অঘোষিত অধিনায়ক মুশফিক

স্ট্যাম্পের পিছনে গ্লাভস হাতে দাঁড়ানো, প্রতি বল শেষেই হাত নেড়ে ফিল্ডারদের দিচ্ছেন নির্দেশনা, কখনো আবার দৌড়ে গিয়ে বোলারকে বাতলে দিচ্ছেন নতুন কোন বুদ্ধি – মাঠে ব্যস্ত এই উইকেটরক্ষক আমাদের অতি চেনা। ঢাকা, চট্টগ্রাম কিংবা সিলেটে আমরা বহুবারই মুশফিকুর রহিমকে এমন রূপে দেখেছি।

এবার জিম্বাবুয়েতেও দেখা গিয়েছে সিরিয়াস মুশিকে; জিম আফ্রো টি-১০ লিগে জোবার্গ বাফেলোর হয়ে খেলছেন তিনি। আর দলটির সবচেয়ে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের একজনও, তাই তো উইকেটের পেছন থেকে ফিল্ডিং সাজানো কিংবা গেমপ্ল্যান করতে দেখা যায় তাঁকে।

শুধু কি তাই, সতীর্থদের অমনোযোগী দেখলেই বড় ভাইয়ের মত শাসন করতে দ্বিধা করেন না মুশফিকুর রহিম। আবার ভাল করলে পিঠ চাপড়ে দিতেও ভুল হয় না তাঁর; সবমিলিয়ে জোবার্গ দলটার সাথে দারুণভাবে মানিয়ে নিয়েছেন বাংলাদেশের সুপারস্টার। কাগজে কলমে অধিনায়ক না হলেও, মাঠের খেলায় মনে হবে জোবার্গের নেতৃত্ব বুঝি তাঁরই হাতে।

শুধু দিক নির্দেশনা দিয়েই নয়, ব্যাট হাতেও জোবার্গ বাফেলোকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। মিডল অর্ডারে ব্যাট করা মুশি এখন পর্যন্ত পাঁচ ইনিংসে সবমিলিয়ে করেছেন ১১২ রান; আউট হয়েছেন মাত্র একবার। স্ট্রাইক রেটও প্রশংসনীয়, ১৭২.৩১। দুই একটা ম্যাচে অন্য ব্যাটারকে সুযোগ করে দিতে একটু রয়ে সয়ে খেলেছিলেন তিনি, তা না হলে ২০০ এর বেশি হতে পারতো স্ট্রাইক রেট।

মুশফিকুর রহিমের মতই ভাল সময় কাটাচ্ছে জোবার্গ বাফেলো; পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে থেকে গ্রুপ পর্ব শেষ করেছে দলটি। অথচ এক পর্যায়ে বাদ পড়ার শঙ্কায় ছিল দলটি; তবে শেষ দুই ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে সেই শঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন হাফিজ, মুজারাবানিরা।

তাদের পাশাপাশি টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় পর্বে জায়গা করে নিয়েছে ডারবান কালান্দার্স, কেপ টাউন স্যাম্প আর্মি এবং হারারে হারিকেন্স। একমাত্র দল হিসেবে বাদ পড়েছে তাসকিন আহমেদের বুলাওয়ে ব্রেভস। যদিও ব্যক্তিগতভাবে উজ্জ্বল ছিলেন বাংলাদেশের এই পেসার, সাত ম্যাচ খেলে শিকার করেছেন ১১ উইকেট।

জোবার্গ বাফেলোর আপাতত নজর ফাইনালে ওঠার দিকেই। সেই লক্ষ্যে প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে ডারবান কালান্দার্সের মুখোমুখি হবে তাঁরা। জিতলে তো শিরোপার শেষ লড়াইয়ে সরাসরি জায়গা পাবেই, হারলেও থাকবে সুযোগ। এলিমিনেটর ম্যাচে জয় পাওয়া দলের সাথে জিতেও ফাইনালে যেতে পারবে মুশফিকের দল।

কোয়ালিফায়ার আর ফাইনালের লড়াইয়ের গুরুত্ব জানা আছে মুশফিকুর রহিমের; দলের অভিজ্ঞ খেলোয়াড় হিসেবে এসব ম্যাচে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে তাঁকে। কেননা বাংলাদেশের মি. ডিপেন্ডেবলের উপরই নির্ভর করছে জোবার্গ বাফেলোর মিডল অর্ডার, মানানসই স্ট্রাইক রেটে বড় রান করতে পারলে জয়ের পাল্লাও হেলে পড়বে হলুদ জার্সি ধারীদের দিকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link