বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) রাতের ম্যাচ গুলো রান হচ্ছিল। আজও আগে ব্যাট করতে নেমে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ভালো একটি সংগ্রহ দাঁড় করেছিল। তবে জবাবে বরিশাল ব্যাটিং করতে নামলে এই তত্ব ভুল প্রমাণিত করলেন নাহিদুল ইসলাম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মোটে ১.২৫ ইকোনমি রেটে বোলিং করলেন। বিপিএলে সবচেয়ে মিতব্যয়ী বোলিং করার রেকর্ডও গড়লেন এই স্পিনার।
এমনিতে ঘরোয়া ক্রিকেটে পরিচিত মুখ নাহিদুল ইসলাম। বল হাতে নিয়মিত পারফর্মও করেন। এছাড়া ব্যাট হাতেও টুকটাক রান করেছেন। আগের ম্যাচেও কুমিল্লার হয়ে ব্যাটে বলে পারফর্মেন্স করেছেন। তবে আজ বল হাতে বরিশালের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপকে একাই চেপে ধরলেন। সাকিবদের বাইশ গজে শ্বাস নেয়াটাই কঠিন করে তুলেছিলেন এই বোলার।
শুরু থেকেই স্পিনে বিট করছিলেন বরিশালের ব্যাটসম্যানদের। তাঁর বলে যেন রান নেয়াটাই দুঃসাধ্য হয়ে উঠলো। যদিও বল হাতে সবসময়ই ইকোনমিক্যাল নাহিদুল। তাঁর পুরো টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ইকোনমি রেট মাত্র ৫.৯৬। অর্থাৎ রান যে সবসময়ই গুনে গুনে দেন সেটা এই পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট। তবে আজ নিজেকে নিয়ে গিয়েছেন অন্য মাত্রায়।
চার ওভার বোলিং করে ১৯ টাই ডট দিয়েছেন। এই ২৪ বলে একটাও বাউন্ডারি আদায় করতে পারেননি বরিশালের ব্যাটসম্যানরা। ইনিংসের প্রথম ওভারেই ফরিয়েছিলেন বরিশালের ওপেনার সৈকত আলীকে। এরপর নিজের দ্বিতীয় ওভারে তুলে নেন সাকিব আল হাসানের উইকেট। মূলত তাঁর ইকোনমিক্যাল বোলিং এর কারণেই উইকেট গুলো পাচ্ছিলেন। রান না করতে পেরে স্টেপ আউট করে মেরে নিজের উইকেট হারান সাকিব।
তবে এখানেই থামেননি নাহিদুল। নিজেকে জমিয়ে রেখেছিলেন সবচেয়ে বড় নামটা স্বীকার করবেন বলে। তাঁর বলে দ্য ইউনিভার্স বস ক্রিস গেইলকেও অসহায় মনে হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত তাঁর উইকেটটাও নিয়ছেন এই স্পিনার। চার ওভারের বোলিং স্পেল শেষে খরচ করেছেন মাত্র ৫ রান।
এটিই বিপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে কিপ্টে বোলিং। এর আগে বিপিএলে পুরো চার ওভার বোলিং করে সবচেয়ে কম রান দেয়ার রেকর্ড ছিল শুধু শহীদ আফ্রিদির বিপক্ষে। আফ্রিদি চার ওভারে ৫ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ২ উইকেট। এবার আফ্রিদির পাশে নিজের নাম লিখালেন নাহিদুলও। তিনিও চার ওভার বল করে দিলেন ৫ রান। যদিও তাঁর ঝুলিতে উইকেট আছে তিনটি। ফলে সবার উপরে এই স্পিনারের নামটাই থাকবে।
সাত বছর পর শহীদ আফ্রিদির এই রেকর্ড ভাঙলেন নাহিদুল। এছাড়া চার ওভার বোলিং করে এর আগে ৭ রান খরচ করেছিলেন জ্যাকব ওরাম ও রশিদ খান। আর বাংলাদেশিদের মধ্যে এই তালিকায় শুধু ছিলেন সাকিব আল হাসান। বিপিএলে পুরো চার ওভার বোলিং করে সাকিব খরচ করেছিলেন ৮ রান।
এছাড়া সাকিব, গেইলদের উইকেট নিয়ে নিজের দলের জয়ও নিশ্চিত করেছেন এই স্পিনার। আগের মাচেও সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে ২০ রান দিয়ে ২ উইকেট নেয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতে করেছিলেন ১৬ রান। সব মিলিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজের নামটা আরো পরিচিত করে তুলছেন এই অলরাউন্ডার। এই কুমিল্লাতেই তাঁর বিপিএল ক্যারিয়ার শুরু, এবার আবার কুমিল্লাতে ফিরে যেন নতুন করে নিজেকে চেনাতে শুরু করেছেন তিনি।