাহিকতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। এছাড়া তাঁর ব্যাটিং করার ধরণ নিয়েও সমালোচনা কম হয়নি। আসলে সমালোচনার চেয়ে বেশি ট্রলের স্বীকার হয়েছেন এই ব্যাটসম্যান। ব্যাপারটা এমন যে এখন ব্যাট রান করলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁকে নিয়ে ট্রল করা হয়।
তবে আজকে মিরপুরের উইকেটে মিঠুন যে ইনিংসটি খেলেছেন তা নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকতে পারেনা। দলের চরম বিপদের সময় হাল ধরেছেন। আট ওভার শেষে মাত্র ৩৪ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল সিলেট। তখন মনে হচ্ছিল ১২০ রান করাটাই সিলেটের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে।
সেই সময় ব্যাট করতে নেমে দলকে খাঁদের কিনারা থেকে তুলে এনেছেন। আস্তে আস্তে ইনিংস বড় করেছেন। শেষ দিকে চার ছয় মেরে নিজের ও দলের রান বাড়িয়েছেন। মিরপুরের উইকেটে একেবারে খাঁটি ইনিংস বলতে যা বোঝায়। সবমিলিয়ে ৫১ বল খেলে করেছেন ৭২ রান। এই পিচেও স্ট্রাইকরেট ছিল ১৪১.১৭। ইনিংসটিতে ছিল ৬ টি চার ও ৪ টি ছয়।