তিন ছক্কা, আর এক চার হাঁকালেন শেষ ওভারে। তবুও ম্যাচ জেতাতে পারলেন না মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। নিজের উপর ক্ষোভ ঝাড়লেন। সাথে একরাজ্য সমান আফসোস বাড়ালেন। মনের কোণে উঁকি দিল এক দীর্ঘশ্বাস, ইশ!
মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, একজন পিউর ফিনিশার হবার সব গুনাবলিই আছে তার মাঝে। তা কি হেলায় হারিয়েছে বাংলাদেশ নাকি এখনো সময়টা ফুরিয়ে যায়নি ফিরে আসার!
স্কোরকার্ড বলছে ৩১ বলের ৫১ রানের ঝড়ো এক ইনিংস খেলেছেন তিনি। যদিও দল হেরে গেছে দুই রানের ব্যবধানে। দূর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে ছয়টা চার তিনটা ছক্কার ইনিংসটা জানান দেয় তার হিটিং এবিলিটির। তবুও একরাশ হতাশায় সঙ্গী হল তার। কেননা নিজের সর্বস্ব দিয়েও যে দলকে জয়ের বন্দরে নিতে পারেননি তিনি।
কিন্তু সাইফউদ্দিন শুধু হিটারই না। পরিস্থিতি বুঝে, দক্ষহাতে দলের বিপদ সামলে জয়ের জন্য একাই লড়াই করতে জানেন তিনি।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) আবারও নিজের সেই দক্ষতার পরিচয় দিলেন তিনি। যখন ক্রিজে আসেন তখন মাত্র নয় ওভারেই ৩০ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় রংপুর। সেই ওভারের শেষ বলেই ফাইন লেগে মোহর শেখকে চার মেরে কাউন্টার অ্যার্টাক শুরু সাইফউদ্দিনের।
রানরেটের চাপ যখন পাহাড়সম হয়ে যাচ্ছিলো তখনও মেহেরব, মৃত্যুঞ্জয়দের ওভারে চার ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে জয়ের আশ্বাস দিচ্ছিলেন একমাত্র তিনিই। শেষ ওভারেও যখন ২৫ রান অসম্ভব লাগছিল, তখন সাইফউদ্দিন জিসান আলমের প্রথম দুইবলেই লং অন আর ডিপ মিড অফ দিয়ে দুই বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে জয়ের স্বপ্নের পালে হাওয়া লাগান। মাঝের দুইটা বলে বাউন্ডারির আশায় আর রান নেননি তিনি।
শেষ দুই বলে ১৩ বলের রানের সমীকরণটা আর মেলানো হলো না তার। ইনিংস সবশেষ দুই বলে থার্ড ম্যান দিয়ে চার আর লং অফ দিয়ে ছয় দিয়েই শেষ হল তার একাকী সংগ্রামী লড়াই। এমন একাকী লড়াই তিনি ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও করেছিলেন। ভারতের বিপক্ষে একা হাতেই জিতিয়ে দিচ্ছিলেন প্রায় বাংলাদেশকে।
যদিও সেদিনের মত এদিনও শেষ অবধি ট্র্যজিক হিরোই হয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাকে। তবে উইকেটের চারদিকে তার বাউন্ডারির ঝড় আর দায়িত্ববান ব্যাটিংই প্রমান করে, মাঝে বছর পাঁচটা কেটে গেলেও আজও হারিয়ে যাননি তিনি। সাইফউদ্দিন এখনও সার্মথ্য রাখেন বড় ব্যাটার হবার, এইখানেও যেন তাকে ট্র্যাজেডির শিকার হতে না হয় সেই কামনায় এখন পুরো দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা।