নাহিদ রানা বল ছুড়লেন, পেছনে পাঞ্জাবি পরিহত ব্যক্তি ইশারায় বোঝালেন ভাল হয়েছে। পরের বলে তিনি হাততালি দিয়ে জানালেন এবারও নাহিদের বলটি যথার্থই হয়েছে। ঠিক এভাবেই আলমগীর কবির তদারকি করছেন নাহিদ রানার অনুশীলন। ভুল ধরিয়ে দিয়েছেন, চ্যানেল বলে দিয়েছেন। দেখিয়ে দিয়েছেন বলের গতিপথ ও বলের সম্ভাব্য আচরণ।
কিন্তু এতসব যিনি শিখিয়ে দিচ্ছেন তাকে হয়ত অনেকেই চেনেন না হয়ত। চেনার কথাও নয়। বাংলাদেশের জার্সি অবশ্য তিনি গায়ে চাপিয়েছিলেন। কিন্তু বিন্দুমাত্র আলো ছড়াতে পারেননি। তিন টেস্টে তার ক্যারিয়ার থেমেছিল শূন্য উইকেট প্রাপ্তিতে।
যার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে উইকেট নেই একটিও তিনি নাহিদকে কি শেখাবেন?- এই ধরণের ভাবনার আগে জানিয়ে রাখা প্রয়োজন, তিনি আরেক টাইগার পেসার শরিফুল ইসলামের প্রথম কোচ। তার হাত ধরেই শরিফুল ইসলামের ক্রিকেট দুনিয়ার পদযাত্রা শুরু।
অথচ এই তো কিছুদিন আগেও আলমগীর কবিরকে নিয়ে ট্রল হয়েছে। রোড সেফটি ওয়ার্ল্ড সিরিজে তিনি বাংলাদেশ লেজেন্ডসের প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়েছিলেন। তার পরিসংখ্যানের পাতা উল্টিয়ে তাকে বিচার করে ফেলেছে সকলে। উইকেট শূন্য যার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার, তিনি আবার কিসের লেজেন্ড! এমন বিদ্রুপের মেলা বসেছিল সোশ্যাল মিডিয়াতে।
তবে সোশ্যাল মিডিয়াতে কাকে নিয়ে ট্রল হচ্ছে সেটা প্রাধান্য পায় না। বরং তিনি কতটুকু ডেলিভার করতে পারেন- সেটাই মুখ্য বিষয়। এমনটা হতেই পারে তিনি তৃণমূলে বহুদিন ধরে কাজ করছে বলে, নাহিদ-শরিফুলদের দূর্বলতা, শক্তিমত্তা বোঝেন। তাছাড়া যে সফলতা পায়নি তার জীবনে- সেই সবচেয়ে বেশি জানে ভুল ঠিক কোথায় হয়েছিল।
আলমগীর কবির নিজের জীবন থেকেই দীক্ষা নিয়েছেন। আর এরপর শিক্ষা ছড়িয়ে দিচ্ছেন বাংলাদেশের এই প্রজন্মের পেসারদের মধ্যে। খেলোয়াড়ি জীবনে সবাই যে তুখোড় হবেন তা হতে পারে না। অনেক ক্ষেত্রে সেই আক্ষেপ থেকেই আসলে অনেকেই হয়ে ওঠেন বিশ্বমানের কোচ।
উদাহরণ হিসেবে দেশের ক্রিকেট সমাদৃত কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকেই তো ধরা যেতে পারে। তার খেলোয়াড়ি জীবনও ততটা সমৃদ্ধ নয়। তবুও তিনি এ সময়ের সকল খেলোয়াড়দের পছন্দের কোচ। সুতরাং স্রেফ কারও খেলোয়াড়ি জীবনের পরিসংখ্যান দিয়ে কাওকে বিচার করা মোটেও সমীচিন নয়। বরং সেই ব্যর্থ জীবনকেও যে বদলে ফেলা যায়, সে উদাহরণ সৃষ্টির জন্যে আলমগীর কবিরদের প্রশংসা প্রাপ্য।