এবারের আইপিএলই ধোনির শেষ কিনা, তা নিয়ে জল্পনা কল্পনা চলছিল শুরু থেকেই। এমন কানাঘুষা ধোনিকেও যে কর্ণপাত করেনি, তা নয়। বরং এবারের আসরে বেশ কটা মাঠ থেকেই পেয়েছেন বিদায়ী সংবর্ধনা। তবে ধোনি নিজে জানিয়েছেন, এটাই তাঁর শেষ আইপিএল কি না, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্তটা তিনি নিবেন পরের মৌসুমের আইপিএল নিলামের আগে।
আইপিএলের প্রথম কোয়ালিফাইয়ারে গুজরাট টাইটান্সকে ১৫ রানে হারিয়ে ২০২১ সালের পর আবারও ফাইনালে উঠেছে ধোনির চেন্নাই। ম্যাচ শেষে হার্শা ভোগলেও তাই ধোনিকে সে প্রশ্নটি করতে ছাড়লেন না। এবারই কি তবে শেষ ধোনির?
ধোনিও জানালেন, ‘আমি ঠিক জানি না। আমার হাতে এখনো সাত-আট মাস আছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার। ডিসেম্বরে আইপিএলের একটা ছোট নিলাম হবে। তাই এখনই এসব নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না। আমার হাতে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার যথেষ্ট সময় আছে। তবে আমি সব সময়ই চেন্নাই সুপার কিংসের জন্য থাকব। সেটা মাঠে হোক কিংবা মাঠের বাইরে। আমি আসলেই জানি না, কত দিন খেলব।’
তবে এরপরেই নিজের ক্লান্তি, বয়স এর কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সত্যি বলতে, পরিশ্রমটা বেশিই হয়ে যাচ্ছে। আমি সেই জানুয়ারি মাস থেকে বাড়ির বাইরে। মার্চ থেকে আইপিএলের জন্য অনুশীলন করছি। দেখা যাক, পরবর্তীতে কী হয়।’
চেন্নাইয়ের হয়ে ১৪ আসরে ১০ বারই ফাইনাল! ধোনির কাছে ফাইনাল খেলাটা যেন হাতে হাতের মোয়া হয়ে গিয়েছে। তবে যেকোনো আসরের ফাইনালকেই কষ্টার্জিত অর্জন মানছেন ধোনি। তিনি বলেন, ‘আমি আসলে এটাকে শুধু ফাইনাল বলব না। প্রায় দুই মাসের টুর্নামেন্ট। এত দীর্ঘ সময়ের আসরে সবার আগে ফাইনালে যাওয়াটা দুর্দান্ত ব্যাপার। এ যাত্রায় দলের সবার অবদান আছে। যারাই সুযোগ পেয়েছে, দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছে।’
অধিনায়ক ধোনিকে নিয়ে প্রশংসার কোনো কমতি নেই। সে হোক সমর্থক কিংবা কট্টর সমালোচক, ধোনির অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশংসার সুরই বেশি বাজে। তবে স্বয়ং ধোনি নিজেকে আবার একজন ‘বিরক্তিকর’ অধিনায়ক মনে করেন।
তিনি বলেন, ‘অধিনায়ক হিসেবে আমি মনে হয় একটু বিরক্তিকর। কারণ আমি ফিল্ডারদের জায়গা প্রায় সময়েই অদল বদল করে দিই। প্রত্যেক ফিল্ডারকে আমার দিকে চোখ রাখতে হয়। একটা ব্যাপার ভাবুন, প্রতি দুই, তিনবল অন্তর অন্তর একজন আমার দিকে তাকাচ্ছে, আর আমি তাঁকে তাঁর জায়গা বদলে দিচ্ছি, এটা তো অবশ্যই বিরক্তিকর।’
তবে দলের প্রত্যেক ক্রিকেটারই তাঁর এই কৌশলের সাথে পরিচিত মন্তব্য করে ধোনি আরো যুক্ত করে বলেন, ‘আমার যেটা মনে হয় আমি সেটাই করি। এটা নিয়ে পরে আফসোসও করি না। ফিল্ডারদের কাছে আমার একটা বার্তাই থাকে, আমার চোখের দিকে তাকাও। তুমি ক্যাচ মিস করো, কোনো সমস্যা নেই। কোনো প্রতিক্রিয়াও যাবে না। কিন্তু আমার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে।’
নিজের ১১ তম ফাইনাল খেলতে আগামী ২৮ মে মাঠে নামবেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। ফাইনালের সাথে সখ্যতা থাকা ধোনি অবশ্য আগের ১০ ফাইনালের ৬ টিতেই হেরেছেন।
নিজের ১১ তম ফাইনালে এসে এবার পঞ্চম শিরোপার মুখ দেখবেন কিনা, তা সময়ই বলে দিবে। তবে চেন্নাইয়ে নিয়ে তিনি যে অনন্য এক পথ পাড়ি দিয়েছেন, তা নিশ্চিতভাবেই দুর্দান্ত, একই সাথে বিস্ময় জাগানিয়া।